'ঠান্ডায় কষ্ট, বালবাচ্চার কাফড় নাই'
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
'ঠান্ডায় মোগের খুব কষ্ট অয়। বাল-বাচ্চার কোনু কাফড় নাই। আগের মতো গ্র্যামে যাই, সে রহম কোনো ইনকাম অয় না। ট্যাহার অভাবে গরম কাফড় কিনিতে পারি নাই। কোনু রহম দুগ্যা ভাত-পান্তায় মুগো প্যাট চলে।'
কথাগুলো বেদেনী শাহীনুর বেগমের। তিনি বেদে সর্দার কালামের স্ত্রী। ভাঙ্গায় কুমার নদের পাড় ঘেঁষে থাকেন তাঁরা। এ জায়গায় প্রায় ২০টি বেদে পরিবারের বসবাস। নদের পাড়ে বসতি হওয়ায় একদিকে কনকনে ঠান্ডা বাতাস, অন্যদিকে পৌষের কুয়াশায় মানবেতর দিনযাপন করছে বেদে সম্প্রদায়ের বৃদ্ধ-শিশুসহ প্রায় ৫০ জন সদস্য।
গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কুমার নদের সেতুর দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে বেদেরা বসবাস করছে। কেউ বাস করছে ডিঙ্গি নৌকায়, কেউ ডাঙ্গায় কুঁড়েঘরে, কেউবা গাছের সঙ্গে বাঁধা উঁচু টং ঘরে। শীতবস্ত্র না পরেই প্রচণ্ড শীতে শিশুরা নদের পাড়ে কাদামাটিতে খেলা করছে। অদূরেই নদে জাল পেতে মাছ ধরছেন কয়েকজন পুরুষ। নারীরা ডিঙ্গি নৌকায় চড়িয়েছেন রান্না। সহযোগিতা করছেন বয়স্করা।
কাদের সর্দার, আকাশ ও কালাম সর্দার জানান, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে কুমার নদের পাড়ে বসবাস করছেন তাঁরা। ভাঙ্গা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েও পৌরসভার কোনো সুযোগসুবিধা তাঁরা আজও পাননি। তীব্র শীতে তাঁদের কষ্টের কথা জানিয়ে বললেন, এখনও কেউ তাঁদের কোনো শীতবস্ত্র দেয়নি। এমনকি কেউ খোঁজও নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে ভাঙ্গা পৌরসভার মেয়র আবু ফয়েজ মো. রেজার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা শুরু হয়েছে। বেদে পরিবারদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।