শাশুড়িকে মধ্যরাতে ফোন, স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ দিয়ে উধাও স্বামী!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ আগস্ট,
বুধবার,২০২৫ | আপডেট: ০৯:৩৬ পিএম, ২০ আগস্ট,
বুধবার,২০২৫

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই নারী পশ্চিম শেওড়াপাড়ার শামীম সরণির ৩২২ নম্বর মেট্রো পিলারের উল্টো পাশে ৫৮৩ অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতেন।
এদিকে স্বজনদের অভিযোগ, স্বামী সিফাত আলী (৩০) স্ত্রীকে হত্যার পর কৌশলে ফোনকল করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে গেছেন।
নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বলেন, ‘রাত ১টা ৫৬ মিনিটে সিফাত আমাকে কল দেয়। সে বলে, এখনই আসেন আমাদের বাসা। আমি কারণ জানতেই চাইলে সিফাত বলে, কেয়া আর নাই। আপনারা বাসায় আসেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাসায় আসলে সিফাত জানায় কেয়াকে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাচ্ছে। যখন ঢাকা মেডিকেলের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন জানায় পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে।’
নাজমা বেগম বলেন, ‘হাসপাতালে গিয়ে দেখি সিফাতের গাড়িচালক, কাজের ছেলে এবং মারুফ নেওয়াজ প্রেম নামে এক বন্ধুকে। তবে সিফাত তখন সেখানে ছিল না। প্রেম আমাকে বলে, আপনি শান্ত হন আপনার মেয়েকে সিফাত মেরে ফেলছে, আমরা সাক্ষী দিব।’
এসময় কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একপর্যায়ে চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করে। এরপর সিফাতের বন্ধুসহ সবাই হাসপাতাল থেকে চলে যায়। পরে মেয়ের মরদেহ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিফাত খুবই বদমেজাজি। সন্তানদের সামনেই কেয়াকে মারধর করতো। মেয়ে আমাকে একবার বলেছিল সে আর সংসার করবে না, বাসা ছেড়ে চলে আসবে। আমি মেয়েকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছি- তোমার চারটা সন্তান, একটু মানিয়ে চলার চেষ্টা কর। সিফাতকেও বুঝিয়েছি, বলেছি মানিয়ে চলার চেষ্টা কর। সে পর্যন্ত আমার মেয়েটারে একেবারে শেষ করে দিলো, এটা কোনো কথা হলো।’
তিনি বলেন, ‘আমার বড় নাতনিটা ভিকারুননিসা স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলেটা আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। মেজ ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। গলায় দাগ দেখেছি। সুস্থ মানুষ হঠাৎ এভাবে মারা যাবে এমনটা হতে পারে না। সিফাত কেন পালাবে?’
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাত রোমান বলেন, ‘গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর খবরে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। মরদেহ ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। সেখানে সুরতহাল করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা এখনো স্পষ্ট নয়। সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও ঘটনার পুলিশি তদন্তে মৃত্যুরহস্য স্পষ্ট হবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’