avertisements 2

গোপালগঞ্জে মামলার ভয় দেখিয়ে এসি ঘুষ নিলেন ওসি, কল রেকর্ড ফাঁস

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ এপ্রিল,রবিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৮:২৯ পিএম, ৭ এপ্রিল,সোমবার,২০২৫

Text

ওসি শফিউদ্দিন খান ও ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের ‘কল রেকর্ড’ ফাঁস

গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের দলের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলাকে পুঁজি করে মামলাবাণিজ্যে মেতেছেন কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউদ্দিন খান। এই কাজে তার সহযোগী হিসেবে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদও রয়েছেন বলে জানা গেছে। আসামি ধরা এবং ছাড়ার খেলা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ওসি-এসআইর দাবি পূরণ না হলে নিরীহ মানুষকেও বিভিন্ন মামলায় অজ্ঞাত আসামি করে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। 

মামলার ভয় দেখিয়ে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের কাছ থেকে নগদ টাকা ও এসি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জের ওসি শফিউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। এসি কেনাসংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে কল রেকর্ডের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওসি। তার দাবি, কেউ ষড়যন্ত্র করে এসব করেছে।

আড়াই মিনিটের ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, কাশিয়ানী থানার ওসি শফিউদ্দিন কাশিয়ানী সদর ইউনিয়নের বরাশুর এলাকার ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের কাছ থেকে শার্প অথবা এনার্জি প্যাক ব্র্যান্ডের ২ টনের একটি এসি কিনে দেওয়ার কথা বলেন। গোপালগঞ্জে না পাওয়া গেলে ঢাকা থেকে কিনে এনে দিতে বলেন ওসি।

ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে গোপালগঞ্জ শহরের এলজি-বাটার ফ্লাই কোম্পানির শোরুমের মেমো থেকে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ জাকির নিজ নামে ৪০ হাজার টাকা জমা দিয়ে কিস্তির মাধ্যমে এলজি ব্র্যান্ডের একটি এসি কিনেন।

ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওসি। শুধু তাই নয়, ৫০ হাজার টাকার মাছও ঘুষ নিয়েছেন। গত ২৩ মার্চ ওই ইউপি সদস্যকে আবারও মামলার ভয় দেখিয়ে ওসি শফিউদ্দিন ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকার এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র) জোরপূর্বক ক্রয় করিয়েছেন। যা তিনি নিজে গোপালগঞ্জ এলজির শোরুমে গিয়ে পছন্দ করে নিয়েছেন এবং থানায় তার ব্যক্তিগত কক্ষে লাগিয়েছেন।

ভুক্তভোগী জাকির হোসেন বলেন, মামলার ভয় দেখিয়ে ওসি আমার কাছ থেকে কয়েক দফা টাকা নিয়েছেন। আবার একটা এসি দাবি করেন। কাছে নগদ টাকা না থাকায় নিরুপায় হয়ে কিস্তিতে কিনে দিয়েছি। ঈদে ছেলে-মেয়েদের নতুন জামাকাপড় পর্যন্ত কিনে দিতে পারিনি। এতেও ক্ষ্যান্ত হননি ওসি, ঈদের আগের দিন আবারও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে কিছু টাকা চান তিনি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কাশিয়ানী থানায় টাকা ছাড়া কোনো কিছুই হয় না। এ ছাড়া কাউকে আটকের পর তার আত্মীয়স্বজনরা কারণ জানতে থানায় গেলে ওসি খুব উত্তেজিত হয়ে যান। আসামির স্বজনদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।

এ বিষয়ে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউদ্দিন খান বলেন, ‘এসবের কোনও সত্যতা নেই।’ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এজন্য তাদের লোকজন প্রযুক্তির ব্যবহার করে মিথ্যা কল রেকর্ড বানিয়েছে। কল রেকর্ড তার নয় এবং ওই ইউপি সদস্যের সঙ্গে সামনে একবার দেখা হলেও মোবাইলে কোনও কথা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরে শনিবার (৫ এপ্রিল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2