avertisements 2

হাড়ভাঙার অপারেশন করাতে গিয়ে কিডনি হারালেন দিনমজুর

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ মার্চ, বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:০২ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

ছবি সংগৃহীত

কিডনি চুরির অভিযোগ ওঠেছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলার পর রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাত সদস্যের কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। হাড়ভাঙার অপারেশনকালে গোপনে রোগীর কিডনি অপসারণের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিডনি অপসারণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। 

জান যায়, ৫৫ বছর বয়সী খছরু মিয়া একজন দিনমজুর। তিনি সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার ফতেহগঞ্জ গ্রামের মৃত মুজম্মিল আলীর ছেলে। গাছ থেকে পড়ে বাঁহাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে গেলেগত বছরের নভেম্বরে চিকিৎসা নিতে যান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাড়ভাঙার অপারেশন করার জন্য চিকিৎসকেরা তাকে নিয়ে যান অপারেশন কক্ষে। 

অভিযোগ উঠেছে, অপারেশন টেবিলে বাঁ হাতের অস্ত্রোপচার শেষে ডাক্তাররা বাঁ দিকের কিডনি বের করে নেন। অপারেশন শেষে খছরু মিয়ার জ্ঞান ফিরলে তিনি বাঁ হাতের পাশাপাশি বাঁ দিকের কিডনির পাশে অস্ত্রোপচারের চিহ্ন দেখতে পান। এ সময় খছরু মিয়ার স্বজনেরা বিষয়টি জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 

চিকিৎসকেরা যে উত্তর দেন তা হচ্ছে, তারা নাকি কিডনি থেকে একটি শিরা নিয়ে বাঁ হাতে সংযুক্ত করেন। তড়িঘড়ি করে অস্ত্রোপচারের এক দিন পর হাসপাতাল থেকে তার ছাড়পত্র দেয়া হয়। পরবর্তীতে কিডনি চুরির বিষয়টি আলট্রাসনোগ্রামে ধরা পড়ে। বাঁ দিকের কিডনি না থাকায় খসরু মিয়া এখন খুবই কষ্টের মধ্যে আছেন। এ ঘটনায় তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে ৩ মার্চ মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। নিজের হারানো কিডনি ফেরত এবং এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে- এমন দাবি তার।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আমিনুল হক খান জানান, আদালতের নির্দেশে গত ৩ মার্চ মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। নিজের হারানো কিডনি ফেরত এবং এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।

এদিকে মামলার পর তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে তদন্ত কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে আরো ৭ কার্যদিবস বাড়ানো হয়। এ ঘটনায় কাজ করছে কমিটি। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, হাড়ভাঙার অপারেশনে অনেক সময় বোন গ্রাফটিং করা হয়। এ ক্ষেত্রে কিডনি চুরি নয়, কোমর থেকে হাড় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। 

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, হাড়ভাঙার অপারেশনে অনেক সময় বোন গ্রাফটিং করা হয়। এ ক্ষেত্রে কিডনি চুরি নয়, কোমর থেকে হাড় প্রতিস্থাপনও করা হতে পারে। তবুও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরে তদন্ত কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে আরো ৭ কার্যদিবস বাড়ানো হয়। এ ঘটনায় কাজ করছে কমিটি।

এদিকে আদালতের নির্দেশে মামলা এফআইআর করে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মামলা এফআইআর করে তদন্ত কাজও শুরু করা হয়েছে। দ্রুত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে  রোগীর শরীর থেকে কিডনি গায়েবের ঘটনার প্রকৃত রহস্য দ্রুত উদঘাটনের দাবি সংশ্লিষ্টদের।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2