পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৩৭ বছর পর বন্ধুর খোঁজ পেলেন মহিরুদ্দিন!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ মার্চ,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:০৪ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
হারুনুর রশিদ বায়ে এবং পত্রিকার বিজ্ঞাপন
পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ৩৭ বছর আগে হারানো বন্ধুর খোঁজ পেলেন মহিরুদ্দিন। আজ শনিবার সকালে তার খোঁজ মিলেছে। মহিরুদ্দিন তার বন্ধু হারুনুর রশিদকে ৩৭ বছর আগে হারিয়ে ফেলেছিলেন।
একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, মহিরুদ্দিন জার্মানে থাকতে তার সঙ্গে ১৯৮৬ বা ১৯৮৭ সালের দিকে ডর্টমাউন্ড শহরে পরিচয় হয় হারুনর রশিদ নামের এক ব্যক্তির। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কিন্তু সেই বন্ধুত্ব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বন্ধু হারুনুর রশিদকে হারিয়ে ফেলেন মহিরুদ্দিন। তবে বন্ধুর অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। আশা ছিল, বন্ধুকে ফিরে পাওয়ার। সেই স্মৃতি সম্বল করে জার্মানপ্রবাসী মহিরুদ্দিন সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অবশেষে ৩৭ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো। হারিয়ে যাওয়া বন্ধু হারুনুর রশিদ ওরফে হারেজকে (৬৫) খুঁজে পাওয়া গেল। তিনি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ শেখের ছেলে। বর্তমানে তিনি বাড়িতেই থাকেন।
এ ব্যাপারে হারুনুর রশিদ শেখের ভাতিজা মো. মহিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি ওই ব্যক্তি যাকে খুঁজছেন তার বাড়ি মধুখালী। তখন আমার চাচাকে সংবাদটা দেখাই। তিনি পড়ে জানান, আমার চাচাই তার সেই হারিয়ে যাওয়া বন্ধু। আমরা তার পুরনো বন্ধু মহিরুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
হারুনুর রশিদ শেখ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি জার্মানির ডর্টমাউন্ড শহরে থাকতাম। আমার পাসপোর্টে নাম ছিল শেখ রশিদ। আমরা ওখানে তিন বন্ধু থাকতাম। আমার পাসপোর্ট জটিলতার কারণে পুলিশের ঝামেলায় পড়ি। জেলও খাটি। আমার দুই বন্ধু আমাকে জেলেও দেখতে আসে। এরপর ১৯৮৭ সালের শেষের দিকে জার্মানি থেকে দেশে চলে আসি। আমার যতটুকু মনে পড়ে, মহিরুদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামে। আমিও তাকে অনেক খুঁজেছি, চিঠি লিখেছি। কিন্তু দীর্ঘ ৩৭ বছরেও তার কোনো খোঁজ পাইনি। আমার ভাতিজা মহিদুল ইসলাম আমাকে বিষয়টি জানায়। আমি সংবাদটি দেখে পুরনো সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে।’
কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়ালিদ হাসান মামুন বলেন, ‘যতটুকু জানতাম হারুনুর রশিদ অনেক বছর আগে জার্মানিতে থাকতেন। তবে তাদের এই বন্ধুত্বের সম্পর্কটি যে এত আন্তরিকতাপূর্ণ, তা জানা ছিল না। বর্তমানে এমন বন্ধুত্ব সমাজে বিরল। এমন দুই বন্ধুর যোগাযোগ করাতে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জার্মানপ্রবাসী মহিরুদ্দিন বলেন, ‘প্রায় ৩৭ বছর আগে শেখ রশিদ নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। তখন দুজনের বয়স ২৫ বছরের মতো হবে।’
‘সাক্ষাৎ চাই’ শিরোনামে ওই বিজ্ঞাপনে জার্মান থেকে দেশে আসা মহিরুদ্দিন বর্তমানে নড়াইলে অবস্থান করছেন।