avertisements 2

আগুনে পুড়ে গেছে নওসিনের স্বপ্ন, চোখে-মুখে অন্ধকার

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:৫০ এএম, ১১ মার্চ,সোমবার,২০২৪

Text

ঘরের আসবাবপত্র, পোশাক ও বইপত্র আগুনে পুড়ে যাওয়ায় নির্বাক হয়ে পড়েছে নওসিন আকতার। পাঁচ সদস্য পরিবারটির ভরণপোষনের দায়িত্বে থাকা মেয়েটি চোখেমুখে এখন হতাশার ছাপ। নতুন করে বাসা নির্মাণ করার অর্থযোগাড় করতে যেখানে কষ্টসাধ্য ব্যাপার, সেখানে বইপত্র কিনে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়ায় লাগা আগুনে সব পুড়ে গেছে নওসিন আকতারদের।

ফায়ার সার্ভিসের ৬ ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর মধ্যে পুড়ে যায় কোয়াটারের ৫ সদস্যের পরিবার। ওই পরিবারের মধ্যে বৃদ্ধ কায়সার আলীর মেয়ে নওশিন আকতার। আগুনে পুড়ে গেছে জামা-কাপড় ও তার পড়ার বইপত্র।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় নওশিনের সঙ্গে। রংপুর মডেল কলেজের সমাজ বিজ্ঞানে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী নওসিন আকতার। পড়াশোনার পাশাপাশি সৈয়দপুর শহরের ‘রেড চিলি’ নামের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি করেন তিনি। সেখান থেকে প্রাপ্ত বেতন দিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মা ও আরো দুই বোনসহ ৫ সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণ করে থাকেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নওসিন জানান, সামনে রমজানের পর বড় বোন চাঁদনী আকতারের বিয়ে। এ সময় এমন ঘটনায় বাবা-মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এদিকে, জামা-কাপড় ও আসবাবপত্রের সঙ্গে বইপত্র পুড়ে যাওয়ায় খুব কষ্ট পাচ্ছি। সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। বাসা মেরামত করার মতো টাকা নেই আমার হাতে। সেখানে বইপত্র কেনা এবং বাসযোগে সৈয়দপুর থেকে রংপুরে যাওয়া-আসা করা আর সম্ভব নয়। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে নওশিন বলেন, লেখাপড়ায় ছেড়ে দিতে হবে অবশেষে।

সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টাফ কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জামান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়া রেলওয়ে কোয়াটারে অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়। প্রাথমিক ধারণা, সর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে গেছে ৫টি পরিবারের সম্পূর্ণ মালামাল। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোয়াটারের আরো বেশ কয়েকটি পরিবার। তবে ক্ষতি নিরুপণে ফায়ার সার্ভিস দল কাজ করছে।

পৌরসভার কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম জানান, আগুনের সূত্রপাত হয় জনৈক জাহেদা বেগমের বাড়ি থেকে। পরে খবর পেয়ে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিসসহ নীলফামারী, উত্তরা ইপিজেড ও রংপুরের তারাগঞ্জে ছয়টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে পুড়ে যায় জাহেদা বেগম, আরবি হোসেন, উকিল আহমেদ, শরফরাজ আলী ও শাহিন হোসেনের বাসার মালামাল। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি, তাদের প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান জানান, চাঁদনীর বিয়ে ও নওসিনের পড়াশোনা চালানোর বিষয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য পরিবারকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2