avertisements 2
Text

জালাল উদ্দিন আহমেদ

বিষয়টি যখন নেপাল গোপাল

প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ নভেম্বর, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

"বাংলার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা। কে দিবে আশা, কে দিবে ভরসা" - এই হতাশার কথাটি বেরিয়েছিল বাংলা তথা বাঙালীর শেষ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার মুখ থেকে। বাঙালীর শেষ নবাব কিংবা বাঙালীর শেষ স্বাধীন নবাব কথাটি হয়তো অনেকে উচ্চারন করেন। কিন্তু কথাটি তো সত্য এবং তা ইতিহাস। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, কিংবা বাংলার হাজার বছরের সাক্ষ্য প্রমানে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাঙালী কখনোই আপন ঘরানায় শাসিত ছিল না। কারন এই সিরাজ-উদ-দৌলা কোনক্রমেই বাঙালী ছিলেন না। এই বক্তব্যের জেরে বাঙালীর একটি সম্প্রদায় উদ্বাহু নেত্য করে উঠবেন। কি লেখে এই নেড়ের বাচ্চা! বাহ্, বাহবা করে সংকীর্তন গেয়ে উঠবেন। নাহ, উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোন কারন নেই। কারন সেন পাল রায় মৌর্য গুপ্তরা কেউই বাঙালী ছিলেন না। সেই যে কবিগুরু লিখে গেছেন, 'হেথায় আর্য হেথা অনার্য হেথায় দ্রাবিড় চীন/ শক হুনদল মোঘল পাঠান একদেহে হোল লীন'। এই বাস্তবতায় আমরা বাঙালীরা বেড়ে উঠা শুরু করেছি যার বাড় বাড়ন্ত বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত একই ধারায় চলে এসেছে। ঠিক যেন সৈয়দ মুজতবা আলীর 'সেই ট্যাডিশন সমানে চলেছে'র বাস্তবতায়। তবে কবিগুরুর সেই বিখ্যাত উক্তি, 'এসো ব্রাহ্মন শুচি করে মন ধর হাত সবাকার/ এসো হে পতিত হোক অপনীত সব অপমানভার'। তাঁর এই ছত্রে ছত্রে বিলিয়ে দেয়া অমৃত বাণীগুলো কি ধর্ম বিভেদের ভারত তথা বাংলায় কেউ দু'পয়সার দাম দিয়েছে? সেক্ষেত্রে বুঝে নিতে অসুবিধা কোথায় যে এই নেপাল গোপালরাই আমাদের আদি ডাক। এরাই আমাদের আদি পুরুষ। সুতরাং এদেরকে নিয়ে ট্রল করা সোজা হলেও, এর নিগূঢ় নির্যাসে এদেরকে কোন অসৎ মানসিকতা নিয়ে উপস্থাপন করাটা যে সেই সাতচল্লিশের ভয়াবহতাকে উসকে দেয়া তা কিন্তু আঁচ করা যায়। কিন্তু এসব কারা করে! কাদের খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই যে একটি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতবাহী ঐতিহাসিক জিঘাংসার ঘটনা পরম্পরাকে এভাবে উসকে দিয়ে বাঙালীর চিরতার তেঁতো রস খাওয়া সেই সব দিনগুলিকে স্মরন করিয়ে দিবে? 

কিছু নির্মোহ সত্য কথা না বললেই নয়। একজন দীপক বেপারীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে ইদানীং। তিনি একাধারে গবেষক, সমাজকর্মী এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক জ্যান্ত শিক্ষক। শিক্ষক বলছি এই কারনে যে তার বক্তব্য এবং উপস্থাপনা সমৃদ্ধ ভিডিও গুলি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি নিজেকে নাস্তিক বলতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। কেননা বর্তমানে বাংলা তথা ভারতীয় উপমহাদেশের এই ডামাডোলের ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদিতার যুগে তিনি বাংলা বাঙালী ও হিন্দুত্ববাদের আর্য অনার্য এবং ধর্ম সূত্রের যাঁতাকলে ধর্মীয় বর্ন বৈষম্য নিয়ে একাই লড়ে যাচ্ছেন। অবশ্য তার সঙ্গে দু'চারজন লেখক সাহিত্যিককেও তার পাশে দাঁড়াতে দেখি। সত্যিকার অর্থে তিনি একজন মানুষ। রাজনীতি করেন কিনা জানিনা। তবে রাজনীতির ভাঁড়ামী তার মধ্যে পরিলক্ষিত হয় নি। অন্ততঃ আমার এই কয়েক মাসের পর্যবেক্ষনে তাকে মনে হয়েছে তিনি একজন শুদ্ধ বাঙালী এবং বাংলার ভূমিপুত্রও বটে। বাংলা বাঙালীকে নিয়ে আমিও ভাবি এবং এসব নিয়ে দু'চার কলম লেখার চেষ্টাও করি। কিন্তু বিদ্যার স্বল্পতাহেতু খুব বেশী এগোতে পারি না।  তবে বেপারী সাহেবের Bong নিউজ এর বক্তব্য সম্বলিত ভিডিওগুলি প্রতিটি বাঙালীকে নাড়া দেয় বলেই আমার বিশ্বাস। তার উপস্থাপনার একটি বৈশিষ্ট্য হলো তিনি অন্য ধর্মকে কখনোই উদাহারন হিসাবে টেনে আনেন না। নিজ ধর্মের বর্নবৈষম্য ও অমানবিক বিষয়াদি নিয়েই সরব থাকেন। তার প্রতিটি উপস্থাপনা ও বক্তব্যের সারবস্তু হলো হিন্দু কোন ধর্ম নয়, হিন্দু একটি কালচার বা সংস্কৃতি।একটি গোষ্ঠীকে জাতে উঠিয়ে তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে হিন্দু ব্রাহ্মন সম্প্রদায়ের চিহ্নিত প্রজাতির মানুষগুলো। কারন এশিয়া মাইনর ও ককেশাস অঞ্চলের আর্য জাতির একটি ভবঘুরের দল যখন সিন্ধু অববাহিকার সবুজ শ্যামল স্থল ভূমিতে গরু ছাগল ও তল্পি তল্পাসহ  ঘাঁটি গেঁড়েছিল তখন তারা তাদের ধর্মীয় কিতাব "বেদ"কেও সঙ্গে এনেছিল। সেই বেদএ তাদের বিষ্ণু ব্রহ্মা অগ্নি সব দেবতাই আরাধ্য হিসাবে গ্রন্থিত  ছিলেন কিন্তু ভারতীয়জাত কাঞ্চনজঙ্ঘার সন্যাসী শিব তাদের দেবতার আসনে ছিলেন না। ফলে সে সময়ের ভারতবর্ষের প্রেক্ষিতে শক্তিশালী জাতিগোষ্ঠী দ্রাবিড়রা তা মেনে নিতে পারেনি। জানা যায় দ্রাবিড়দেরকে বশে আনার জন্য ঐ আর্যরা তখন শিবকে তাদের দেবতার আসনে অন্তর্ভুক্ত করে। এভাবেই শক্তিশালী দ্রাবিড়দের কাছের মানুষ বানিয়ে তারা ভারত ভূখন্ডে সনাতন ধর্মের গোঁড়াপত্তন করে। 

প্রাচীন যুগের ভারতে মহামতি বুদ্ধের অহিংস বানীর ছায়াতলে সে সময় বৌদ্ধ ধর্মের একটা বিশাল ছায়া সুশীতল স্থান বিরাজমান ছিল। ভারতীয় আঙ্গিকের তৎসময়ে দ্রাবিড়রা মোটামুটি বুদ্ধের অনুসারী ছিলেন। কিন্তু পবিত্র বেদের অনুসারী অনুপ্রবেশকারীদের বুদ্ধিমতার চানক্য চালে শক্তির প্রতীক দ্রাবিড়রা সনাতনী আর্যদের কাছে আত্মসমর্পন করে। ভারতীয় আঙ্গিকে সনাতনীদের প্ররোচনায় উপমহাদেশের মূল নিবাসীদের একত্রে রেখে 'হিন্দু' নামের এক সামাজিক আচারধর্মী ধর্মের উদ্ভাবন করা হয়। এই হিন্দু নামটি এসেছিল সিন্ধু থেকে। কারন অনুপ্রবেশকারী আর্যদের উচ্চারন সিন্ধু তখন হিন্দু হয়ে উচ্চারিত হয়েছিল। আস্তেধীরে তাদেরই রাজত্ব কায়েম করে এই আর্য ব্রাহ্মন্য গোষ্ঠী হিন্দু ধর্মের প্রচারনায় বর্নভেদের সুত্রপাত ঘটায়। সেক্ষেত্রে ধর্মের বিচার বিশ্লেষন, সংরক্ষন থেকে শুরু করে সবকিছুর নিয়ন্ত্রন ও ব্যাখ্যাকারী হিসাবে ব্রাহ্মনরাই ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতা ভোগকারী এবং কুল শিরোমনি হিসাবে ঘোষিত হয়। ক্ষেত্রবিশেষে ব্রাহ্মনদেরকে ঈশ্বরের দূত হিসাবেও ঘোষনা করা হয়। কারন ভারতবর্ষ তখন বিভিন্ন জাতি উপজাতির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠী ও অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। যে যার মত শক্তি ও প্রকৃতির পুজা অর্চনা করে তাদের ধর্মীয় আচার আচরনে অহিংস জীবন যাপন করতো। তবে গোষ্ঠী দ্বন্দের জেরে রাজ্যে রাজ্যে পরগনায় পরগনায় যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকতো। 

মধ্যযুগের ভারতে আরও একগুচ্ছ বহিরাগতের আগমন ঘটে। আরব দেশ থেকে মুসলিম ধর্ম প্রচারকেরা ভারতে এসে ইসলামের সাম্যের বানী প্রচার করেন। ফলে নিপীড়িত নিগৃহীত ও সামাজিকভাবে অপাংতেয় নিম্ন শ্রেনীর ভারতীয়রা ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সম্ভবতঃ এরই সুত্র ধরে আরব, এশীয় মাইনর ও ইরানী আফগানীদের পদভারে ভারতে ইসলামী শাসনের সুত্রপাত ঘটে। মধ্যযুগের এই সাত আট'শ বছরকে ভারতীয় সাম্রাজ্যের স্বর্নযুগ বলা হয়। মুসলমান শাসনের ঐক্য সপ্রীতি ও সৌহার্দের ভিত্তিমুলে এক মহান ভারতের বিকাশ ঘটে সেই মোঘল শাসনের সময়কালে। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ধর্ম বর্নের ভারতকে এক সুতোয় বেঁধে সর্ব ধর্মের এক মহান ভারতের জয়গানে ভারতবর্ষ শক্তিশালী মহান রাষ্ট্রপুঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হয়। আর তাদের এতদিনের সবস্থানে ভারতবর্ষে মুসলমানেরা একটি জাতিগোষ্টী হিসাবে আবির্ভূত হন। এক্ষেত্রে এই মুসলমানদের শতকরা নিরানব্বই শতাংশই ধর্মান্তরিত মুসলমান। এদেশের বিশেষ করে বৃহত্তর ভারতের পশ্চিমাংশ এবং পুবের বাংলা অংশে যেখানে ধর্ম প্রচারকদের আগমন বেশী করে ঘটেছিল সেসব এলাকাগুলীতেই মুসলিম সংখ্যার আধিক্য ঘটেছিল। আবার শাসক শ্রেনীর আশপাশ অঞ্চলেও ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান সংখ্যা বৃদ্ধির কারন ছিল। কারন ইসলামের শাসকদের আচার আচরন, মসজিদের নামাজে এক কাতারে বাদশা ও সাধারন জনগনের প্রার্থনা করার দৃশ্য, একপাতে বসে আমীর প্রজাদের ইফতার ইত্যাদি সাধারন মূল নিবাসী ভারতীয়দের অনুপ্রানিত করেছিল এই ধর্মের পতাকাতলে সামিল হওয়ার জন্য। তবে কিছু বিকারগ্রস্ত হিন্দু লেখক বা ইতিহাস কারকদের ব্যাখ্যা মোতাবেক 'এক হাতে অসি অন্য হাতে কোরান', থিউরিতে ভারতে মুসলমান সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি। ওটা ধর্মান্ধদের সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা। যদি এটাই সত্য হোত তাহলে ভারতে জগন্নাথ কাশী গয়া পুরি বারানসীর অস্তিত্ব আজ খুঁজে পাওয়া যেত না। বারানসীর পুন্যভূমিতে পাশাপাশি লাগোয়া ভাবে মন্দির মসজিদ গড়ে উঠতো না। কিংবা স্বর্ন মন্দির না হয়ে সেদেশে স্বর্ন মসজিদ গড়ে উঠতো।  

যাহোক মোঘল সুর্য অস্তমিত হওয়ার পর ভারতে প্রবেশ করে আর এক শাসকের জাতি। তবে তারা বেনিয়া হিসাবে ভারতে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে তারা তাদের রাজশক্তির অঙ্গরাজ্য হিসাবে ভারতকে একীভূত করে। অর্থাৎ আধুনিক যুগের শুরুতে ভারতের যাত্রা শুরু হয় বৃটিশ ভারত হিসাবে।৷ এবং ভারতের পরাধীনতার শেকল এটাই প্রথম বলে বিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন। কারন আগে যারা ভারতে বা বাংলায় শাসক হিসাবে বসেছিল তারা ভারতীয় হিসাবেই তাদের অস্তিত্ত্ব বিনির্মান করেছিল। সেক্ষেত্রে বৃটিশরা এখানে ভারতীয় হতে আসেনি। তারা শাসক হিসাবে এসে ভারতকে বৃটিশ কলোনী বানিয়েছিল। এটাই ইতিহাস। এভাবেই ভারত যুগে যুগে পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত হয়ে শুদ্ধাচারের উচ্চারনে আপন অস্মিতার উঠানে নিজের ঠিকানা খুঁজে নেয়। তবে সেই পাওয়া বা নেয়ার অভিজ্ঞতা বড়ই অম্লমধুর। ততদিনে ভারতের শক্তিশালী দুটি রাজ্য বাংলা ও পাঞ্জাব এবং গোটা ভারতের বিচ্ছিন্ন জায়গায় ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বার জাগরনের স্ফুরন ঘটে। জাতিগত আদিমতার ঐতিহ্যকে পাশ কাটিয়ে সারা ভারত জুড়ে ধর্মীয় জাতিস্বত্ত্বার হিন্দু ও মুসলমান নামক দুটি বৃহৎ ধর্ম স্বত্ত্বা ভারত জুড়ে নিজেদের অস্তিত্ত্বের ও কর্তৃত্ত্বের জানান দেয়। মোঘল তথা মুসলমান শাসনকালের সময় ভারত তথা বাংলায় যে সম্মিলিত মহান ভারত বিনির্মান হয়েছিল বৃটিশ আগমনের পর তার আদলটাই বদলে গেল। কুশলী জাতি ইংরেজরা তাদের কলোনিয়াল শাসন টিকিয়ে রাখার মানসে ভারতে ধর্মকে সামনে রেখে devide and rule নীতি প্রয়োগ করে তাদের আসন পোক্ত করতে চাইলেন। ফলে ভারত তথা বাংলায় ধর্ম তত্ত্বের বিভাজন প্রকট আকার ধারন করলো। এবং এভাবেই হিন্দু মুসলমান জাতিস্বত্ত্বার সহিংস বিভৎসতায় ভারত রক্তাক্ত হোল। 


প্রসঙ্গ নেপাল-গোপাল। এখানে তো  মুসলমানের টিকিটিও নেই। নেপাল গোপাল তো একই প্রজাতির জাত পুরুষ। সেখানে আবার কোন্ স্বার্থের জ্বলাঞ্জলি হোল যে চারিদিকে এত হৈচৈ পড়ে গেল! হাঁ, ব্যাপার তো কিছু আছে নইলে এটা নিয়ে আবার অন্য জাত পুরুষেরা মাথা ঘামাবেন কেন! আবারও সেই আর্য ব্রাহ্মন্য বা চৈতন্যিক কুট কৌশল। ভারত তথা বাংলার আদি সমযে হিন্দু মুসলমানের কোন অস্তিত্ত্ব ছিল না। ছিল একখন্ড প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার খেটে খাওয়া আদি পুরুষের বেঁচে থাকার শান্তিপুর্ন সহবস্থান। জাতিগত আচার আচরনে তুষ্ট থেকে নিজ নিজ মনোতুষ্টিতে তারা প্রকৃতির পুজা অর্চনা বা এবাদত বন্দেগী করতো। সেখানে ছিলনা কোন মাথা থেকে সৃষ্ট ব্রাহ্মন, বুক থেকে সৃষ্ট ক্ষত্রিয়, পেট-কোমর থেকে উদ্ভূত বৈশ্য কিংবা কোমরের নিম্নাংশ থেকে জাত শুদ্র প্রজাতির মানুষ। একটি ধর্ম কিভাবে মানুষকে এভাবে বিভাজনের সিঁড়ি গেঁথে উঁচু নীচু করে দেয় তা কেবল হিন্দু নামের এই ধর্মেই বলে দেয়। তবে আমার বিশ্বাস তাদের পবিত্র বেদে এই মনুষ্য সৃষ্ট জাত-পাতের কোন নির্দেশনা নেই। সুবিধাভোগী ব্রাহ্মনীয় ফতোয়া এসব। যাহোক, সার কথা হোল এই নেপাল গোপালই হচ্ছে আমাদের আদি নাম। আমরা এদেরই জাত পুরুষ হিসেবে হিন্দু মুসলমান নামে বাংলায় বাঙালী হয়ে বেঁচে আছি। যারা মুসলমান হয়ে নিজেদের অস্তিত্ত্ব বিনির্মান করেছেন  তারা তো পার পেয়ে গেছেন। তারা তো রহমান সালাম ইসলাম নাম নিয়ে  সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহে বর্তে গেলেন। কিন্তু নেপাল গোপালদের কি হবে? ওরা তো ওরাই থাকলো। কারন ব্রাহ্মন পুরোহিত বা আর্য মাথারা আপন  রক্তের অহংবোধের জাত হয়ে এখনো তো ওদেরই রক্ত চুষে খাচ্ছে এবং ওদের মাথার উপর  ছড়ি ঘুরাচ্ছে! লক্ষ্যনীয়, ওই ব্রাহ্মন্য চিন্তা চেতনা নিয়ে এক শ্রেনীর বুদ্ধি বৃত্তির ব্রাহ্মন ও তাদের ঝোল খাওয়া জ্ঞানপাপীরা  আবারও সেই নেপাল গোপালদের সামনে রেখে সাম্প্রদায়িক উস্কানী মূলক কথাবার্তার বাতাস ছড়িয়ে ঘোলা জলে মাছ শিকারের ফাঁদ পাতছে। নইলে কোমলমতি শিক্ষাঙ্গনে এসব নেপাল গোপালের কাহিনী সৃষ্টি করে তারা কোন্ মহাভারত তৈরী করতে চান! চিরকাল তো ওদেরই ঘাড়ে বন্ধুক রেখে নিজেদের গোলা পুষ্ট করেছেন তারা।

পাপ কখনো বাপকেও ছাড়ে না। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত বোধহয় আজকের দিনে ভারতীয় উপমহাদেশের ধর্মভেদের এই আদি মানুষেরা ভোগ করে যাচ্ছেন। বেদ একটি পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। এর প্রতিটি বাক্য মৌলিকতায় ভরা। এখানে একেশ্বরবাদের কথা বলা হয়েছে। ধর্মে কোন বিভাজন থাকতে পারে না। মনুষ্য সৃষ্ট এই জাতপাত সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না। সৃষ্টির সেরা জীব হচ্ছে মানুষ। মত ভেদ, ধর্ম ভেদ, জাতিভেদ,আচার বিচারের ভেদ, আঞ্চলিকতার ভেদ থাকতে পারে। কিন্তু মানুষ তো মানুষই। লিঙ্গভেদ ছাড়া তার আবার ভেদাভেদ কিসের?  

বাবারা! এবার থামো। বাঙালী হয়েছো। কপাল গুনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বাংলার মাটিতে জন্মেছিলেন বলেই আজ স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালীত্বের তকমা লাগিয়ে নিজের অস্তিত্ত্বে বলীয়ান হতে পেরেছো। এখন নিজের উঠান পরিস্কারের কাজে লেগে পড়ো। হিন্দু মুসলমান নয় বরং আপন ঘরানার ওই বৈশ্য শুদ্রের নেপাল গোপালদের আপন করে ভাবার অনুশীলন করো। ওদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে রাজত্ব করার রেওয়াজে সেই যে প্রাচীন ভারতীয় সেনরা একই ধর্মের উঠানে  সাম্প্রদায়িক প্রথার সুত্রপাত করলো তার যবনিকা কি হবে না? বাঙালীত্বের বৃহত্তর আঙ্গিকেই বলি, আজকে যারা মাড়োয়ারী বেশে তোমার ঘরে পাত পেড়ে গরম ভাতের সঙ্গে ভাজি-ভর্তা খাওয়ার নাটক করছে তাদের শাসন শোষন তো সেই প্রাচীন ভারত থেকেই শুরু হয়েছে। তারাই তো তোমাদেরকে এই গোত্র প্রথার সাম্প্রদায়িক বৈশ্য শুদ্র বানিয়েছে। আর পাশের বাড়ীর,  দত্ত রায় সিংহ বাবুরা! তারাও কিন্তু ঠিকুজির ঐ আদি পুরুষ নেপাল গোপালেরই অপভ্রংশ। 

বিষয়:
avertisements 2
পপ তারকা থেকে নীলছবির নায়িকা, আয় কোটি টাকা
পপ তারকা থেকে নীলছবির নায়িকা, আয় কোটি টাকা
৯/১১-র ধাঁচে রাশিয়ায় ড্রোন হামলা ইউক্রেনের
৯/১১-র ধাঁচে রাশিয়ায় ড্রোন হামলা ইউক্রেনের
দুই চীনা তরুণীর স্বপ্নে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটারিচালিত রিকশা
দুই চীনা তরুণীর স্বপ্নে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটারিচালিত রিকশা
‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ জন্য ডিটেনশন সেন্টার খুলবে ভারত
‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ জন্য ডিটেনশন সেন্টার খুলবে ভারত
একটি ডিমের দাম ৩০ হাজার টাকা!
একটি ডিমের দাম ৩০ হাজার টাকা!
ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘জোর করে’ হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বক্তব্য ভাইরাল!
ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘জোর করে’ হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বক্তব্য ভাইরাল!
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা কী বিশ্বাসযোগ্য?
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা কী বিশ্বাসযোগ্য?
ফেক আইডি, তছনছ জীবন
ফেক আইডি, তছনছ জীবন
চাঁদা না দেওয়ায় শাহবাগের দোকান বন্ধের হুমকি ছাত্রদল-যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের, সিসি ক্যামেরায় পড়ল ধরা
চাঁদা না দেওয়ায় শাহবাগের দোকান বন্ধের হুমকি ছাত্রদল-যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের, সিসি ক্যামেরায় পড়ল ধরা
বিশ্ব ইজতেমার ভবিষ্যৎ কী?
বিশ্ব ইজতেমার ভবিষ্যৎ কী?
বাংলাদেশ-ভারত : এক সময়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন বৈরী 
বাংলাদেশ-ভারত : এক সময়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন বৈরী 
ইসরায়েল হামলায় সাত শিশুসহ একই পরিবারের ১০ ফিলিস্তিনির  মৃত্যু
ইসরায়েল হামলায় সাত শিশুসহ একই পরিবারের ১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
বিএনপির একঝাঁক তরুণের হাতে পূর্বসূরির ঝাণ্ডা
বিএনপির একঝাঁক তরুণের হাতে পূর্বসূরির ঝাণ্ডা
কিয়েভে ৬ বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
কিয়েভে ৬ বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
সারা দেশে ‘জয় বাংলা কিলিং মিশন’ গঠনের প্রস্তাব, ভিডিও ভাইরাল
সারা দেশে ‘জয় বাংলা কিলিং মিশন’ গঠনের প্রস্তাব, ভিডিও ভাইরাল
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর  আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
avertisements 2
avertisements 2