
জালাল উদ্দিন আহমেদ
শেকড়ের খোঁজে
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৫ অক্টোবর,রবিবার,২০২৫ | আপডেট: ০১:৫৫ পিএম, ১০ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২৫

বাঙালী হয়ে পুনর্জন্ম হওয়ার পর থেকেই এদেশ, এজাতি ও তার জাতীয়তাবাদ ও বোধকে নিয়ে ভাববার চেষ্টা করেছি। নিজের শেকড়ের খোঁজ নিতে গিয়ে বার বার বিডম্বনায় পড়েছি। হাজার বছরের বাঙালী ঠিকুজি খুঁজতে গিয়ে নিজের সমন্ধে বেশ অম্লমধুর অনেক খবরই আমাকে আশান্বিত করেছে। ঐ যে কথায় কথায় আমরা আমাদের পুর্বপুরুষের নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করি বা ক্ষেত্রবিশেষে গর্ব অনুভব করি, সেসবের সাজুয্যতায় হিসেব কষে দেখেছি যে সত্যিকার অর্থেই আমরা ভাগ্যবান একটি জাতিস্বত্বা। আমাদের রক্ত প্রবাহে রয়েছে মহান সৃষ্টকর্তা মনোনীত সেইসব মহাপুরুষদের যোগফল যারা আল্লাহ প্রদত্ত এবং স্বীকৃত শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলামের খেদমতে এই আদিবাসী অধ্যুষিত পুর্ব বাংলায় কাফেলার মত দলে দলে এসে এই মাটিকে পবিত্র করেছেন। আমার সমালোচকেরা রে রে করে তেড়ে এসে বলবেন কেন তোমার ঐ আট বা ১২ শতকের আগে কি এখানে আর কোন রাজা জমিদার সাধু সন্ত আসেনি! হাঁ, এসেছিল। তবে বসেনি। আমার উঠান ওদের কাছে অছ্যুত ছিল। ওরা নিজেদেরকে ভগবান সমতুল্যে এ তল্লাটে কখনোই ঘর দুয়ারী করেন নি। যদিও বা দু'একজন এ মাটিতে পা রেখেছিলেন কিন্তু তা ছিল ঐ বিদেশী বেনিয়া তুল্য। এমনকি ওদের পরিমন্ডলে এ মাটিতে হঠাৎ গজিয়ে উঠা তথাকথিত সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মনরাও তাদের উঠানে পা রাখতে পারেনি। তারা রাজকার্য করেছে সংস্কৃত ভাষায়। বাংলা ভাষা ও বাঙালী জাতি তাদের কাছে ম্লেচ্ছ ও অস্পৃশ্য ছিল। তারা এ মাটির মেঝেতে পাত পাড়েনি। এসেছে, বসেছে, খেয়েছে, শাসন করেছে, ক্ষনিকের অস্থায়ী বাসস্থান বানিয়েছে এবং সম্পদ লুটে নিয়ে নিজ মাটির ভূখন্ডকে সমৃদ্ধ করেছে। অছ্যুত বাঙালীকে প্রজা স্তরে রেখে তারা শুধু শাসন ও শোষন করেছে।
বাঙালী তো! তাই হিসাবে পটু এই জাতি কখনো অঙ্ক নিয়ে ভাবে নি। অঙ্কে তারা বরাবরই পটু। নিজেদের জাতিস্বত্বা বিনির্মানে কোন তৈলাক্ত বাঁশে চড়ে বানরের উপরে উঠার সেই অঙ্ক মিলিয়েছিল কিনা জানিনা, তবে আদিম বাঙালী অধ্যুষিত এই জনপদে মহান সৃষ্টিকর্তার নেক নজর ছিল বলেই হয়তো তার সৃষ্ট শ্রেষ্ঠতম ধর্মের বাণী নিয়ে এভূখন্ডে যারা এসেছিলেন তারা প্রত্যেকেই তার সন্তুষ্টির শ্রেষ্ঠতম সাধুপুরুষ ছিলেন। কারন আঁতুড় ঘর সাফ সুরত করতে গিয়ে যা দেখি তাতে এই প্রাচীন জনপদে ধোলাইয়ের কাজটি বেশ সুচারুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে বলেই মনে হয়। কেন মনে হয়, তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষন কাউরি পছন্দ হোক আর না হোক, যে প্রবাহের তোড়ে এই জনপদের অন্ধকার যুগে ঝাঁকে ঝাঁকে আরব ও এশিয়া মাইনর অঞ্চল থেকে আলেম ওলেমা এবং পীর দরবেশ এমনকি যোদ্ধা ও শাসকেরা এই মাটিতে তাদের পদধুলি নিয়ে প্রবেশ করেছেন তা ছিল অভূতপুর্ব এক ঘটনা। তারা এই ভূখন্ডে এসেছেন বসেছেন, মানুষকে ভালবেসে তাদের আপনজন হয়েছেন এবং এখানেই তাদের অস্তিত্ব বিনির্মানে স্থায়ী হয়েছেন। লতাপাতা গুল্ম মাছ ও চাল সিদ্ধ করে খাওয়া মানুষদের কাছে এসে তারা তাদের আপন হয়েছেন। বাড়িঘর বানিয়ে বসবাস করতে শিখিয়েছেন। মসলা দিয়ে রান্না করতে তালিম দিয়েছেন। সমাজবদ্ধতা ও ধর্মীয় আচরনের সমতা নিয়মানুবর্তিতা সর্বোপরি ইসলাম নির্দেশিত সাম্য সৌহার্দ ও নৈতিকতার আলো ছড়িয়েছেন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতারবদ্ধ হয়ে রাজা প্রজাকে একসঙ্গে স্রষ্ঠার এবাদত বন্দেগীতে সামিল করেছেন। ইসলামী ধর্মগুরুদের এহেন সমতা ও সমাজবদ্ধতার শিক্ষায় তারা তাদের পুরনো জীর্ণতায় ভরা ধর্ম ও সমাজ কাঠামো পরিত্যাগ করে সদলবলে ইসলামের পতাকাতলে সামিল হয়েছে।
ইতিহাস ভূগোল গুগল খুঁজে যা পেলাম তাতে অ স্বস্তির থেকে স্বস্তিটাই বেশী করে ঘ্রাণ ছড়ালো বলে মনে হোল। এতদাঞ্চল বিশেষ করে পুর্ব বাংলা মূলতঃ আদিম এক শংকর বসতির ভূখন্ড ছিল। প্রাচীন কাঠামোয় অর্থাৎ পাঁচ সাত হাজার বছর আগের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় ইন্দোচীন ও মঙ্গোলীয় অস্ট্রিক জাতির আগমনে এখানকার বসতির শুরু। এরপর ভারতীয় দ্রাবিড়রা এখানে এসে অস্ট্রিকদের সঙ্গে মিশে যায়। পরবর্তীতে মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার আর্যরা ভাগ্যান্বেষনে পুর্বমুখী হলে তারাও এই অস্ট্রিক দ্রাবিড়দের সঙ্গে মিশে গিয়ে এক শংকর জাতিস্বত্বার উদ্ভব ঘটায়। যাহোক পরবর্তী প্রাচীন ও মধ্য যুগীয় সন্ধিক্ষনে মধ্য এশিয়া, পারস্য তুর্কি ও এশিয়া মাইনর থেকে ইসলামের কাফেলা নিয়ে বাংলাদেশে হাজার হাজার ইসলামী সাধক সুফি দরবেশ ধর্ম প্রচারক অলি আউলিয়া এমনকি মুসলিম শাসক ও যোদ্ধা শ্রেণীর মানুষ ও তাদের সিবলিংস এই মাটিতে আগমন করেন। বাংলাদেশের বিশেষ করে পুর্ব বঙ্গের এমন কোন জেলা উপজেলা খুঁজে পাওয়া যাবেনা যেখানে অলি আউলিয়াদের আখড়া মাজার বা ইসলামী সুফি সাধকেরা ইসলামের এলম ও আকিদা প্রচার করেন নি। বার আউলিয়ার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায় অষ্টম শতকের পর হতে এদেশে খুরমা খেজুর এবং মসলা ইত্যাদির ব্যবসা নিয়ে বৃহত্তর আরবের ইসলামী ধর্ম প্রচারকরা এই ভূখন্ডে আগমন করেন এবং তারা তাবলীগের আদলে কমপক্ষে বার জনের দল নিয়ে এসে এলাকা ভিত্তিক দাওয়াতি প্রচার করেছেন। তারা এসে আবার ফিরে যাননি। এই মাটি ও সমাজকে ভালবেসে তারা ধর্ম কর্মের মাধ্যমে এবং সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি করে এই মাটিতেই স্থায়ী হয়েছেন। ফলে দেউ দৈত্য ভুত প্রেতের আদিমতার বর্ণ বৈষম্যের সমাজ কাঠামোয় জর্জরিত এতদাঞ্চলের আদি অধিবাসীরা একটি স্বস্তির জায়গায় খুঁজে পেয়েছিল বলে ইতিহাসবিদেরা বর্ণনা করেন। তাছাড়া বার'শ শতকের পর মুসলিম শাসক হিসাবে যারা এসেছেন তারা তো দলবল এবং লোক লস্কর নিয়েই এখানে তাদের তাঁবু গেঁড়েছেন।
এতদাঞ্চলের আদিম মানুষের ভিন্ন ভিন্ন সনাতনী মানুষেরা যাদের ধর্ম বলতে প্রথম দিকে যে যার মত শক্তি ও গায়েবী ভুত প্রেতের পুজা অর্চনা করে কাটাতো। নিজেদের আন্তঃকলহ এবং মানুষে মানুষে জাতি ও বর্ণ বৈষম্যে তারা এমনিতে জর্জরিত ছিল। ফলে আরব ও এশিয়া মাইনর থেকে আগত শাসক যোদ্ধা ধর্ম প্রচারক এমনকি ভাগ্যান্বেশনে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনের চলন বলন এবং ইসলামী অনুশাসনের শৃঙ্খলাবদ্ধ আচরনে এখানকার আদি অধিবাসীরা আকৃষ্ট হয়। ফলে জাতি বৈষম্য ধর্মের বৈষম্য এমনকি সামাজিক বৈষম্যে জর্জরিত স্থানীয় বাঙালীরা দলবেঁধে ইসলামের শান্তি সাম্য ও সৌহার্দের ছায়াতলে নিজেদেরকে সমর্পন করে মুসলিম হয়েছে। সেই যে প্রবাহ শুরু হোল, তা কি আর থেমেছিল কখনো! ইসলামের শান্তি ও সাম্যের পতাকাতলে এতদাঞ্চলের গণমানুষ গণহারে মুসলিম হয়েছে। সেই ইসলামী করনের প্রবাহ বা এর দাওয়াতি কার্যক্রম এখনো চলমান। আজকের দিনে পুর্ব বাংলায় তাইতো শতভাগের কাছাকাছি ইসলাম ধর্মের মানুষ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের বাঙালী হিসাবে গর্বিত। সেক্ষেত্রে ‘‘ধর্ম নয়, কর্ম হোক বড়’’ এই মন্ত্রে আমরা ধর্ম নির্বিশেষে আজ বাংলাদেশের বাঙালীরা বাঙালী জাতি হিসাবে গর্ববোধ করি। এখানে বৌদ্ধ খৃষ্টান সনাতনী জৈন শিখ পাহাড়ি চাকমা মারমা মুরুং সাঁওতাল মুন্ডা সবাই বাঙালী। এরাই আমাদের পুর্ব পুরুষ। চলার পথে হাজার বছরের ইসলামের আলোকবর্তিকায় আলোকিত হতে পেরে আমরা গর্বিত এবং ধন্য।

সেফ এক্সিট নিয়ে এবার উপদেষ্টা আসিফের ফেসবুক পোস্ট

এবার হিজাব পরে কটাক্ষের শিকার অভিনেত্রী দীপিকা

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ মার্কিন বিজ্ঞানী

কিছু উপদেষ্টার মৃত্যু ছাড়া কোনো সেফ এক্সিট নেই: সারজিস আলম

প্রাচীন মগধের আঁকিবুকি

দেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার আতঙ্ক বেড়ে চলেছে : গোলাম মাওলা রনি

২৩৭ কোটি টাকা বৈধ করতে কোটি টাকার ঘুষচুক্তি করেন এনবিআর কর্মকর্তা!

ভারত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে বিরাগভাজন হলে কিছু করার নেই: তারেক রহমান

এক সপ্তাহের মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটবে: তাজুল ইসলাম

বাংলাদেশে নির্বাচনে যেই ক্ষমতায় আসুক তার সঙ্গেই কাজ করবে দিল্লি: বিক্রম মিশ্রি

সেই শিক্ষার্থীকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার

ভাইরাল কৃষকের সঙ্গে জেমসের এই ছবির নেপথ্যে রয়েছে ‘ইতিহাস’

শেকড়ের খোঁজে

আবু ত্বহা আদনানের ‘অন্ধকার জীবন’ নিয়ে স্ত্রীর অভিযোগ

মরক্কো থেকে নেপাল, লিমা থেকে মাদাগাস্কার: জেন-জি আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বজুড়ে

দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!

গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!

কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক

সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু

সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন

অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ

অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা

কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার

হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার

খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি

প্রণব মুখার্জি আর নেই

কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু

মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু
