জালাল উদ্দিন আহমেদ
রাজনীতির অসুস্থতা
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুন,শুক্রবার,২০২৫ | আপডেট: ০২:০২ এএম, ৫ নভেম্বর, বুধবার,২০২৫
বিষয়টি বেশ জটিল। এসব নিয়ে কথা বলাও বেশ ঝুঁকিপুর্ণ। কিন্তু ঐযে ফাঁক পাওয়া বলে কথা। গত কয়েকটি মাসে একটু মুক্ত নিঃশ্বাসে থাকা বা মুক্ত চিন্তায় কথা বলা, বেশ তো - ভালই লাগছে। আশেপাশে এত পঙ্কিল রাস্তাঘাট, কদর্যতায় ভরা পরিপাশ, কোনটা থুয়ে কোনটা বলি। কাকে নিয়ে মনের মধ্যে জমে থাকা দু’চারটে নসিহতনামা উগরে দিই সেটা নিয়েই কম্পিটিশন চলছে। এই যে সুব্রত বাইন ধরা পড়েছেন। কিন্তু তার হালের সুরত ও বোলচালে আমাদের তো অনেক কিছু জানার বা বুঝার আছে। মহামান্য আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি যে হার্ড টকগুলো করলেন তা কি নিছকই কথার কথা। কথাগুলোর অন্তরালের অলিগলিতে হাঁটাচলা করে এর নিগূঢ় ব্যাখ্যগুলি উদ্ধার করা প্রয়োজনের মধ্যে পড়েনা কি! আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইনের অনুসন্ধানী রিপোর্টাও তো আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে অনেক কিছুই বলে দিচ্ছে। রিমান্ডেও তো সেগুলো বাতাস ভারি করছে। রাজনীতির তঞ্চকতায় মিডিয়া ট্র্যায়ালের কোপানলে পড়ে কতনা এরকমের সুব্রত বাইনরা অন্ধকার জগতের নাগরিক হচ্ছেন তার হিসাব কেউ কি রেখেছেন! বিষয়টি প্রাসঙ্গিক না হলেও, রাজনীতির কদর্য আচরণগুলি আজ যদি accountability র মধ্যে আনা হোত তাহলে আজকের কালা ধলা বাঘা বাইনদের এ সমাজে আপদ বা আতংক মনে হোত না। যাহোক, বাইন এখন আইনের খাতায় নাম উঠিয়েছেন, সুতরাং এসব নিয়ে উচ্যবাচ্য না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ভূমিকার কলেবর দীর্ঘায়ু না করে তবুও একটু আঁচড় টেনে বলতে চাই, অঙ্গীকার দিয়ে সরকারী কর্মচারী হওয়া বাংলাদেশীরা বেশ আয়েশেই আছেন বলে মনে হচ্ছে। নইলে গণকর্মচারীর খাতায় নাম লিখিয়ে এভাবে মিটিং মিছিল হরতাল কর্ম বিরতি কি করা যায়! যেন স্বপ্ন মঙ্গলের কথা বলেই মনে হয়। শোনা যায় জনগনের কর্মচারীদের কাছে সরকার একটা ট্রামকার্ড ছেড়েছেন। “বাবারা তোমাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পদের হিসাব খোলাসা কর, তাহলে তোমাদের কথা শুনবো”। শুনলাম বাবারা চুপসে গেছেন। তবে কলুষিত রাজনীতির জনতার মঞ্চের মখা আলমগীর আর আবু ভাইয়াদের স্যালুট না দিয়ে পারিনা। ওরাইতো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের রাজনীতির instinctivity টা শক্তপোক্ত করে দিয়ে গেছেন। শোনা যায় জুলাই আন্দোলন পরবর্তী সময়টিতে বিগত পনের ষোল বছরে সেগুন বাগিচার দেয়াল ঘেরা অট্টালিকায় প্ল্যান্ট করা ডেপুটিদের সৎকারে হাত না লাগানোর ফলে বর্তমান অন্তর্বতী সরকার বেশ টানাপোড়েনে আছে। শুভস্য শীঘ্রম বা বাসর রাতেই বিড়াল মারার যে চিরন্তন বাণীগুলো আছে তার প্রায়োগিক মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আম কাঠাল পাকার এই জ্যৈষ্টি আষাঢ়েও এক প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্ণঝড় তুলে এদের নিকাশীর একটা ব্যবস্থা নেয়া যায়। মনে রাখা প্রয়োজন রাজনীতির অসুস্থতার প্রধানতম লক্ষ্মনই হচ্ছে আমলা নির্ভরতা। আর বিগত পনের বছরের দাপুটে ডেপুটিরা, রাজনীতির অসুস্থতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পায়ের মাটি শক্ত করে সমাজ তথা রাষ্ট্রের গণ্যিমান্যি হয়েছেন কিংবা বেগম পাড়া ও সেকেন্ড হোম প্রাপ্যতায় স্বাচ্ছন্দ হয়েছেন, তারা কোন্ দুঃখে এই পোলাপানীয় পছন্দের অন্তর্বর্তীদের কাছে সুবোধ বালক হবেন - সেটাও কোটি টাকার প্রশ্ন।
বন্ধুস্থানীয় একজন বড় মাপের রাজনীতি বিদের সঙ্গে আমার একটু আধটু উঠাবসা আছে। জোয়ানকালে দেশের একটি বড় সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে উত্তরাঞ্চলের নগরটির এমপিও হয়েছিলেন। এখন বেশ বড় মাপ নিয়েই তিনি রাজনীতির রাঘববোয়াল বটে। সদাহাস্য জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব তিনি। মন্ত্রী এমপির চেয়ে একজন সফল মেয়র হিসাবেই স্থানীয় জনগন তাকে বেশী পছন্দ করে। দেশের আপদকালীন সময়ে সেই প্রিয় মেয়র ভাই এক জনসভায় বলেছিলেন, তাহার কি মনে নাই পঁচাত্তরের পনেরোই আগষ্টের কথা। কালকের সকাল তোমার নাও হতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি। রাজনীতির কথা। মাঠের কথা। ব্যাশ, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। কোট কাছারি হয়রানি আরও কতশত পেরেশানী। আবার ক্ষমতাসীন আপদলীগের স্থানীয় এমপিকে শিবিরের নেতা বলাতে স্রেফ ডিজিট্যাল আইনের ফাঁদ। তো এসবই ছিল রাজনীতিবিদ নামক এদেশের একদল ফ্রন্ট লাইনের মানুষজনের আপদকালীন সময়ের বালা মুসিবত। এই বালা মুসিবত নিয়ে শুধু ক্ষমতার পিলো পাসিংয়ের খেলোয়াড় বা রাজনীতিবিদরা নন, আমাদের মত সাধারন মানুষজনকেও এসব মুসিবত নিয়ে দিনমান গুজরান করতে হয়েছে গুনে গুনে দেড় দশক ধরে। রজনীতির অকথা কুকথার তো বালাই নেই। মুখ খিস্তির সীমা পরিসীমা নেই। কেউ কাউকে রূপপুরের ইউরেনিয়াম মাথায় ঢেলে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। কেউবা নারী নেত্রীদের নিশিরাতের পাখী সাজিয়ে বিদেশী মুরুব্বীদের মনোরঞ্জনের মত অরূচিকর কথা ঢেলে দিয়ে রাজনীতির মাঠকে মাইনাস চল্লিশ ডিগ্রির নীচে নামিয়ে দেয়। শিখরে থাকা কেউ আবার তার প্রতিপক্ষের মৃত্যু কামনায় আশস্ত হতে চায়। কিংবা তার সেরা (!) উন্নয়নের মাথামোটা ঢেকিতে উঠিয়ে পদ্মা নদীতে চুবাতে চায়। তাও আবার পারিষদ বা মিডিয়া কর্মীদের সামনে রেখে হাস্যরসের মহাসমারোহে এসব করে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা হয়। কি দুর্ভাগ্য আমাদের! চেয়ারের হবুচন্দ্রীয় আসক্তি নিয়ে রাজনীতি পরম্পরার উত্তরাধিকার দাম্ভিকতার সুরে বলেন, আন্দোলন করলে বা বিপক্ষীয় কথা বললে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সব বন্ধ করে দেব। যদি বিরুদ্ধবাদিতা থামানো হয় তবে আবার সব সচল করে দিয়ে দেখিয়ে দেব উন্নয়ন কাকে বলে। রাজনীতি বিদের এই কদর্য চেহারা আমরা দেখলাম। কতটা অসহায় হলে একটি মুক্ত ভূখন্ডের সাধারন জনগন এই বিষাক্ত নিঃশ্বাসের রাজনীতিকে ধারন করে বেঁচে থাকে - কেউ কি বলবেন?
বাংলাদেশের রাজনীতির কয়েকটি পক্ষ রয়েছে। পারিবারিক পরম্পরার দুটি বড় পক্ষ। আরো একটি পারিবারিক রাজনীতির প্লাটফরম থাকলেও তারা আঞ্চলিকতার আশীর্বাদপুষ্ট বিধায় জাতীয় ভিত্তিক গ্রহনযোগ্যতায় তাদের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এরা প্রত্যেকে ডানপন্থা ঘরানার রাজনীতি করে। আর খুচরো কিছু ইসলামী ঘরানার রাজনীতির পক্ষও আছে। অবশিষ্ট গোটা কয়েক ব্যক্তি সর্বস্ব বামপন্থী দলও আছে। সেক্ষেত্রে ছাত্র সমাজে আদর্শ ভিত্তিক বাম ঘরানার আধিক্য থাকলেও জাতীয় ভিত্তিক নেতৃত্ব শুন্যতায় এদেশে বামপন্থী রাজনীতির ব্যপকতা অতটা প্রসার ঘটেনি। ফলে বিদ্যমান রাজনীতির গণতন্ত্র চর্চায় নীতি আদর্শের অনুশীলনের বদলে পরিবার ও ব্যক্তি ক্যারিশমার চর্চাই প্রাধান্য পেয়েছে। সুতরাং রাজনৈতিক কাঠামোই বলে দিচ্ছে যে, সেরকম শক্তপোক্ত রাজনীতির ক্যাড়ার বা কমরেড ভিত্তিক অনুশীলন এই তল্লাটে খুব বেশী গড়ে উঠেনি । তবে হাঁ, ইসলামী ধর্মমতের একটি ক্যাডার ভিত্তিক রাজনৈতিক দল এদেশে রয়েছে। কিন্তু তাদের অন্তর্মুখী আচরনের প্রভাবে ধর্মভীরু মুসলমানেরা ওদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে বলেই ধরে নেয়া যায়। কারন ৯০% মুসলিম গরিষ্ঠের দেশেও তারা ১০% এর উপরে কখনো উঠতে পেরেছে বলে মনে পড়েনা। আর রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক আচরনের সৌষ্ঠব না থাকার করনেই এই ব্যক্তি তথা পারিবারিক পরম্পরার মধ্যযুগীয় আচরনেই আমাদেরকে ঘেটে ঘ হয়ে চলতে হচ্ছে। কপাল গুনে এক মহকুমা শহরের সিভিল কোর্টের সেরেস্তাদারের পুত্র “খোকা” বাঙালী হয়ে বেড়ে উঠেছিল বলেই আজকের বাঙালী তার আপন ক্যারিশমার ছিটেফোঁটা রৌশনি নিয়ে বেঁচে আছে। আর ব্যারাকের “কমল” নামের ছেলেটি সেই আলোকছটায় নিজেকে তৈরী করেছিল বলেই বাঙালী কপাল গুনে এক দেজদীপ্ত বিদ্রোহী সিপাহশালারের সন্ধান পেয়ে ধন্য হয়েছিল। সেই খোকা কমলের যুগলবন্দি নিয়েই আমরা আমাদের স্বাধীন স্বত্ত্বার অর্ধ শতাব্দী পার করে দিলাম বটে কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও আমরা এখনও রাজনীতির সুস্থ্য একটি আঙ্গিনা বিনির্মানে কামিয়াব হতে পারলাম না।
রাজনীতির প্রকৃত পাঠশালা তৈরীতে আমরা এখনও যোজন যোজন দূরে পড়ে আছি। বাঙলার মহান পুরুষদের গিলোটিনের কড়িকাঠে ফেলে আমরা শুধু জয় আর জিন্দাবাদের ঝাঁঝালো শ্লোগানে তাঁদেরকে ব্র্যাকেটবন্দি করে রেখেছি। দেশ ও জনতার প্রকৃত সন্তান হওয়ার যুগ সন্ধিক্ষনে হয়তো তাঁরা নিটোল হয়ে ফুটে উঠতে গিয়ে পিচ্ছিল খেয়েছেন, কিন্তু দিশাহীন জাতিকে বিশুদ্ধ রাজনীতির শক্ত ছাঁচে ফেলার বদলে যেভাবে আমরা পারিবারিক বলয় তৈরীতে নিজেদেরকে মেরুদন্ডহীন করে ফেলছি তার উত্তর কে দেবে! রাজনীতির এই অসুস্থ্যতা একদিন না ক্যান্সারের রূপ নিয়ে আমাদের জাতীয় অস্নিতার শেকড়ে ঘুন ধরিয়ে কোন এক লেন্দুপ দর্জির হাত বদলের কালো অধ্যায় তৈরী করে সেটাই ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং ব্যক্তি বা পারিবারিক ক্যারিশমায় প্রলুব্ধ না হয়ে আসুন না মুক্ত চিন্তার সামষ্টিকতায় আমরা আমাদের রাজনীতির ভবিষ্যত বিনির্মানে শপথবদ্ধ হই। নিজেদের অর্জনকে মুক্ত চিন্তার সামগ্রিকতায় বাংলাদেশী হওয়ার শপথে চোয়ালবদ্ধ হই। তবে পূর্ব পুরুষদের গৌরবান্বিত অর্জনকে খাটো করে নয়। বরঞ্চ তাদের দেখানো পথে আলোকরশ্মি জ্বালিয়েই হোক আমাদের নব যাত্রার নতুন সূর্যোদয়।
ভারত শেখ হাসিনাকে কি ধীরে ধীরে 'আনলক' করতে দিচ্ছে?
‘জয় বাংলা’ বলে বিএনপির মনোনয়ন হারালেন মাদারীপুর-১
নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন জোহরান মামদানি
শিক্ষক মোনামির ছবি বিকৃত মামলায় আসামি যারা
মনোনয়ন বঞ্চিতদের দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার আহ্বান তারেক রহমানের
উপদেষ্টা পেলেন নৌকা উপহার, কী করবেন পরামর্শ চাইলেন
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৭, আহত ১৫০
খুলনা সদর আসনে মঞ্জুকে সবুজ সংকেত তারেক রহমানের
সেরা ডাক্তাররা কর ফাঁকিতেও চ্যাম্পিয়ন
অবশেষে খুলনার নতুন কারাগার চালু আজ, থাকবে পুরানোটিও
বিচার বিলম্বের অপকৌশল
টক অব দ্য কান্ট্রি ‘প্রধান উপদেষ্টা পদে’ আসিফ নজরুল!
খুলনার মঞ্জুকে কেন্দ্রে ডাক, বদলে যেতে পারে হিসাব নিকাশ
ছাত্র-জনতাকে হত্যার জন্য ক্ষমা চাইবেন না শেখ হাসিনা
এক লাফে ১০ হাজার টাকা কমল সোনার দাম
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
প্রণব মুখার্জি আর নেই
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু



