চলো এগিয়ে... (বিশেষ পর্ব)
আবুল সরকার
প্রকাশ: ০৮:৩৩ পিএম, ১৭ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ০৮:৩০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
নব্বই দশকের শুরুতে হাতে গোনা কয়েকজন বাংগালী সন্তান এই প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ে অস্ট্রেলিয়ায় আবাসন শুরু করে।সিডনিতে তখন বাংলাদেশী নেহায়েত কম ছিলো। দুই হাজার বিশ সালে এই সংখ্যা কত হয়েছে তার হিসেব আমার সঠিক জানা নেই। তবে বৈশাখী মেলায় উপস্হিতি দেখে আন্দাজ করা যায় এই সংখ্যা এখন প্ন্চাশ হাজারের কাছাকাছি বৈ কম নয়।চারিদিকে বাংগালীদের মুখরিত পদচারনা।
একটা সময় ছিলো সামান্য একটা চাকুরী অথবা খাবারের দোকানের ব্যবসাতেই সন্তষ্ট ছিলো।
এখন আমাদের আছে চৌকশ প্রকৌশলী, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তার, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, চার্টাড একাউনটেন্ট আরো কত কি।
এই গেল বছর আমাদেরই এক বাংগালী ভাই অষ্ট্রেলিয়ার সর্বচ্চ পদকে ভুষিত হলেন।
এখন পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।সংগঠন।যেকোন আয়োজনে উপস্হিত হয় হাজারো বাংলাদেশী।
যে প্রয়াত সংগঠকের ড্রয়িং রুমে বসে বৈশাখী মেলার পরিকল্পনা করে বারউড হাইস্কুলে মেলার যাত্রা শুরু হয়। আজ অলিম্পিক পার্কের মতো ভেনুতেও স্হান সংকুলান হয় না।মেলায় আড্ডা দেয়। ফুসকা খায়।শাড়ী পড়ে।আয়োজন হয় ভাটিয়ালী, জাড়ি, মুর্শীদি গানের।
একসময় সেফটনে ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যাদের হিমশিম খেতে হয়েছিল, আজ তাঁরাই অনায়াসে গড়ে তুলেছে , অষ্ট্রেলিয়ান মুসলিম অয়েল ফেয়ার সেন্টার, রকডেল মসজিদ, কোয়েকার্স হিল মসজিদ।
গড়ে উঠেছে পাড়ায় মহল্লায় বাংলা স্কুল, ইসলামিক শিক্ষার কেন্দ্র। চেষ্টা চলছে বাংলা ভাষাকে মুল সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার। প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে শহীদ মিনার। আমার ভাইয়ের রক্তে রাংগানো...।
বৈশাখী মেলার আগে আমার মেয়েরা জিজ্ঞেস করে- বাবা মেলায় যাবা না?
হাজারো মুসল্লীদের ঢল নামে ঈদের মাঠে। কোলাকুলি।হাসি তামাশা। মিষ্টি খাওয়া।কে বলে বিদেশে মানুষ খুব যান্ত্রিক জীবন যাপন করে?
আমরা কমলা দিদি’র জয়ে আনন্দিত হই।মিষ্টি খাওয়াই যখন টিউলিপ, রুপা হক’রা জয়লাভ করে।আমাদের এখানেও এখন কাউন্সিলর আছে, নির্বাচন করে ফেডারেল ও রাজ্য সরকারে।
যে প্রয়াত নুরুল আজাদের হাতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল প্রিয় স্বদেশ বার্তা পত্রিকা। দুর থেকে দেখেছি- নুরুল আজাদ, চুন্নু,শাওন, কামাল ভাইদের কত হিমশিম খেতে হতো পত্রিকা প্রকাশে ।আজ সিডনিতেই প্রকাশিত হয় অনেক পত্রিকা। চালু হয়েছে রেডিও, টেলিভিশন সেন্টার।
আমাদের স্বপ্ন অবারিত। আমরা থেমে নেই।
আপনারা শুনে অবাক হবেন এই করোনার মধ্যেও কিছু দামাল বাংলাদেশী গড়ে তুলছে বাংলাদেশ কমিউনিটি হাব। দেখুনতো কি পাগলামি।দামালেরা বলছে এই বর্ধিস্নু কমিউনিটিতে আমাদের নিজস্ব কোন স্হাপনা নেই যেখানে আমরা মিলিত হতে পারি।খেতে পারি ফুসকা, চটপটি।আয়োজন করা যেতে পারে সভা, কবিতা বিকেল, নাটক।খেলা দেখবো একসাথে। তর্ক করবো। জিতবো, হারবো একই সাথে।পশ্চিমা জোয়ারের হাতছানি থেকে রক্ষা করবো আমাদের সন্তানদের।প্রতিষ্ঠা করবো পাঠাগাড়। পারিবারিক কলহ রোধে আয়োজন হবে সেমিনারের। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে বয়স্কদের প্রতি।থাকবে বৈবাহিক পরামর্শ কেন্দ্র, জাস্টিস অব পিস সার্ভিস। দেখুনতো কি সব পাগলামি।
দামালেরা আপনার সহযোগীতা, পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করছে।পথচেয়ে আছে আপনার পদশব্দ শুনে দরজা খোলার......
আবুল সরকার
১৫ নভেম্বর ২০২০
2 Erica Lane Minto