ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রনি এখন চা বিক্রেতা!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:১৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তার করা সেই প্রতিবাদে দেশের মানুষও সমর্থন দেয়। তিনি ঢাবি মেডিক্যাল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। এর মাধ্যমে ঢাবি ক্যাম্পাসে পরিচিতি মুখ হয়ে ওঠেন রনি।
এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রনি শুরু করেছেন চা বিক্রির। তবে এটি কোনো প্রতিবাদের অংশ নয়। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান, কী কারণে রনি হঠাৎ চা বিক্রেতা হলেন। মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘এটা কোনো সাময়িক সময়ের ক্যাম্পেইন বা নিছক মজার উদ্দেশ্যে নয়। আত্মশুদ্ধির আন্দোলন, ক্ষুধামান্দ্য দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সৎ উপায়ে উপার্জনের লক্ষ্যে ব্যবসাটা শুরু করেছি।’
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ নিয়ে মহিউদ্দিন রনি তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, গতকাল আমার ১০০০ কাপ চা বিক্রি হলো। এক্সপেরিমেন্টাল পিরিয়ড ছিল, তাই সেভাবে কাউকে জানানো হয়নি। গত ১ মাস যাবৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছি। চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে আইডিয়া বেচা ও কেনা যায়। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী চায়ের ব্যবসা বেজায় ভালো। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। তাদের জ্ঞাতার্থে, এটা কোনো সাময়িক সময়ের ক্যাম্পেইন বা নিছক মজার উদ্দেশ্যে নয়। আত্মশুদ্ধির আন্দোলন, ক্ষুধামান্দ্য দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সৎ উপায়ে উপার্জনের লক্ষ্যে ব্যবসাটা শুরু করেছি।’
রনি আরো লিখেছেন, স্পেশাল রং চা পাওয়া যায়। শুভেচ্ছামূল্য মাত্র ১০ টাকা। বিকেল ৩টা থেকে রাত অব্দি পাওয়া যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রোকেয়া হলের যাত্রীছাউনির বিপরীত পাশে ডাচের কর্নারে পাওয়া যাবে চা। শুভাকাঙ্ক্ষী, বন্ধু, প্রিয়জন, শত্রুভাবাপন্ন, দল-মত নির্বিশেষে, সকলকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। স্পেশাল রং চা পাওয়া যায়। শুভেচ্ছামূল্য মাত্র ১০ টাকা। চা খাবেন?
নেটিজেনরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থী, স্টাফ, টিচার অনেকেই নিজেকে লুকিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কিন্তু রনি সেই লুকোচুরির ভিত ভেঙে দুটি ফ্লাস্ক আর কিছু কাপ নিয়ে হাসিমুখে চা বিক্রি শুরু করেছেন।
মহিউদ্দিন রনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্ট্যাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরের জুলাই মাসে টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ঈদুল আজহার আগে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন তিনি। ১৯ দিন অবস্থান করার পর রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছয় দফা দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে যান রনি।
এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজা মেডিক্যাল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন এই শিক্ষার্থী।