ঝুঁকি মাথায় রেখেইে আগামীকাল খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা স্কুল-কলেজ খুলবে আগামীকাল রবিবার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
দেশে গতকাল শুক্রবারও সংক্রমণের হার ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। সব মহলের দাবি আমলে নিয়ে দেড় বছরের অধিক সময় বন্ধ লেখাপড়ার ক্ষতি আর দীর্ঘায়িত না করে ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন। বাস্তবতা বিবেচনায় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাসের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে হবে।
ক্লাস চালুর পরও প্রতিদিন করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে প্রশাসন। কোথাও সংক্রমণের নির্দিষ্ট সূচকে ঝুঁকি চিহ্নিত হলে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা বন্ধ করা, সংক্রমণের হার নিয়ে যে কোনো গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারিকৃত ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়া নির্দেশনার কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক। গতকাল বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ‘করণীয় এবং ‘বর্জনীয়’ কাজ সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারী সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কোনো বিষয়ে গুজবে কান দেওয়া যাবে না।
কয়েকদিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের কম। তবে সূচকের ঘর এখনো ৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ, বুধবার ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ, মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর আগের দিন ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মানদ- বিবেচনা নিলে সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক পরিম-লে কোলাহলের মধ্যেই থাকে। এ বিষয়টি বিবেচনা করে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন।
সর্বশেষ ঘোষণায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনা মহামারীর পুরোটা সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কোভিড ১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি আর দীর্ঘায়িত না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে তিনি সংসদেও কথা বলেন। এর পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউনিসেফও বিভিন্ন বিবৃতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানায়। দেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুল উদ্যোক্তারা, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।
এ পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গত ৩ সেপ্টেম্বর চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দিনক্ষণ ঠিক করেন বলেও জানার তিনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে আমাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং থাকবে। যাতে করে কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত না হয়।