পি কে হালদারের দখলে মুশতাকের সেই কুমির খামার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:১৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৪৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় দীর্ঘদিন কারাবন্দি অবস্থায় কারাগারে মারা যাওয়া মুশতাক আহমেদ ছিলেন দেশের প্রথম কুমির খামারের স্বপ্নদ্রষ্ট ও অন্যতম অংশীদার। মুশতাক আহমেদের সেই কুমির খামারের মালিক এখন সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালানো আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার।
২০০৪ সালের ২২ ডিসেম্বর দেশের ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে ময়মনসিংহের ভালুকায় দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমির খামার করেন মুশতাক। ভালুকা উপজেলা থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে হাতিবেড় গ্রামে ১৩ একর জমিতে এই রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড নামক এই খামারটি গড়ে তোলেন মুশতাক। আর তার সেই খামারটি দখলে নেন পি কে হালদার।
জানা যায়, ২০১৩ সালে রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) থাকার সময় পি কে হালদার কৌশলে কুমির খামারটি দখলে নেন। এ কাজে তাকে সাহায্য করে বেসরকারি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মেজবাহুল হক। যিনি সেসময় মুশতাকের ব্যবসায়িক অংশীদার ও খামারের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন।
খামারটি পি কে হালদারের হাতে তুলে দিয়েই দেশে ছেড়ে চলে যান মেজবাহুল হক। এর কিছুদিন পরে পি কে হালদারের চাপে পড়ে তার ধানমন্ডি ১ নম্বর রোডের ফ্ল্যাটে মুশতাক আহমেদ তার নামে থাকা খামারটির শেয়ার হস্তান্তরের দলিলে সই করে দেন।
২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুশতাক আহমেদ নিজের ফেসবুকে খামারটির মালিকানা বদল নিয়ে লিখেছিলেন, কুমিরের খামার এখন হায় হায় কোম্পানি। ২০১০ সালের ৩রা জুন ছিল বিশেষ দিন। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে কুমির রপ্তানি হবে। এর দুই মাস পর চেয়ারম্যান মেজবাহুল হক ঘোষণা দিলেন, কোম্পানি বিক্রি করে দেবেন, আমাকে একটা সাদা কাগজ দিয়ে বললেন সেখানে সাইন করতে। আমি বলে দিলাম সেটা সম্ভব না। শুরু হলোকোর্ট–কাচারি। এরপর প্রশান্ত কুমার হালদার এলেন সামনে। তিনি আমাকে যা বললেন, তাতে বুঝলাম, প্রশান্তের কথায় রাজি না হলে, আমার আম ও ছালা দুইটাই যাবে। একপর্যায়ে আমি আমার শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হলাম।
জানা যায়, রেপটাইলস ফার্মটি গঠনের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ প্রকল্পের ঋণ নিয়েছিলেন মুশতাক। এতে খামারটির ৪৯ শতাংশ মালিকানা পায় ইইএফ। বাকি ৫১ শতাংশের মধ্যে ৩৬ শতাংশ শেয়ার ছিল মেজবাহুল হকের এবং ১৫ শতাংশ শেয়ার ছিল মুশতাক আহমেদের।