অস্ট্রেলিয়াতে স্বাস্থ্যের আবজালের আরো ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৭ ডলার পাচারের তথ্য
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:২৮ পিএম, ১৮ অক্টোবর,রবিবার,২০২০ | আপডেট: ০৭:৩৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ শাখায় কাজ করে টাকার হিসাবটা ভালোই শিখেছেন আবজাল হোসেন। সামান্য বেতনে চাকরি করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারী। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পলাতক থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আবজাল। এর আগে তার অর্জিত অবৈধ সম্পদের ঘটনায় তোলপাড় হলেও এখন দুদকের রিমান্ডের পর আরো চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসছে। আবজালের দুর্নীতির সহযোগী তার স্ত্রী রুবিনা খানমকে সঙ্গী করে দু’জন মিলে বিশ্বের তিনটি দেশে অর্থ পাচার করেছেন। এ ছাড়াও দেশের বাইরে গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকার মতো তথ্যও বেরিয়ে এসেছে। দুদকের রিমান্ডে আবজাল এসব কথা স্বীকার করেন। দুদকের একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করে। আবজাল জিজ্ঞাসাবাদে জানান, অস্ট্রেলিয়ায় তিনি তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। দেশটিতে গাড়িও রয়েছে তার। তদন্ত সূত্রে জানা যায়, আবজাল মালয়েশিয়ার মাইব্যাংক ইসলামিক বারহাদ নামের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম হিসাবে ২০১৩ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ২৮শে জুলাই পর্যন্ত ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬৭০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জমা করেন। তার সহায়তায় স্ত্রী রুবিনা খানমের নামে মালয়েশিয়ার সিআইএমবি ব্যাংকের চারটি হিসাবে ২০১৩ সালের ২২শে মে থেকে ২০১৬ সালের ২৮শে জুলাই পর্যন্ত ২২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ রিঙ্গিত বাংলাদেশ থেকে জমা করা হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকার বেশি। অন্যদিকে আবজাল হোসেন কানাডার টরেন্টোর স্কার্বরায় দ্য টরেন্টো ডমিনিয়ন ব্যাংকে ২০১৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ২৯শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২২ লাখ ২৩ হাজার ৬৫৫.৫০ কানাডিয়ান ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার করেন। পরবর্তীতে তা কানাডা থেকে অস্ট্রেলিয়াতে পাচার করেন। অস্ট্রেলিয়া অ্যান্ড নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রুপ লিমিটেড নামের হিসাবের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ২৬শে জুলাই ওই অর্থের পাশাপাশি আরো ১ লাখ ৬০ হাজার কানাডিয়ান ডলার অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছেন বলে আবজালের বক্তব্য ও রেকর্ডপত্র থেকে জানা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার পাচার করা ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৫ কানাডিয়ান ডলার দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাড়িসহ অন্যান্য সম্পদ গড়েছেন আবজাল দম্পতি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় আড়াই কোটি টাকা।অস্ট্রেলিয়া তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সূত্র জানায়, আবজাল অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ওয়েস্টপ্যাক ব্যাংকিং করপোরেশনের দু’টি হিসাব, অস্ট্রেলিয়া অ্যান্ড নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রুপ লিমিটেডের একটি হিসাব এবং কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার তিনটি হিসাবে ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৭ অস্ট্রেলিয়ান ডলার পাচার করেছেন। এর মাধ্যমে সিডনির তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-আর-৫ ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, আর-৫ ইনভেস্টমেন্ট ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও মিমি ট্র্যাভেল ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড। বাংলাদেশি মুদ্রায় বিনিয়োগের পরিমাণ সাড়ে ৩৪ কোটি টাকার বেশি।আবজাল দম্পতির সম্পদের তথ্য নেয়া এখানেই শেষ হচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন দুদকের সচিব দিলোয়ার বখ্ত।