প্রেমিকার জন্য সহকর্মীকে 'জঙ্গি' বানালেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার খাজার ভাই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২০ পিএম, ৩ অক্টোবর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ১০:১০ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
তারা তিনজন একসঙ্গে কাজ করতেন নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে এক নারী সহকর্মী শাকিলা শহীদের প্রেমে পড়ে যান অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান উসমান খাজার ভাই আরসালান খাজা। কিন্তু তিনি মনে করতে থাকেন, তাদের দুজনের মাঝে আরও একজন আছে এবং তাকে সরাতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। সেই দুজনের মাঝে আসা সেই তৃতীয় ব্যক্তিকে জঙ্গি হিসেবে পুলিশে ধরিয়ে দেন আরসালান! সিনেমার গল্প মনে হলেও এই ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে।
অস্ট্রেলিয়ান সংবাদপত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালে এক ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী হামলায় আসামি হিসেবে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন আরসালান। শাকিলা এবং আরসালানের মাঝে থাকা সেই তৃতীয় ব্যক্তি হলেন শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভুত মোহাম্মদ কালের নিজামউদ্দিন। আরসালানের ধারণা ছিল, মামলায় ব্যস্ত থাকলে আর শাকিলাকে নিয়ে ভাবার সময় পাবেন না নিজাম। এই সুযোগে তিনি শাকিলাকে পটিয়ে ফেলবেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ওই সময় অন্য এক নারীর সঙ্গে জমজমাট প্রেম চলছিল নিজামের। সেই নারীকেই এখন বিয়ে করতে যাচ্ছেন নিজামউদ্দিন। শাকিলার বিষয়ে তার কোনো আগ্রহ ছিল না।
শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভুত মোহাম্মদ কালের নিজামউদ্দিন; কোনো অপরাধ না করেই যিনি 'জঙ্গি' অপবাদ পেয়েছেন। ছবি : ইন্টারনেট
২০১৮ সালে নিজামউদ্দিনকে একটা সন্ত্রাসী হামলার তদন্তে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ২৮ দিন সর্বোচ্চ নিরাপত্তার একটি কনডেম সেলে রাখা হয়েছিল। তার নামের পাশে লেখা হয়েছিল জঙ্গি শব্দটি। সেইসময় আইনজীবী ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে নিজামউদ্দিনের ৯০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ হয়েছিল। নিজামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার একটি নোটপ্যাডে জিহাদ, সন্ত্রাসী হামলা ও আইএসের হয়ে লোক সংগ্রহ ও শ্রীলঙ্কায় গিয়ে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণের কথা লেখা ছিল। কিন্তু পরে প্রমাণিত হয়, আরসালান সেই নোটবুক চুরি করে তাকে ফাঁসান এবং লেখাগুলোও নিজামউদ্দিনের নয়।
নিজামউদ্দিন পুলিশি ঝামেলা থেকে মুক্তি পান। কিন্তু ততদিনে তার জীবনটা কলুষিত হয়ে গেছে। তার ভাষায়, আরসালান খাজার জঘন্য ও ষড়যন্ত্র তার জীবনে আজীবন প্রভাব রাখবে। এদিকে আদালতে আজ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আরসালান। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে আরসালানের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, তাদের মক্কেল মানসিকভাবে অসুস্থ। কারণ মানসিকভাবে অসুস্থ না হলে কেউ এমন কাণ্ড করে না। নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় ১০ বছরের মতো জেল হতে পারে আরসালানের।