জালাল উদ্দিন আহমেদ
শেকড়
প্রকাশ: ০৩:০২ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ০১:২০ এএম, ২৬ অক্টোবর,রবিবার,২০২৫
যখন সমাজ রাষ্ট্রের কোন উঁচু পর্যায়ের বা সাধারন কোন আচার অনুষ্ঠানে যাই তখন ওইসব কোট-টাই পরা smart আদমদের সঙ্গেই তাল মিলিয়ে চলতে হয়। বর্তমানের সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষপটে এমনটাই জীবনের জন্য সবকিছু বলে মনে হয়। ভাবনা হয়, এটাই বোধ হয় আমার মানব জনমের সফল পদচারনা। চারপাশে যা দেখি, সেটাই তো উজ্জ্বল হয়ে ধরা দেয় সমাজ ও রাষ্ট্রের চার দেয়ালের ভিতর। সমাজ ও রাষ্ট্রের সফল পদচারনায় ওইসব কোট টাই স্মার্ট মার্কা বাবুরাই তো চারিদিকে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। তারা সামাজিক আবহে বড় বাড়ি বা ফ্লাটের মালিক কিংবা বিদেশী ব্রান্ডের গাড়ি হাঁকিয়ে যখন তার কর্মধারার ঔজ্জ্বল্যে সামনের সারিতে হাঁটেন তখন গ্রাম থেকে উঠে আসা অন্যরাও সেই পথে হেঁটে এগিয়ে যাওয়ার পথ খোঁজে। নিজেদের অস্তিত্বের এই ফালনামায় মাঝে মধ্যে দেখি সেই ওরাই আবার নীতি ও তাত্বিক বাক্য ব্যায়ে সমাজে মিশ্র আবহের সুত্রপাত ঘটায়। শত অপকর্ম ও শোরগোল করিয়েও যখন ওইসব দাপুটে মানুষগুলো সামাজিক অবস্থানের একটি উঁচু সিঁড়িতে নিজেদেরকে পোক্ত করেন তখন আমার মত আড়াই বিঘা জমির গেরহস্তের ছেলেরা কেন লেখাপড়া শিখে গাড়ি চাপা পড়তে চাইবে বলতে পারেন? " লেখাপড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে"র মন্ত্রগাঁথাকে উপড়ে ফেলে আজ কোট টাইয়ের দাদাগিরি সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। সেখানে নেই কোন আবহমান বুনিয়াদি শিক্ষার আলো ছড়ানো অনুপ্রেরনা ও তার ইতিহাসগাঁথা। আছে শুধু ছুটে চলা এবং কৃত্রিম দুনিয়াদারির অসম ইঁদুর দৌড়। এবং এভাবেই সমাজ ও রাষ্ট্রের পার্থিব কর্মধারায় মনুষ্য নামক আশরাফুল মোখলুকাত নিজেদের নয়ছয়ের ক্যারিশ্মায় সমাজ সংসারে নিজেদের অপরিহার্যতা উপস্থাপনে ঈর্ষনীয় অবস্থানে চলে আসছেন। কিন্তু এসব চাকচিক্যে ভরা জীবনাচারে যখন দেখি মানব জনমের ন্যুনতম উপাদান সেই আঙ্গিনায় বিদ্যমান নেই তখন অজানা এক আশংকায় মনটা হু হু করে উঠে। তারপরেও মনু্ষ্য প্রবৃত্তির এই কৃত্রিম উঠানে আমরা সেই অসম প্রতিযোগিতার মাঠে নিজেদেরকে সমর্পন করি। নিজেদের যোগ্যতা প্রমানের অযৌক্তিক প্রতিযোগিতায় নামিয়ে এনে সামাজিক অসম প্রতিযোগিতায় সামিল করি। ওই লেভেলের কোট টাই ওয়ালাদের মত নিজেকে গড়ে তোলার অনুশীলনে মনোযোগী হই। ফলে দুনিয়ার সাফল্যকে মানব জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন ভেবে এটাকে আঁকড়ে ধরে আমি হাজার মাইল দৌড়ানোর জন্য কোমর বেঁধে লেগে পড়ি। সত্য মিথ্যা সকিছুকে ছাইচাপা দিয়ে আমি আমার নশ্বর জীবনের সফলতার জন্য আকুল হয়ে পড়ি। সেক্ষেত্রে অগ্র-পশ্চাদ হিতাহিত সবকিছুকে বিসর্জন দিতেও আমার আপত্তি থাকেনা।
তারপরেও সনাজবদ্ধতার নিক্তিতে ধর্মীয় আচরনের শিষ্টাচারে যখন শেকড়ের খোঁজে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনায় বসি তখন মনটা অন্য রকম এক অজানা আশংকায় ছটপট করে। সেক্ষেত্রে এই উঠানে নিজেকে অপরিচিত এক বহিরাগত বলে মনে হয় যখন নিদেন পক্ষে জুম্মার এবাদতে মসজিদে সামিল হই। শ্বেত শুভ্র শশ্রুমন্ডিত আলেম মৌলভী বা মুরুব্বীরা তখন আমার কাছে অপরিচিত বলে মনে হয়। কিন্তু ঘন্টা দেড়েকের সময়কাল মসজিদে অবস্থানের বিনিময়ে আমি পাই এক স্নিগ্ধ সুবাস যার আলোকছটায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে মনের মনিকোঠায় উঁকি মারে। দ্বীন ও দুনিয়ার পার্থক্যে আমি তখন দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যাই। আশে পাশের মানুষগুলোকে তখন আমার সবচেয়ে বেশি আপনজন বলেই মনে হয়। মনে হয় এটাই তো আমার প্রকৃত জীবনাচার। সৃষ্টির রহস্যের জটজালে এই শ্বেতশুভ্র পোষাকী মানুষগুলো; ইমাম সাহেব মোয়াজ্জিন সাহেব এবং এবাদতরত মুসলিম ভাইয়েরাই তো আমার প্রকৃত আপনজন। দুনিয়ার সবকিছুর যোগ বিয়োগে এই পথ চলাই তো আমার আসল গন্তব্যের প্রকৃত দিশারী বলে মনে হয় তখন। মনে হয় নিজের ইচ্ছায় যখন আসিনি তখন দুনিয়া থেকে চলেও যেতে হবে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায়। সুতরাং কর্মময় ক্ষুদ্র জীবনের এই সামান্য কয়েকটি দিনের অবস্থানে কি করলাম আর কি করে গেলাম - এটার ফালনামাই হচ্ছে মানব জনম ও জীবনের যথার্থতার মুলকথা। দুনিয়া দারির মোহে আচ্ছন্ন হয়ে আমি আমার ও আমার পোষ্যদের চাহিদার সবকিছুই করে গেলাম এই নশ্বর ধরনীতে। রেখে গেলাম নয়ছয় করে উপার্জন করা সম্পদের পাহাড় প্রমান ঐশর্য। কিন্তু আমার সৃষ্টির রহস্যের বেঁধে দেয়া নির্ঘন্টের ন্যুনতম অর্জনটি নিয়ে যেতে পারলাম না আমার গন্তব্যের শেষ ঠিকানায়।
--- এই দুই ভাবনার অন্তরালে লুকিয়ে আছে মানব জীবনের সৃষ্টির প্রকৃত রহস্য। আর তা হচ্ছে - হক্কুল ইবাদ এবং হক্কুল্লাহ। এর বেশী কোন কাজ আমার জন্ম রহস্যের ঠিকুজিতে আছে কি? সুতরাং আর নয় দেরী। আসুন আমরা দুনিয়াদারির হক দুনিয়াতেই মিটিয়ে ফেলি। আর দ্বীনের হককে মজবুত করি আমার অপার্থিব জগতের অনন্ত স্থায়িত্বতের মানসে যার মুলকথাই হোল স্রষ্টার সন্তুষ্টি।
লেখকের আরও লেখা
বাবা হয়েছেন জেমস, জানালেন নতুন বিয়ের খবর
দ্বিচারিতা-২
তুমি না মরলে আমি মাহিরের হতে পারব না
পর্নোগ্রাফির সঙ্গে জড়িত আলোচিত বাংলাদেশি তারকা-যুগল গ্রেপ্তার
৪৩ বছর কারাভোগের পর নির্দোষ প্রমাণ, তবুও পাঠানো হচ্ছে নির্বাসনে!
দেশে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি কত?
স্পন্সর ভিসা নিয়ে বড় সুখবর দিলো ইতালি সরকার
‘প্রেমঘটিত’ কারণে জবি শিক্ষার্থী খুন, নারী শিক্ষার্থী আটক
চট্টগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন পণ্য নিয়ে জাহাজডুবি
ট্রাম্পকে খুশি রাখতে কূটনীতি ও প্রশংসায় পাকিস্তানের বাজিমাত
আলোচিত সেই ৫০০ ভরি স্বর্ণ চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৪
মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি শেখ হাসিনা: দ্য টেলিগ্রাফ
শিপিং ব্যয় বাড়ার প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ
যুক্তিতর্ক শেষ, শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
প্রণব মুখার্জি আর নেই
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু



