পার্সেলের নামে প্রতারণা করে কুলি থেকে কোটিপতি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০২:২৩ এএম, ২৮ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
গিফট ও পার্সেলের নামে প্রতারণা করছে দেশি-বিদেশি ব্যক্তিদের নিয়ে গড়া একটি চক্র। এ চক্রের মূল হোতা বিপ্লব লস্করসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বিদেশি গিফট ও পার্সেলের নামে প্রতারণা করত।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বিপ্লব কুলি ছিল। প্রতারণা করে সে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে। গ্রেপ্তার এড়াতে নিজের সঙ্গে এবং গাড়িতে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার রাখত বিপ্লব। রাজধানীতে তার একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট আছে।
বিপ্লবসহ গ্রেপ্তারকৃত অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল আইডি সংগ্রহ করে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে দামী উপহার, সোরা, মূল্যবান পাথর, হিরা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলে। এর পর প্রতারকরা নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ভুয়া পার্সেলের ছবি পাঠায়। প্রতারিত ব্যক্তিরা সরল বিশ্বাসে পার্সেল গ্রহণের অপেক্ষায় থাকেন। প্রতারক চক্রের কলিং বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি প্রতারকরা টেলিফোন করে নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে বলে, ‘কিং এক্সপ্রেস সার্ভিস থেকে একটি পার্সেল এসেছে, পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস হাউজ ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে।’ ভুক্তভোগীরা পার্সেল পাওয়ার আশায় কাস্টমস কর্মকর্তার দাবিকৃত টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দানকারী ব্যক্তি আবারো ফোন করে জানায়, বিদেশি বন্ধুর পাঠানো পার্সলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ডলার আছে। তা ছাড়াতে আরও বেশি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে প্রতারিত ব্যক্তির নামে মানিলন্ডারিং আইন ও অন্যান্য আইনে মামলা হবে বলে হুমকি দেয়। এভাবেই তারা বিভিন্ন মানুষের কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।
ডিবি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিপ্লবের সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান, মহসিন হোসেন ওরফে শাওন, ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল, নাজমুল হক রনি ও নুসরাত জাহান। এছাড়া, নাইজেরিয়ার নাগরিক চিডি, ইমানুয়েল, জন, অ্যাঙ্গোলার নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ, ক্যামেরুনের নাগরিক গু লগ্নি পাপিনিক বিপ্লবের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। এর আগেও তারা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়। জামিনে বের হয়ে পুনরায় প্রতারণায় জড়িয়ে পড়ে।