লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন, গ্রাহকেরা ক্ষুব্ধ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ আগস্ট,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৩৪ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রোদের তীব্রতা সাথে রয়েছে গরম, চলছে লোডশেডিং। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কুমিল্লা তিতাস উপজেলার বাসিন্দাদের জনজীবন। প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে দিনরাতে ১৪-১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না বলে অভিযোগ করেছে গ্রাহকরা। এতে বিঘ্ন হচ্ছে দাপ্তরিক কাজসহ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা।
এ পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়াও এ সুযোগে অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছে ইলেকট্রিক চার্জার লাইট ও ফ্যানসহ আইপিএসের দাম।
খোজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ-৩ এর আওতায় ৬টি উপজেলার মধ্যে এক মাত্র তিতাস উপজেলায় তুলনামূলকভাবে লোডশেডিং বেশী হচ্ছে। সরকার ঘোষিত সিডিউল মাফিক লোডশেডিং না দিয়ে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাধারণ মানুষ। এসময় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লোডশেডিং দেয়ার দাবীও জানান তারা।
উপজেলার নয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মো.শাজাহান মিয়া (৬০) বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই কিন্তু পাশ্ববর্তী উপজেলার তুলনায় আমাদের তিতাসে অতিরিক্ত লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে আমি মনে করি।
জগতপুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্ততা মো.শরিফ আহমেদ সুমন বলেন, তিতাসে সরকার ঘোষিত লোডশেডিং সময়ের চেয়ে কয়েকগুন বেশি সময় লোডশেডিং হচ্ছে। এতে করে নাগরিক সেবা নিতে আসা গ্রাহকগণকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের ভূমি সেবা হচ্ছে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ। আর ডিজিটালাইজ এর কারনে আমাদের সবকিছু বিদ্যুৎ নির্ভর হওয়ায় অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারনে সেবা গ্রহীতাদের সময়তো সেবা দিতে পারছি না। এতে সেবা গ্রহীতাদের সাথে সবসময় বাকবিতন্ডায় লেগেই থাকে।
এদিকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা জানিয়েছেন। তারা জানান, সন্ধ্যার পর থেকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে পড়াশোনা মারাত্বক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গরমের সাথে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারনে পরীক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারছে না। এ কারনে তাদের কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হবে না কিনা তা নিয়ে সংঙ্কায় অভিভাবকরা।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ তিতাস উপজেলার সাব-জোনাল অফিসের এজিএম গোলজার হোসেন বলেন, তিতাসে বিদ্যুতের চাহিদা সাড় ৭ থেকে ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু আমাকে দিচ্ছে ২ থেকে ৩ মেগাওয়াট, এই বিদ্যুৎ আমি ৩টি ফিডারের মাধ্যমে ৭৯ টি গ্রামে সরবরাহ করতে হচ্ছে। একটি ফিডার চালু করলে দুটি ফিডার বন্ধ রাখতে হয়, একারনে লোডশেডিং একটু বেশী হচ্ছে।
এছাড়াও তিনি আরো বলেন, ডিজেল চালিত পাওয়ার স্টেশনে জেনারশন আবাদত স্থগিত রয়েছে বিদায় বর্তমানে পাওয়ার জেনারেশন ১৪ হাজার থেকে ১৫ মেগওয়াটে নেমে এসেছে, ফলে বর্তমানে চাহিদার তুলনায় ২ হাজার মেগওয়াট জেনারেশন কম হচ্ছে। মুলত এ ২ হাজার মেগওয়াটই এখন বাংলাদেশের সমগ্র এলাকায় প্রতিটি উপজেলায় ফিডার ভিত্তিক সর্বোচ্চ ডিমান্ড এর সাথে বরাদ্দকৃত লোডের সংঙ্গীত রেখে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে এবং তারই ন্যায় তিতাস উপজেলাতে লোডশেডিং হচ্ছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ডিজিএম সানোয়ার হোসেন বলেন, তিতাসে আরও একটি ফিডার স্থাপন করা হবে, ইতি মধ্যে ডিজাইন সম্পূর্ণ করা হয়েছে, আশা করি নভেম্বর মাসে নতুন ফিডারটি স্থাপন করলে লোডশেডিং কমে আসবে।