avertisements 2

প্রতিদিন সাড়ে তিনশ লিটার গরুর দুধের চা বিক্রি হয় ‘চা মহলে’

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুলাই, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৪২ এএম, ২৮ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

চা মহল। নামেই পরিচয়। তবে এই নামের আরেকটি কারণ আছে। চা মহলে তৈরি হয় গরুর দুধের চা। সেই দুধ চায়ের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে আশেপাশের অঞ্চলে। পাঠককে এই ফাঁকে জানিয়ে রাখি, প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিনশ লিটার গরুর দুধের চা বিক্রি হয় চা মহলে। দয়া করে এই তথ্য পড়ে চোখ কপালে উঠাবেন না। চা মহলে রয়েছে মোট ১৩ জন চা বিক্রেতা। এদের মধ্যে কেউ পাঁচশ, কেউ আটশ কাপ চা প্রতিদিন বিক্রি করেন।

একদিকে বড় পাতিলে সারাদিন দুধ গরম হতে থাকে, অন্যদিকে চা বিক্রি করতে থাকেন দোকানিরা। দলে দলে আসতে থাকে চায়ের গ্রাহক। ‘গরুর দুধের চা না খেলে দিন কাটতে চায় না’, ‘চা মহলে প্রতিদিন আড্ডা না দিলে ভাত হজম হয় না’ এমন কথাও বলেন অনেকে। অর্থাৎ এই জায়গাটি ঘিরে ব্যক্তিগত আড্ডা, রাজনৈতিক আলাপ, ব্যক্তিগত বা কখনো পারিবারিক বিরোধ-নিষ্পত্তি অথবা শুধুই খোশগল্প জমে ওঠে নিত্যদিন।

শ্রীপুর রেলগেটের দক্ষিণপাশে উন্মুক্ত জায়গায় রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানেই পৌরসভার মুক্তমঞ্চ। প্রায় এক যুগ আগে জায়গাটিতে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ধানের হাট বসত। অন্যান্য দিন মৌসুমী ফল বিক্রি হতো। আর হতো এলাকার কৃষকদের গরুর দুধ বিক্রি। এমন একটা জায়গায় চায়ের দোকান থাকবে না তাই হয়? ফলে তখন থেকেই এখানে গরুর দুধের চা বিক্রি শুরু।

দুলাল মিয়া এক যুগেরও বেশি সময় চা মহলে চা বিক্রি করেন। প্রথম দিকে দুধ ছাড়া প্রতি কাপ চা তিন টাকা বিক্রি করতেন। বর্তমানে দুধের মূল্য বাড়ায় প্রতি কাপ চা ১০ টাকায় বিক্রি করেন। প্রতিদিন দুধের স্বর বিক্রি করেন ৮ গ্লাস। পারভেজ ও এনামুল দুই ভাই চা মহলে চায়ের স্টল দিয়েছেন। এনামুল জানান, বড় পাতিলে প্রতিদিন ৩৫ লিটার দুধ গরম করে চা বিক্রি করেন। এর মধ্যে ১৮ গ্লাস দুধের স্বর বা মালাই বিক্রি করেন তিনি। শিল্পাঞ্চল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দার বসবাস শ্রীপুরে। এ কারণে নানা শ্রেণি পেশার লোকজন এখানে চা পান করতে আসেন। গড়ে প্রতি দোকানে পাঁচশ কাপ চা বিক্রি হওয়া স্বাভাবিক বলে দাবি করেন তিনি।

অপর চা স্টলের মালিক সেলিম মিয়া। তিনি জানান, মুক্তমঞ্চে কোনো সভার আয়োজন হলে সমস্যা হয়। কারণ তখন একদিন আগে থেকেই সামিয়ানা সরিয়ে নিতে হয়। তখন স্টল দেওয়া যায় না। তিনি আরো জানান, ময়মনসিংহ, জামালপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী ট্রেন যাত্রীদের একটি অংশের কাছে চা মহলের গরুর দুধের চায়ের কদর রয়েছে।চা মহলে নিয়মিত চা পান করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী। তিনি জানান, শ্রীপুর বাজারে গরুর দুধের চা বিক্রির ঐতিহ্য আগে থেকেই ছিল। বড় পাতিলে সারাদিন দুধ গরম করার পর বিকেলে চায়ের স্বাদ ভিন্ন হয়। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চা বিক্রি হয়।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2