avertisements 2

শীত এসেছে, কিন্তু ঠাণ্ডা লাগছে না কেন?

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৪:৩৫ এএম, ৪ মে,শনিবার,২০২৪

Text

আজ থেকে ১৫-১৭ বছর আগে টানা তিন-চারদিনও ঝির ঝির বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতো দেখা যেতো। তাই ঘরেই কাটত সারাদিন। ঘরের মেঝেতে মানুষ আগুন ধরিয়ে শরীর গরম করতো। কিন্তুে এখন আর তেমন দেখা যায় না । সন্ধ্যায় লেপ, কাঁথা বা কম্বল নিয়ে বাড়ির প্রায় সকলে ড্রইং কাম টিভি রুমে হাজির হয়ে যেত। রাতে ঘুমানোর সময় মশারির ওপর ভারি কাপড় মেলে দেওয়া হতো ঠাণ্ডা কমানোর জন্য।

সে সময়ে শীতকাল তীব্র যেমন ছিল, দীর্ঘও ছিল। যেদিন রোদ উঠত, সেদিন বাড়ির সব লেপ-কাঁথা ঘরের চালের ওপর মেলে দেওয়া হতো, চালে বসে রোদ পোহাত। তবে, ডিসেম্বর শেষ হতে চলছে এখন শীতের প্রকোপ নেই। আগে জেনে নিই কয়েক বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার হিসাব

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, 'আশির দশক থেকেই মূলত প্রকৃতিকে আমরা তার স্বাভাবিক অবস্থায় পাচ্ছি না। ২০১৮ সালেও তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছিল। অথচ ১৯৮১ সালের পর কিন্তু গড় তাপমাত্রা কোনো বছরই ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। তার সঙ্গে এ বছর যুক্ত হয়েছে এল নিনো বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় গরম স্রোত। এর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমারের মতো দেশগুলোয় বৃষ্টির পরিমাণ কমে যায়, সেই সঙ্গে দক্ষিণ দিকের বাতাস বয়ে আনে জলীয় বাষ্প, ফলে শীত অনুভূত হয় কম।'

প্রকৃতিতে উষ্ণতা বেশি টের পাওয়া যাচ্ছে চলতি শতকের শুরু থেকে। আবহাওয়াবিদরা বিষয়টির ব্যাখ্যা করে বললেন, '২০০০ সালের পর অন্তত আটটি উষ্ণ বছর পেয়েছি আমরা। এর মধ্যে ২০১৪ সাল ছিল বেশি উষ্ণ। এবারের শীত শুরু হওয়ার আগেই আমরা একে ওয়ার্ম উইন্টার আখ্যা দিয়েছিলাম। সেটি ওই এল নিনোর প্রভাব পর্যালোচনা করেই।

শীতের তীব্রতা হিসাব করা হয় রাতের তাপমাত্রা ধরে। সূর্যের আলো ফুরিয়ে এলে রাতের পরিবেশ শীতল হতে থাকে। কিন্তু আকাশ মেঘলা থাকলে বাতাসে ছড়ানো তাপ উর্ধ্বাকাশে উঠে যেতে পারে না। তাই রাতে গরম অনুভূত হয়।

ঢাকার তাপমাত্রা উষ্ণ হওয়ার জন্য মানবসৃষ্ট কিছু কারণ। যেমন- ময়লা নিষ্কাশনে অব্যবস্থাপনা। প্রচুর ময়লা এদিক-সেদিক ছড়ানো থাকে। বেশিদিন জমে থাকলে তা থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়, যা তাপ ধরে রাখে। ঢাকায় গাছ-পালা ও জলাশয় বিপজ্জনক মাত্রায় কমে গেছে, যা গরম বাড়াচ্ছে। ঢাকার বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, গাড়ির এয়ার কন্ডিশন ব্যাপক হারে গরম ছড়াচ্ছে পরিবেশে এবং রাতের বেলায় ডিজেল চালিত ট্রাকগুলো শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

ঢাকার মধ্যে এবং চারপাশ ঘিরে শিল্প এলাকা গড়ে উঠেছে যেগুলো কার্বন, ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বন নিঃসরণ ঘটাচ্ছে। একই ভূমিকা রাখছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যার তীর ধরে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোও। বিশ্বের সকল প্রান্তেই আবহাওয়া মর্জি বদলে যাচ্ছে। আমরাও সেই অবস্থার শিকার। দেশে শীত আছে, কিন্তু শীত নেই।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2