‘মেয়র তাপস ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:২৩ পিএম, ১৯ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৪৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সম্পর্কে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের ‘মিথ্যা ও কটূক্তিপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদে গত শনিবার (১৬ জানুয়ারি) ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে প্রতিবাদ সভা ও বি’ক্ষোভ করে ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগ। ওই সভায় সাঈদ খোকন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এক নেতার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে দলের অ’ভ্যন্তরে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে নিউমার্কেট থানার মিরপুর রোড ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসান লিটন বলেন, ‘তাপস ভাই শুধু আওয়ামী লীগের নেতা নন। তিনি এই এলাকার (ধানমন্ডি) দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনসাধারণের নেতা। তাপস ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ তাপস ভাইকে নিয়ে ভাবে। তাই আমরা কোনো ব্যক্তির হয়ে নয়, একজন সৎ ও চরিত্রবান মানুষের পক্ষে কথা বলছি।’ আবুল হাসান লিটন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন তার এক হাতে সাঈদ খোকনের বিকৃত ছবি সংবলিত ফেস্টুন ছিল।
এই ফেস্টুনে ‘ডেঙ্গু খোকন’ লেখার ওপর জুতার মালা ঝুলানো ছিল। এমন ফেস্টুনের দিকে ইঙ্গিত করে আবুল হাসান বলেন, ‘সাঈদ খোকন একজন সৎ মানুষের (তাপস) বি’পক্ষে কথা বলেছেন।
তাই আজ তার বিরুদ্ধে ঝা’ড়ু এবং জুতা মিছিল করা হচ্ছে। এই মিছিল তার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর রোড ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসান লিটন সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বলেন,
‘মেয়র তাপস শেখ পরিবারের সদস্য। শেখ পরিবারের হাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব থাকবে সারা জীবন।এটা শতভাগ সত্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরে এই পরিবারের কেউ না কেউ প্রধানমন্ত্রী হবেন। তাপস সাহেব তো শেখ পরিবারেরই একজন। আমরা তো তাপসকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আশা করতেই পারি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিলে ভদ্র লোকের তালিকায় এক নম্বরে শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি নেতাকর্মীদের সব সময় আগলে রাখেন। তাই আমরা তাকে নিয়ে ভাবতেই পারি।’
গত ১৫ জানুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিকদের আহ্বান করেছিলেন ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক গোলাম রাব্বানী হিরু। তিনি বলেন, ‘এই সভায় আবুল হাসান লিটন নির্ধারিত বক্তা ছিলেন না। সে বিচ্ছিন্নভাবে এক সাংবাদিককে বক্তব্য দিয়েছেন। ভিডিওটা দেখেছি। এমন বক্তব্য বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।’
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন নিউমার্কেট থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আবুল হাসান লিটনের এই বক্তব্য এক ধরনের বেয়াদবি। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, সাঈদ খোকনের বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত ওই সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামালসহ ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট, হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া ধানমন্ডি থানা মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরাও সভায় অংশগ্রহণ করেন। তারা ডিএসসিসি মেয়র শেখ তাপসের অনুসারী। এই এলাকার সাংসদ ছিলেন শেখ ফজলে নূর তাপস।
গত ৯ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর কদম ফোয়ারার সামনে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ পরিচালিত উ”চ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্র’স্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এই মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছিলেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন।
এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি লাভ করেছেন এবং করছেন। অপরদিকে অর্থের অভাবে করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না।
সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, দ্বিতীয় ভাগের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দু’র্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন। আমি তাকে বলবো রাঘব বোয়ালের মুখে চুনোপুটির গল্প মানায় না। দু’র্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দু’র্নীতিমুক্ত করুণ। তারপর চুনোপুটির দিকে দৃষ্টি দিন।