মোঃ শফিকুল আলম
আইনের শাসন এবং অবাধ গনতন্ত্র আপনারা ক্ষমতায় না থাকলেও আপনাদেরকে ভবিষ্যতে সুরক্ষা দিবে
প্রকাশ: ০২:২৪ পিএম, ৭ অক্টোবর, বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০৪:২৮ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
আওয়ামীলীগ নেতৃত্ব এবং পুলিশ প্রশাসন এখন এক এবং অবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পার্থক্য করে দেখার মতো দৃশ্যত: কোনো separate Characteristics নেই। ক্ষমতার অপব্যবহার সবচাইতে বড় দুর্নীতি।
অসৎ এবং লোভী চরিত্রের আওয়ামীলীগ নেতৃত্বকে ব্যবহার করে পুলিশের দুর্নীতি এবং স্বেচ্চাচারিতা কোনো কোনো জায়গায় তৃনমূলে গ্রথিত হয়েছে।
পুলিশের চৌকষ বি সি এস অফিসার স্থানীয় অসৎ এবং অযোগ্য নেতৃত্বকে সহজেই প্রভাবিত করতে পারছে। কোনো কোনো পুলিশ অফিসার ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের সদস্য থাকার কারনে এখন সংশ্লিষ্ট এলাকায় আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেছে। সৎ ছাত্রনেতৃত্বের সৎ পরামর্শ গ্রহন তাদের জন্য আবশ্যক নয় ; বরং আকারে এবং ইঙ্গিতে অথবা প্রকাশ্যে অথবা তাদের সামনে এম পি বা মন্ত্রীকে ফোন করে indirectly তাদের ক্ষমতার সীমা বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
তাদের কর্ম-কান্ড বি এন পি সরকারের সময়ের পুলিশ অফিসার কহিনুরের কীর্তিকলাপ স্মরন করিয়ে দেয়।
সৎ নেতৃত্বের অসম্মান সাহসী নেতৃত্ব জন্ম দেয় না। স্থানীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু কিভাবে নেতৃত্ব প্রতিস্ঠা করতেন তার অনেক গল্প শুনেছি জনাবা বেগম সাজেদা চৌধুরী এবং জনাব মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু ভাই’র কাছে।
তৎকালীন ক্ষমতসীন আওয়ামীলীগের মহানগরের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক ছিলেন যথাক্রমে জনাব গাজী গোলাম মোস্তফা এবং পল্টু ভাই। তখন ক্রীড়া প্রতি মন্ত্রী ছিলেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী।
কোলকাতা থেকে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ঢাকায় খেলতে এসে টীম মেম্বাররা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে প্রধান মন্ত্রীর সাথে দেখা করার বায়না ধরলো।
ইউসুফ আলী সাহেব একটি সাধারন ফুটবল টীমকে সময় দেয়ার কথা বঙ্গবন্ধুকে বলার সাহস পেলেন না। তিনি বললেন , " পল্টু কাজটি তোমাকে করতে হবে। আমার সাহস হচ্ছেনা।"
পল্টু ভাই যখন প্রস্তাবটি উত্থাপন করলেন ; বঙ্গবন্ধু রেগে গিয়ে বললেন , " একটা ফুটবল টীমের সাথে আমাকে দেখা করতে হবে কেনো ? Sports minister কি করছে?" রাজনৈতিক আলোচনা শেষে অনেক রাতে বঙ্গবন্ধুর সাথে ডিনার শেষে ( বঙ্গবন্ধু না খেয়ে আসতে দিতেন না) ফিরছিলেন। বঙ্গবন্ধু বললেন , " পল্টু ওদেরকে কাল সকাল ১১টায় টাইম দাও ।" পল্টু ভাই বললেন , আপনি তো না করলেন।"
বঙ্গবন্ধু বললেন , " না করে দিলে তো তোর leadership থাকেনা পল্টু।"
কর্মীরাও যে কোনো না কোনো ইউনিটের নেতা সে কথা বোঝার আর কেউ নেই। স্কুল, কলেজ থেকে তৈরী হওয়া ছাত্রলীগ নেতৃত্ব এক যুগ থেকে শুরু করে আরও দীর্ঘ সময় ধরে কোনো নেতৃত্বের আসনে নেই। পরিবর্তে নেতৃত্বে চলে যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত অযোগ্য এবং জুনিয়রদের কাছে। বাধ্য হয়ে সিনিয়র এবং যোগ্য নেতৃত্ব নিজেকে সম্মান বাঁচাতে লুকিয়ে রাখছেন। ছাত্রলীগের বহু সভাপতি/সাধারন সম্পাদক যুগাধিককাল অপেক্ষা করেও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে পারেননি। একই এলাকায় এই সমস্ত নেতাদের এক সময়ের কর্মীরা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসীন। কেউ আবার মন্ত্রী বা এমপি। দীর্ঘ সময়ে রাজপথে তৈরী হওয়া নেতৃত্ব দলের নীতিনির্ধারকগন ধ্বংস করে দিয়ে সংগঠনের সব পর্যায়ে ধর্ষকের পৃষ্ঠপোষক নেতৃত্ব তৈরী করছেন।
নিজ দলে তৈরী হওয়া সৎ, যোগ্য এবং পরীক্ষিতদের নেতৃত্ব না দিয়ে অর্থের বিনিময়ে যেসমস্ত ব্যবসায়ীদের দলের নেতৃত্বে বসানো হচ্ছে বা স্বাধীনতার স্বপক্ষের আওয়ামীলীগ যখন স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে এমপি/মন্ত্রী বানাচ্ছেন তখন সংগত কারনে দলের অরিজিনাল নেতা-কর্মীরা তাদেরকে নেতা মানছেননা। এরা তখন ধারাবাহিকভাবে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে যাচ্ছেন। চোর, বাটপার, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ এবং ধর্ষকে পরিপূর্ণ এখন আওয়ামীলীগ। একেকটা দুর্নীতিবাজ/ধর্ষকের মুখ উন্মোচিত হচ্ছে এবং তখন দলের নেতারা অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করছেন। ওরাতো এখন আর অনুপ্রবেশকারী নয়; অনুপ্রবেশকারীতো অসহায় ছাত্রলীগ/আওয়ামীলীগের অরিজিনাল নেতা-কর্মীরা।
চারিদিকে শ্লোগান তীব্রতর হচ্ছে - নারীর ক্ষমতায়ন চাইনা, নারীর নিরাপত্তা দিন। আওয়ামী সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদের নিষ্ঠুরতা থেকে সাধারন মানুষ নিষ্কৃতি চায়; উন্নয়ন চায়না। দিনের নির্বাচন দিনে করুন। যার ভোট তাকে দেয়ার সুযোগ করে দিন বুঝতে পারবেন আপনাদের উন্নয়নে কতো শতাংশ মানুষ খুশি রয়েছেন। যুগে যুগে দুর্নীতি হয়েছে, ধর্ষন হয়েছে। কিন্তু সকল বিবেকবান মানুষ বলবেন আওয়ামী আমলের মতো এতো সংখ্যক ধর্ষন হয়নি, এতো হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি এতো সংখ্যক মানুষ করেনি। সাধারন একজন ড্রাইভার বা কেরানী শ’ কোটির টাকার দুর্নীতি করতে পারে একথা কেউ কখনো কল্পনায় আনতে পারেনি।
ক্ষমতায় গিয়ে লুটেরা এবং ধর্ষকদের দিয়ে সংগঠন পরিচালনা করলে দুর্নীতি আর ধর্ষনের ইতিহাস তৈরী করতে পারবেন। সামনে হয়তো এমন দিন অপেক্ষা করছে যে কোনো বিবেকবান মানুষ কখনো আওয়ামীলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলতে লজ্জিত হবেন। এখনও সময় আছে আওয়ামীলীগ দিয়ে আওয়ামীলী পরিচালনা করুন। দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করুন। অবাধ গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। আইনের শাসন এবং গনতন্ত্র আপনারা ক্ষমতায় না থাকলেও ভবিষ্যতে আপনাদেরকে সুরক্ষা দিবে।