avertisements 2
Text

রাশেদুল ইসলাম

ইসলামের মৌলিক বিষয় (দুই)

প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:১৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

মহানবী হযরত মোহাম্মদ  (সঃ)  নবুয়ত প্রাপ্তির পর শুধু  আরব নয়, গোটা পৃথিবীর জন্য  যা করেন, তা সবই  পবিত্র কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী করেন ।  তবে  প্রথমে তাঁর নবুয়ত প্রাপ্তির  প্রেক্ষাপট আলোচনা করা বোধহয়  সমীচীন হবে  । 
আগেই বলা হয়েছে,  নবী করিম (সঃ) আরবের এক অন্ধকার যুগে জন্মগ্রহন করেন । শিশুরা সাধারণত বাবা মাকে অনুকরণ বা অনুসরণ করে থাকে । কিন্তু শিশু মোহাম্মদ ছিলেন ব্যতিক্রম । তিনি তাঁর জন্মের পর থেকে নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত কাউকে অনুকরণ বা অনুসরণ করেন নি । প্রতিটা ক্ষেত্রে তিনি তাঁর নিজের সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করেছেন । এর প্রধান কারণ বোধহয়  তিনি এতিম ছিলেন বলেই এমনটি হয়েছে । অথবা মহান আল্লাহর ইশারা এমনই ছিল । তিনি জন্মের আগেই তাঁর বাবা আবদুল্লাহ মারা যান । তাঁর বয়স যখন ৫/৬ বছর তখন তাঁর মা আমিনা মারা যান । তিনি তাঁর নিজের মায়ের কোলে চড়ে বড় হওয়ার সুযোগ পাননি । কারণ সে সময়  ভৌগলিক অবস্থানের কারণে মক্কার মায়েদের বুকে দুধ থাকত না । এ কারণে মক্কায় জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য দুধমা ভাড়া করা হত । মরুভুমি ও পাহাড়ে বসবাসকারি দরিদ্র যাযাবর শ্রেণির মায়েরা দুধ মা হিসেবে কাজ করতেন । শিশু মোহাম্মদ (সঃ)কেও  বিবি হালিমা নামক একজন বেদুঈন মাকে  তাঁর লালন পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয় ।  মা হালিমার কোলে  শিশু মোহাম্মদ একটি বেদুঈন যাযাবর পরিবারে  বড় হন । 

তিনি খুব কম কথা বলতেন । যা দুএকটা বলতেন বড়দের মত বলতেন ।  তাঁর আচরণ শিশুসুলভ না হওয়ার কারণে মা হালিমা তাঁকে নিয়ে খুব ভয়ে ছিলেন । তার ভয়ের আর একটি  কারণ  ছিল অনেক অচেনা মানুষ শিশুটিকে দেখতে আসত । তিনি জানতেন শিশুটির দাদা আবদুল মুত্তালিব কাবাঘরের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক । যার চোখের ইশারায় নিমিষেই যে কোন মানুষের মাথা দ্বিখণ্ডিত হতে পারে । তাঁর ভয় ছিল শিশুটির কোন ক্ষতি হলে, তাঁর পরিবারের সমুহ ক্ষতি হবে । এ কারণে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই শিশু মোহাম্মদ (সঃ)কে তাঁর মায়ের কাছে ফেরত দিতে যান তিনি । কিন্তু যাবার পথে মক্কার উপকণ্ঠে একটি মেলায় তিনি শিশুটিকে  হারিয়ে ফেলেন । 

শিশু মোহাম্মদ (সঃ) এঁর হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা,  তিনি যে শিশুকাল থেকে নিজের সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করেছেন,  তার একটি যৌক্তিক উদাহরণ । মা হালিমা শিশুটিকে হারিয়ে অসহায় ও ভীতু হয়ে পড়েন । তিনি সাথে সাথে দাদা আব্দুল মত্তালিব এঁর কাছে ছুটে গিয়ে বিনীতভাবে সবকিছু বলেন । ওদিকে শিশু মোহাম্মদ (সঃ) যখন বুঝতে পারেন তিনি হারিয়ে গেছেন, তখন কান্নাকাটি না করে,  তিনি  ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে একটি কূপের  কাছে গিয়ে দাঁড়ান । মরুভুমির দেশে পানির কূপ  অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ  ।  লোকজন কূপের কাছে আসবেই । ঠিকই সেখানে যারা আসেন, তাঁরা তাঁর পরিচয় জানতে চান । তিনি স্পষ্ট উচ্চারণে জানান, তাঁর নাম  মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ । তাঁর দাদার নাম আবদুল মুত্তালিব। (সূত্রঃ সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সঃ)। শিশুটি জানতেন তাঁর দাদা অনেক প্রভাবশালী  লোক ।   
মা আমিনার মৃত্যুর পর শিশু মোহাম্মদ (সঃ) এঁর অভিভাবক হন তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব ।  তখন তাঁর বয়স ৬ বছর । আবদুল মুত্তালিব কাবাঘরের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন । পদাধিকার বলে তিনি প্রধান বিচারক । আবদুল মুত্তালিব মক্কার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন । কাবা চত্বরে তাঁর জন্য একটি চাদর বিছানো থাকত । বিচারের জন্য তিনি শিশু মোহাম্মদকে নিয়ে সেই চাদরের উপর বসতেন । শিশু মোহাম্মদের তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ছিল । তিনি লক্ষ্য করেন,  মক্কার যত অপরাধমূলক  কর্মকাণ্ড সবই বিভিন্ন দেবতা মূর্তিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয় । একটি দেবতা মূর্তির নামে শপথ নিয়ে একজন আরেকজনকে হত্যা করে । আর যাকে হত্যা করা হয়,  তার পরিবার থেকে আর এক   দেবতার নামে শপথ নিয়ে,  অন্য  একজনকে প্রতিশোধমূলক হত্যা করে । মানুষের তৈরি এসব দেবতার নিজের কোন ক্ষমতা নেই, কিন্তু সব ধরণের নৈরাজ্য সৃষ্টির মূলে কাজ করে তারা । দাদার বিচারের পাটিতে বসে শিশু মোহাম্মদের মনে দেবতা মূর্তির প্রতি একবুক ঘৃণা  জন্ম নেয়, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে বাহিরা নামক একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজকের কাছে । তিনি কিশোর মোহাম্মদ (সঃ) এঁর কাছে কাবাঘরের দেবতাদের নামে কসম দিয়ে তাঁর কাছে কিছু জানতে চাইলে, তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, দেবতাদের নামে কসম দিলে তিনি একটা কথাও বলেবেন না । কারণ, তিনি দেবতাদের ঘৃণা করেন (সূত্রঃ সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সঃ)।

হযরত মোহাম্মদ (সঃ) তাঁর তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়ে তৎকালীন আরবের মানুষের মূল সমস্যা অনুধাবন করেন । কিন্তু এসবের সুষ্ঠু সমাধানের উপায় তাঁর জানা ছিল না । এই কারণে তিনি মাঝে মাঝে চিন্তার মধ্যে হারিয়ে যেতেন ।  কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে তাঁর নিজস্ব চিন্তার জন্য আলাদা সময় দিতে পারতেন না ।  বিবি খাদিজা নামক মক্কার একজন ধনাঢ্য বিধবা মহিলাকে বিবাহ করার পর, তাঁর আর্থিক অনটনের অবসান ঘটে । তিনি হেরা পর্বতের একটি গুহায় ধ্যান করা শুরু করেন । 

(চলমান)

১৮ অক্টোবর, ২০২১। ইস্কাটন, ঢাকা ।
 

বিষয়:
avertisements 2
বিএনপির একঝাঁক তরুণের হাতে পূর্বসূরির ঝাণ্ডা
বিএনপির একঝাঁক তরুণের হাতে পূর্বসূরির ঝাণ্ডা
ইসরায়েল হামলায় সাত শিশুসহ একই পরিবারের ১০ ফিলিস্তিনির  মৃত্যু
ইসরায়েল হামলায় সাত শিশুসহ একই পরিবারের ১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
বাংলাদেশ-ভারত : এক সময়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন বৈরী 
বাংলাদেশ-ভারত : এক সময়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন বৈরী 
কিয়েভে ৬ বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
কিয়েভে ৬ বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
বিশ্ব ইজতেমার ভবিষ্যৎ কী?
বিশ্ব ইজতেমার ভবিষ্যৎ কী?
একটি ডিমের দাম ৩০ হাজার টাকা!
একটি ডিমের দাম ৩০ হাজার টাকা!
ফেক আইডি, তছনছ জীবন
ফেক আইডি, তছনছ জীবন
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা কী বিশ্বাসযোগ্য?
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা কী বিশ্বাসযোগ্য?
চাঁদা না দেওয়ায় শাহবাগের দোকান বন্ধের হুমকি ছাত্রদল-যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের, সিসি ক্যামেরায় পড়ল ধরা
চাঁদা না দেওয়ায় শাহবাগের দোকান বন্ধের হুমকি ছাত্রদল-যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের, সিসি ক্যামেরায় পড়ল ধরা
ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘জোর করে’ হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বক্তব্য ভাইরাল!
ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘জোর করে’ হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বক্তব্য ভাইরাল!
সারা দেশে ‘জয় বাংলা কিলিং মিশন’ গঠনের প্রস্তাব, ভিডিও ভাইরাল
সারা দেশে ‘জয় বাংলা কিলিং মিশন’ গঠনের প্রস্তাব, ভিডিও ভাইরাল
এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ
এস আলম ও তার পরিবারের ১২৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ
বাংলাদেশের হয়ে খেলার অনুমতি পেলেন হামজা
বাংলাদেশের হয়ে খেলার অনুমতি পেলেন হামজা
পিলখানায় হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা ও মঈনসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
পিলখানায় হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা ও মঈনসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন
উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর  আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
avertisements 2
avertisements 2