
রাশেদুল ইসলাম
বিক্ষিপ্ত ভাবনা
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৮ আগস্ট,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৭:৩১ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৫

বিপদে পড়া মানুষ দেখে হাসতে নেই, বা ব্যঙ্গ করতে নেই ।
কারণ আমরা জানিনে, বাস্তব বা পরিস্থিতির কারণে ভবিষ্যতে আপনি বা আমি এমন কোন অবস্থায় পড়ব কি না ?
তাই, কাউকে আঘাত করার জন্য নয়; নিজের বিক্ষিপ্ত মনের ভাবনা শেয়ার করার জন্যই দেশের শীর্ষস্থানীয় দু’জন নেতাকে নিয়ে এই লেখা । নেতা দু’জনের একজন দেশের খ্যাতনামা আইনজীবী এবং অপরজন একজন বিশিষ্ট ধনকুবের- যিনি কত টাকার মালিক, হয়ত নিজেই জানেন না ।
ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আমার চাকরি জীবন শুরু হলেও দেশের প্রচলিত আইন এবং আইনের প্রয়োগ নিয়ে শুরু থেকেই আমি সন্দিহান ছিলাম । আমার মনে হয়েছে, ব্রিটিশ প্রবর্তিত আমাদের দেশের প্রচলিত আইন অনেকটা পানির মত । যে পাত্রে রাখা হয়, আইন সেই পাত্রের আকার ধারণ করে । আমার চাকরির বুনিয়াদি প্রশিক্ষন চলাকালে কিছু আইন কানুনের উপর পড়াশুনা করে, আইন বিষয়ে এই ধারণা আমার মনে গেঁথে যায় । ১৯৯০ সালে সাভারের পিএটিসিতে প্রশিক্ষনে থাকাকালে আইন বিষয়ে আমার মনে যে ধারণা জন্মে, তা আমার সে সময়ে লেখা ‘সবকিছু ঠিক আছে’ নামে একটি ছড়ায় প্রকাশ পায়। আমাদের দেশের আইন প্রয়োগ নিয়ে অনেক লম্বা সেই ছড়ার কয়েকটি লাইন নিম্নরূপ-
“আইনের বাইরে,
কেউ নাহি যায়রে !
ধারামতে ছাড়া যায়,
ধারামতে কাড়া যায়,
ধারামতে ঠিকাদার, পায় কাজ চুক্তি।
ধারামতে সাতখুনে পেয়ে যায় মুক্তি ।
আইনে কিছু কিছু লিক আছে,
আমি বলি ঠিক আছে,
সবকিছু ঠিক আছে,
বিলকুল ঠিক আছে” ।
এই ছড়ার সারকথা ছিল, যে যেভাবে আইনের সুন্দর ব্যাখ্যা দিতে পারেন, আইন আসলে তাই ।
১৯৯০ সালে তরুণ বয়সে আইন বিষয়ে আমার যে ধারণা জন্মে, এই প্রবীণ বয়সে এসে সেই ধারণার তেমন কোন পরিবর্তন হয় নি ।
একথা সকলেই জানেন, বিচারিক আদালতে কোন কথা বলতে গেলে, প্রত্যেককে প্রথমে তাঁর নিজের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে একটি শপথবাক্য উচ্চারন করতে হয় । বলতে হয়,
‘যাহা বলিব সত্য বলিব,
সত্য বৈ মিথ্যা বলিব না’ ।
এর অর্থ, আদালতে মিথ্যাকথা বলার কোন সুযোগ নেই । কিন্তু, আদালতে যাওয়ার প্রথম শর্ত একটি মামলা দায়ের করা । এই মামলা দায়ের করতে গেলে সত্যকথা এই যে, মিথ্যাকথা না লিখলে কোন মামলা হয় না- যা আদালতের শপথবাক্যের সাথে সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ । তারমানে মামলা মোকদ্দমার সাথে মিথ্যার একটি অবিচ্ছ্যেদ্য সম্পর্ক রয়েছে ।
আমি বলছিলাম, আমাদের দেশের একজন খ্যাতনামা আইনজীবীর কথা । সকলেই জানেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সব দাবি সরকার মেনে নেন । এ পর্যায়ে আমাদের খ্যাতনামা আইনজীবী মহোদয় প্রতিশ্রুতি দেন, আন্দোলনকারি ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না এবং তাঁদেরকে আন্দোলনের জন্য কোন ধরণের হয়রানি করা হবে না । কিন্তু, বাস্তবতা ছিল বিপরীত। এই ঘোষণার পরদিন থেকেই বাড়িবাড়ি ঘুরে ছাত্রছাত্রীদের ধরে আটক/ নির্যাতন/ হয়রানি করা হয়, যা দেশব্যাপী একটি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে । ফলাফল যা দাঁড়ায়, তাতে শুধু ছাত্রছাত্রী নয়, তাঁদের সাথে তাঁদের বাবামাও রাস্তায় নেমে আসেন । আইনজীবী মহোদয় যদি তাঁর সম্প্রচার মাধ্যমে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেন, বিচার ব্যবস্থার গৎবাঁধা মিথ্যাকথা না বলতেন, তাহলে হয়ত ইতিহাস অন্যরকম লেখা হত । অনেকগুলো তাজা প্রাণ রক্ষা পেত ।
এই তুখোড় আইনজীবী মহোদয়ের যুক্তিতর্ক বিভিন্ন ফোরামে সরাসরি শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছে । আইন বিষয়ে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য দিয়ে অপর পক্ষকে ঘায়েল করেছেন তিনি । আইনের নিজের কোন রঙ না থাকায়, আইনের যে ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন, সেটাকেই মূর্ত করে তুলেছেন তিনি । কিন্তু, তা দিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের প্রকৃত অর্থে কোন উপকার হয়েছে কি না - এটি একটি বড় প্রশ্ন । কোটা সংস্কার আন্দোলন তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাঁর দেওয়া আইনের ব্যাখ্যা ও মিথ্যাচার অনেক ছাত্র জনতার মৃত্যুর কারণ হয়েছে কি না, তা আদালত বিচার করবেন ।
এবার ধনকুবের নেতার কথা বলি । প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় এখানে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে । এটি ১৯৮০-৮১ সালের কথা । ডঃ ইউনূস তখন গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন নতুন শাখা খোলার জন্য দেশের একটার পর একটা গ্রাম চষে বেড়াচ্ছেন । যতদুর মনে পড়ে, তখন এদেশের গ্রামীণ জনজীবনে শতকরা ৯০ ভাগ রোগ ছিল পানিবাহিত । তখন গ্রামে আধুনিক কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। বেশির ভাগ গ্রামের মানুষ খোলা জায়গায় পায়খানা প্রস্রাব করতেন ।
ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যার একদিন আমাকে বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে, এই ৯০% রোগ থেকে গ্রামের মানুষ সহজে মুক্তি পেতে পারে । গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়ির পিছনে কলাগাছ আছে । এই কলাগাছের পাতা দিয়ে ঘিরে, তাঁরা যদি একটি পায়খানা ঘর তৈরি করে ব্যবহার করে এবং ফিটকিরি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করে, তাহলে পানিবাহিত রোগ থেকে তাঁরা মুক্তি পেতে পারে । সে সময় লাইন্স এর একটি অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন । সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এই বিষয়টি উল্লেখ করেন এবং জানান, মাত্র একসের ফিটকিরি দিয়ে গ্রামের একটি পরিবার কয়েক মাস সুস্থজীবন কাটাতে পারে । আর এ ধরণের উপকার করার জন্য কারো লায়ন বা সিংহ হওয়ার দরকার নেই; ছোট্ট একটি ইঁদুর হলেই চলে । তারমানে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সত্যিকার অর্থে খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না; শুধু আমাদের শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা থাকলেই তা সম্ভব ।
প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের চাহিদা খুব কম । তাঁদের সুখী জীবনের নিশ্চয়তা দিতে খুব বেশি খরচের প্রয়োজনও হয় না । আমাদের দেশের যে সব অদক্ষ শ্রমিক দক্ষতার অভাবে রাতদিন বিদেশের মাটিতে ভুতের মত পরিশ্রম করে অনেক কম মজুরি পান; তাঁদেরকে যদি বিদেশের চাহিদা অনুযায়ী বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কারিগরি দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দিয়ে বিদেশে পাঠানো হত, তাহলে তাঁরা অনেকগুণ বেশি বেতন পেতেন । এতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে তাঁরা অবদান রাখতে পারতেন । সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য এ ধরণের অনেক ব্যবস্থা গ্রহনের সুযোগ রয়েছে আমাদের দেশে।
কিন্তু এসব আমার বিক্ষিপ্ত মনের কথা । আমার ধনকুবের রাজনৈতিক নেতার গল্প এখানেই শেষ । আজ হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি অতিঘৃণ্য একজন মানুষ তিনি । অথচ তাঁর সম্পদের সামান্য অংশ যদি তিনি এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে খরচ করতেন, তাহলে এ ধরণের পরিস্থিতির মুখে তিনি কখনো পড়তেন না ।
এই দুজন নেতার আচরণ ও কর্মে, আমার মনে প্রশ্ন, যে শিক্ষা ও বিচক্ষণতা এবং যে অর্থ ও সম্পদ দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে আসে না, সেই শিক্ষা ও অর্থ -সম্পদের কোন মূল্য আছে কি ?
এই ঘটনা থেকে মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে প্রকৃত শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ দিন ।
১৭ আগস্ট, ২০২৪ । মোহাম্মদপুর, ঢাকা ।

ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় রাহুল গান্ধীকে তলব

সাগর-রুনি হত্যার মামলার জট খুলতে শুরু আসছে অনেক তথ্য

দেশ ছেড়ে পালানোর সময় বিমানবন্দরে শেখ হেলালের পিএস গ্রেপ্তার

বাংলাদেশিদের কল্যাণের প্রতি নয়াদিল্লির অগ্রাধিকার দেয়া উচিত

আদানির ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পুরোটাই সরবরাহ চাইছে ঢাকা

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ!

যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে বড় ধাক্কা খেলেন নরেন্দ্র মোদি

তসলিমা নাসরিনের ‘চুম্বন’ বই ঘিরে উত্তেজনা বইমেলায়

স্যালুট না দেওয়ায় রাস্তায় আদালত বসিয়ে শাস্তি দিতেন বিচারপতি মানিক

গাজা ইস্যুতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একজোট আরব বিশ্ব

পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল

হজযাত্রীদের শিশু সঙ্গী নিষিদ্ধ করলো সৌদি আরব

বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ের তথ্য এবং মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি

পুলিশকে ফের অস্থির করার পাঁয়তারা বেনজীরের, বিচারের দাবি

মোদীর সকল শর্তই প্রত্যাখান করলো বাংলাদেশ!

দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!

গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!

কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক

সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু

সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন

অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ

অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা

কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার

হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার

খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি

কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু

মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু

হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
