রাশেদুল ইসলাম
ইসলামের মৌলিক বিষয়
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩০ অক্টোবর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৫৪ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো কি কি ?
আমি আসলে ধর্ম নিয়ে কথা বলতে চাইনে । সেদিন আমার এক জ্ঞানী বন্ধু আমাকে যা বোঝান, তার সারকথা এই যে, কোন বিষয়ে কথা বলার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা লাগে । ধর্ম বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে আমার যেহেতু সে যোগ্যতা নেই; এ বিষয়ে আমার কথা বলা উচিত নয় । তারপরও আমি ধর্ম নিয়ে কথা বলি । আমার এমন কোন বই নেই, যেখানে ধর্ম বিষয়ে আমার কোন লেখা নেই । কিন্তু, কেন ?
আমি একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ হলেও আমার বিচারবুদ্ধি অনেকটা অশিক্ষিত মানুষের মত । যে কোন বিষয় আমি অনেকটা বাচ্চাদের মত চিন্তা করি এবং বুঝতে চেষ্টা করি । আমি চিন্তা করি, আমার জন্মের সময় কেউ আমার সাথে ছিল না; আমার মৃত্যুর পরও কেউ আমার সাথে যাবে না । মৃত্যুর পরের যাত্রা যত কঠিন হোক বা সহজ হোক, আমার নিজেকেই সে পথ পাড়ি দিতে হবে । মানুষের এই জন্ম কেন ? আবার এই মৃত্যুই বা কেন ?
আমি জন্মগতভাবে মুসলমান । মা বাবা অন্য ধর্মের মানুষ হলে, আমি হয়ত সেই ধর্মের মানুষ হতাম । কিন্তু যেহেতু আমি মুসলমান, আমার নিজের ধর্ম ইসলাম, সেহেতু আমার ধর্ম ইসলাম মানুষের জন্ম- মৃত্যু ও জীবন নিয়ে কি বলে ? এটা জানা বোধহয় আমার জন্মগত অধিকার ।
নিজের ধর্ম সম্পর্কে জানতে গিয়েই আমার ইসলাম ধর্ম নিয়ে কিছু পড়াশুনা করতে হয় । মৌলিক কিছু বিষয় জানতে হয় । তাই যখন আমার নিজের ধর্ম ইসলাম নিয়ে কেউ উলটাপালটা কথা বলেন, আমার কষ্ট হয় ।
ইসলাম ধর্ম বুঝতে গেলে ইসলামের গোঁড়ার কথা জানতে হবে । মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে জানতে হবে । প্রকৃত পক্ষে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে বাদ দিয়ে ইসলাম ধর্ম নয় । আরবে কোন প্রেক্ষাপটে আমাদের নবীর জন্ম ?
ইতিহাসে বলা হয় ৫৭০ সালে যখন মক্কার কোরাইশ বংশে যখন আমাদের নবীর জন্ম, তখন আরবে অন্ধকার যুগ (আইয়ামে জাহেলিয়া) চলছে ।
১। তখন মানুষ কেনা বেচা হত ।
২। ক্রীত দাসদাসীদের উপর পাশবিক নির্যাতন করা হত ।
৩। নারীদের কোন মর্যাদা ছিল না । এ কারণে কারো মেয়ে শিশু জন্ম হলে তাকে জীবিত কবর দেওয়া হত ।
৪ । কাবাঘরে মূর্তি পুজা হত । প্রতিমাকে খুশী করার জন্য তার সামনে মানুষ কোরবানি দেওয়া হত । হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এঁর বাবা আবদুল্লাহকেও তাঁর বাবা আবদুল মুত্তালিব কোরবানি দেওয়ার জন্য নির্বাচন করেন । কিন্তু গোত্রের অন্যান্য মানুষের বিরোধিতার মুখে তিনি তা করতে পারেননি । অন্যদের বিরোধিতার মূলে যে বাবা আব্দুল্লাহর প্রতি তাঁদের দরদ ছিল তা নয়; তাঁদের আশংকা ছিল এ ব্যবস্থা চালু হলে তাঁদের ছেলেদের ক্ষেত্রেও এমনটি হতে পারে (সূত্রঃ পৃষ্ঠা ৮৮, সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা), ইবনে ইসহাক)।
৬। গীবতের মাধ্যমে মানুষে মানুষে অবিশ্বাস বাড়ানো, সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি ও হানাহানি ছিল ।
৫। কেউ সত্য কথা বলত না । শঠতা ও প্রতারণা স্বাভাবিক বিষয় ছিল ।
আরবের অন্ধকার যুগের অবসানের জন্য নবী করিম (সঃ) যে সকল গুণাবলি কার্যকর ভূমিকা পালন করে সেগুলো নিম্নরূপঃ
নবী করিম (সঃ) শতভাগ সত্যবাদী ছিলেন । তিনি কখনো মিথ্যা কথা বলেননি । সারাজীবন মানুষের উপকার করেছেন । কখনো কারো কোন ক্ষতি করেন নি । তিনি একজন বিশ্বস্ত আমানতদার ছিলেন । কখনো কারো নামে গীবত করেন নি । তাঁর চারিত্রিক পরিশুদ্ধতার কারণেই ৪০ বছর বয়সে তিনি আল্লাহর নবী হিসেবে মনোনীত করা হয় । এখানে উল্লেখ্য যে, হযরত মোহাম্মদ (সঃ) তাঁর চারিত্রিক পরিশুদ্ধতা, বিশ্বস্ততা ও একনিষ্ঠভাবে জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমেই আল্লাহর নবী হিসেবে স্বীকৃতি পান ।
বলা হয়ে থাকে, নবুয়ত লাভের পর মহানবী (সঃ) আরবের অন্ধকার যুগের অবসানের জন্য যা করেন, তা সবই পবিত্র কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী করেছেন ।
(চলমান)