avertisements 2
Text

রাশেদুল ইসলাম

জেনেশুনে বিষ……

প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৭ এএম, ১২ মার্চ, বুধবার,২০২৫

Text

একটাই জীবন মানুষের । কিন্তু কত বৈচিত্র্যময় !  আমার মত  শিক্ষিত  মানুষের জীবন মোটা দাগে  ৪ ভাগে  বিভক্ত-
(১) শৈশবজীবন 
(২) শিক্ষাজীবন
(৩) চাকরিজীবন এবং 
(৪) অবসর জীবন 
আল্লাহর অশেষ রহমত আমি আমার জীবনের ৩ ভাগ  ইতিমধ্যে পার করেছি । এক এক ভাগের   গল্প,  এক এক রকম । এক এক ভাগের অনুভূতি,   এক এক রকম । কারো সাথে কারো  কোন মিল নেই । এক এক ভাগের  মজা পেতে হলে, জীবনের  সেই ধাপে নিজেকেই  থাকতে হয় । শৈশব কালের মজা পরবর্তী কোন কালে যেমন পাওয়া যায় না;  শিক্ষাজীবনের মজাও  অন্য কোন জীবনে পাওয়া সম্ভব নয় । আমি এখন অবসরজীবনে । আমার দলে যারা আছেন,  তাঁদের গল্প, দুঃখ বেদনা, হাসি কান্না সম্পূর্ণ আলাদা । অন্য  জীবনের সাথে এসবের  কোন মিল নেই । 
সেদিন আমেরিকা প্রবাসী এক দম্পতি  বাসায় আসেন । আমাদের পারিবারিক বন্ধু তাঁরা। ভদ্রলোক তাঁর বাবার অবসর জীবনের কথা বলেন । বাবা সিভিল সার্জন ছিলেন । ৫৭ বছর বয়সে অবসর গ্রহন করেন তিনি । সেদিন বাবা  আক্ষেপ করে  বলেন, ‘তোরা দুই মন ওজনের বস্তা আমার মাথায় তুলে দে । আমি খুব সহজে তা অনেক দূর নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু সরকার আমাকে অবসর দিয়েছে । আমার নাকি বয়স শেষ’ !  বাবা  সে সময় আড়াই লক্ষ টাকা গ্রাচুইটি পান । অনেকের পরামর্শে কিছু মেডিকেল সরঞ্জাম কিনে  প্রাকটিস শুরু করেন তিনি । সেই যন্ত্রপাতির ব্যবহারও তিনি জানতেন না । ব্যবসাও ঠিকমত বুঝতেন না । ৬ মাসের মধ্যেই তাঁর সব পুঁজি শেষ হয় । এরপর ৭/৮ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি । অবসর গ্রহনের সেই ধাক্কা  সামলাতে পারেন নি তিনি । 
তাঁর মামার গল্পটিও মোটামুটি একই  রকম । পুলিশের এসপি ছিলেন মামা  । অবসরে পাওয়া টাকা নিয়ে   সরাসরি গ্রামে আসেন তিনি । অনেক কর্মঠ ও সুঠাম দেহের অধিকারি । বসে থাকার মানুষ নন তিনি । কয়েকজনের পরামর্শে পাটের ব্যবসা শুরু করেন । এলাকা থেকে পাট কিনে নিজেই ট্রাকের উপরে বসে মোকামে নিয়ে যান । পথে ডাকাতির ভয় দেখায় অনেকে । কিন্তু তাঁর বিশ্বাস হয়না যে,  তাঁর মত ডাকসাইটে  অবসরপ্রাপ্ত একজন এসপিকে কোন ডাকাত ধরতে পারে । কিন্তু সত্যই তাঁর ট্রাক ডাকাতদের কবলে পড়ে এক রাতে  ।   সর্বস্বান্ত হন তিনি । পরবর্তী অনেক বছর  মানবেতর জীবন কাটিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এসপি  দম্পতির জীবনের অবসান হয় ।
এ কথা সত্য যারা অবসরে যান, তাঁদের অনেকেই শক্ত সামর্থ্য থাকেন । অনেক অভিজ্ঞতায়  অভিজ্ঞ তাঁরা । কিন্তু  অবসরের বয়স  নির্ধারিত হয় সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা । যারা আইন প্রণয়ন করেন,  তাঁদেরও একটা ব্যাখ্যা থাকে । চাকরি মানেই তো পরাধীনতা । যিনি পরাধীন থাকেন, তাঁকে যদি তাঁর জীবনের সক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত পরাধীন রাখা হয়, তাহলে  কি তা ন্যায় সংগত হতে পারে ? তাঁরও তো নিজের সক্ষমতা দিয়ে নিজের  স্বাধীন ইচ্ছা মত কিছু করার সাধ থাকতে পারে !  এসব বিবেচনায় মালয়েশিয়ান সরকার একটা ব্যবস্থা রেখেছেন । অবসরে যাওয়ার আগে একজন কর্মকর্তা ইচ্ছা করলে  তাঁর অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার আলোকে কোন প্রকল্প প্রস্তাব পেশ করতে পারেন । সরকার সেই কাজে সাহায্য করে থাকে । এতে একদিকে দেশের উন্নয়নে একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতা কাজে লাগে;  অন্যদিকে সেই কর্মকর্তা তাঁর ইচ্ছেমত কাজ করার সুযোগ পান ।  আমাদের দেশেও বিষয়টি চিন্তা করা যেতে পারে । 
কোন কোন  অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবসরজীবনে তাঁদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেন । সেদিন একজন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব জানান,  পেনশনের জন্য একটা অফিসের ‘না দাবী সনদ’  আনতে তাঁকে অনেক নাস্তানাবুদ হতে হয় । তিনি নিজে বিধবা ।  পায়ের ব্যথায় অতি কষ্টে চলতে হয় তাঁকে । এই শরীরে নাজেহাল হয়ে একেবারে প্রায় কেঁদে ফেলা অবস্থায় সেই অফিসের অন্য একজন কর্মকর্তা  তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেন । অনেকটা নিজের মায়ের মতে সম্মান করে সেই কর্মকর্তা তাঁর কাজটি করে দেন । অভ্যাসবশত সেই অফিসারের প্রশংসা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি  । কিন্তু সেই স্ট্যাটাসই সেই ভালো অফিসারের জন্য  কাল হয়ে দাঁড়ায় । একই  অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা সেই ভালো অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন । তাঁদের অভিযোগ,  এভাবে একজনের উপকার করে প্রকারন্তরে অন্য কর্মকর্তাদের রীতিমত  অপমান করা হয়েছে । সম্প্রতি পাসপোর্ট অফিসের একজন কর্মকর্তা একইভাবে সম্মান দেখিয়ে তাঁর কাজ করে দিয়েছেন এবং তাঁর হাত ধরে সিঁড়ি দিয়ে নামতে সাহায্য করেছেন । কিন্তু তিনি সেই ভালো কর্মকর্তার নিরাপত্তার কথা ভেবে, এ বিষয়ে কিছু  লিখতে পারেন নি । 
আমার নিজের অবশ্য কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা  নেই । সকলেই আগের মত,  কোন কোন ক্ষেত্রে একটু বেশী মনযোগী হয়ে আমাকে সাহায্য করছেন । এমনও হতে পারে,  এখনও কোন খারাপ অফিসারের সাথে আমার দেখা হয়নি । তবে একথা সংশ্লিষ্ট সকলের মাথায় রাখা দরকার যে, আমরা যে যেখানেই থাকিনা কেন, আমাদের অবস্থান সাময়িক । যে চেয়ারে তাঁরা  এখন আছেন, সেই চেয়ারে আমরা ছিলাম । আবার আমরা এখন যেখানে আছি, দিন শেষে এখানেই তাঁদের   আসতে হবে । 
অবসর জীবনে আমাকে যে প্রশ্নের প্রায় প্রতিদিনই জবাব দিতে হচ্ছে,  তাহোল, আমি কি করছি, বা কি করতে যাচ্ছি । এ বিষয়ে অতিনিকটজনদের আগ্রহও কম নয় । তাঁদের আশংকা  অতি কর্মব্যস্ত মানুষ হঠাৎ কাজ না করে বসে থাকলে,  কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে । এর মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ের দুএকটা প্রস্তাব নিয়ে, আমার নিকটজনের কেউ কেউ কথা বলেছেন । কিন্তু আমি নিজে এক্ষেত্রে আমার স্বাধীন বিচার বুদ্ধির উপর গুরুত্ব দিতে চাই ।   আমি সব সময় আমার অভিভাবক, শিক্ষক,  না হয় ঊর্ধ্বতন কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করেছি । নিজের সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করার সুযোগ হয়নি কখনও ।  তাই, জীবনের এই পরিণত বয়সে  আমি আমার নিজের সহজাত বিচারবুদ্ধি দিয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে চাই । 
সরকারি কাজ জনগণের জন্য করা হয় । এজন্য সরকারের যে কোন জনকল্যাণমুখী কাজ আমৃত্যু আমার কাছে অগ্রাধিকার পাবে । তবে এর বাইরে  একটাই কাজ বা করণীয় আমার-  তাহলো অর্পণ- দর্পণ স্মৃতি ফাউনডেশনকে গড়ে তোলা । এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী একটি প্লাটফরম গড়ে তোলা,  যা যুগ যুগ ধরে এ দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করবে ।
মহান আল্লাহ আমার প্রার্থনা কবুল করুন ।

২ জুলাই, ২০২১। ইস্কাটন, ঢাকা । 

বিষয়:
avertisements 2
‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বেশে নারীবিদ্বেষী কাণ্ড, যুবক আটক
‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বেশে নারীবিদ্বেষী কাণ্ড, যুবক আটক
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে বিমানবন্দর থেকেই  ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র
শামির মায়ের পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা, প্রশংসায় ভাসছেন বিরাট কোহলি
শামির মায়ের পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা, প্রশংসায় ভাসছেন বিরাট কোহলি
সাবেক এমপির বাড়ি দখল করা সেই নারী সমন্বয়ক গ্রেপ্তার
সাবেক এমপির বাড়ি দখল করা সেই নারী সমন্বয়ক গ্রেপ্তার
হুমকি দিয়ে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনা যাবে না
হুমকি দিয়ে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনা যাবে না
নিজ বাড়িতেই পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, ঘুষের মাধ্যমে নিয়োগ
নিজ বাড়িতেই পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, ঘুষের মাধ্যমে নিয়োগ
রিজার্ভ বেড়ে এখন ২১.৪০ বিলিয়ন ডলার
রিজার্ভ বেড়ে এখন ২১.৪০ বিলিয়ন ডলার
ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো
ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো
ধর্ষণের বিচার বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের আহ্বান আজহারীর
ধর্ষণের বিচার বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের আহ্বান আজহারীর
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের
আমি গণতন্ত্র দিয়েছি
আমি গণতন্ত্র দিয়েছি
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিল নারী : ড. ইউনূস
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিল নারী : ড. ইউনূস
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত
আ. লীগ নেতা ‘ব্যাটারি বাবু’ ভবনে ঢুকে হাওয়া!
আ. লীগ নেতা ‘ব্যাটারি বাবু’ ভবনে ঢুকে হাওয়া!
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি-ভাঙচুর,যৌথ বাহিনীর হাতে সমন্বয়কসহ গ্রেফতার ১৪
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি-ভাঙচুর,যৌথ বাহিনীর হাতে সমন্বয়কসহ গ্রেফতার ১৪
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর  আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
avertisements 2
avertisements 2