বাগেরহাটের ডিসিকে নিয়ে মুখ খুললেন সেই নারী!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ মে,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২০ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের বদলি নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এরই মধ্যে বেরিয়ে এসেছে অজানা অনেক তথ্য। নিয়োগের পাঁচ মাস পার হতে না হতেই জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হকের বদলির বিষয়টি সম্মুখে এলে বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষ সরব প্রতিবাদ জানান।
জেলা প্রশাসকের বদলির কারণ হিসেবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি নারীঘটিত অভিযোগের বিষয় সামনে এসেছে। কিন্তু অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ওই নারী।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নারী কর্মকর্তা বলেন, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হক স্যারের বিরুদ্ধে আমার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা অবশ্যই অমানবিক।
১১ এপ্রিল আমার ডিভোর্সি স্বামী ফখরুল আলমের করা ওই অভিযোগের বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো সংবাদকর্মী বা অন্য কেউ কথা বলেনি। এমনকি একটি ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে অনেকে ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। আমাদের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এরপরেও কারণে-অকারণে তিনি আমাকে সন্দেহ করেন। আমার বয়সে ছোট মামাতো ভাই ও অফিসের কলিগদের নিয়েও তিনি নানান কলহ সৃষ্টি করেছেন। বিয়ের পরে তিনি আমার গায়েও হাত তুলেছেন। তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ২০১৭ সালে প্রথম তাকে ডিভোর্স দেই।
পরবর্তীতে সন্তানদের কথা বিবেচনা করে পরিবারের সমঝোতায় আবার সংসার শুরু করি। কিন্তু ফখরুল আলমের স্বভাবের পরিবর্তন হয়নি। তিনি আমার ওপর অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। এমনকি আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নানান অপপ্রচার চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে দুই ছেলেসহ আমি তার সংসার থেকে চলে আসি। এসময় আমার স্বর্ণালঙ্কারসহ সব ধরনের মূল্যবান মালামাল জোর করে রেখে দেন ফখরুল আলম।
এরপর ৮ নভেম্বর আমি তাকে ডিভোর্স লেটার প্রদান করি। এরপর থেকেই তিনি আমাকে নানা রকম হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। হুমকির প্রেক্ষিতে আমি তার বিরুদ্ধে ঢাকার খিলগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি। আসলে আমাকে সামাজিক ও পেশাগতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার ডিভোর্সি স্বামী ফখরুল আলম এ অভিযোগ দিয়েছেন।
অত্যাচারী স্বামীকে ছেড়ে দুই সন্তান নিয়ে ভালোই আছি। সন্তানদের নিয়ে মান সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চাই। ফখরুল আলমের এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
অভিযোগ ও চলমান ঘটনায় ওই নারীর স্বামী ফখরুল আলম বলেন, আমি যেসব অভিযোগ করেছি তা সত্য। এ বিষয়ে এর থেকে বেশি কোনো কথা বলব না। জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হকের সঙ্গে আপনার স্ত্রীর পরিচয়ের আগেই আপনাদের প্রথম ডিভোর্স কেন হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপনার সঙ্গে রাতে কথা হবে। এখন কথা বলতে পারব না।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হক বলেন, সরকারি চাকরির শর্ত অনুযায়ী আমি পরবর্তী কর্মস্থলে চলে যাব। তবে বাগেরহাটের মোল্লাহাটের একটি ছেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। ফেসবুকে বিডি প্রথম আলো নামে একটা পেজ খুলে ওই অভিযোগের কপি ভাইরাল করা হয়েছে। যা জেলা প্রশাসক এর ঐতিহ্যবাহী পদটিকে সম্মানহানী ও বিতর্কিত করার অপচেষ্টা মাত্র। ওই অভিযোগে তার পারিবারিক বিষয়ে আমাকে জড়িয়ে কিছু কথা লেখা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তবে আমি এবং আমার পরিবার আমাদের নিজেদের অবস্থানে আত্মবিশ্বাসী।