কতটা সত্যি? প্রবাসী সরকার গঠনের চেষ্টায় সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন আ.লীগ নেতাকর্মীরা!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:৩৪ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মধ্যে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আড়াই মাস পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ প্রতিবেশি দেশটি থেকে প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে বলে খবর প্রচার হচ্ছে। এমন খবরে তোলপাড় চলছে দেশের রাজনৈতিকসহ সব মহলে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলছেন, ভারতের ত্রিপুরার আগরতলাসহ রাজ্যটির বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের পালিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে দেশবিরোধী চক্রান্ত করছে। ফ্যাসিস্টদের এ ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত ছাত্র-জনতা। যেকোনো মূল্যে আওয়ামী চক্রান্ত রুখে দেওয়া হবে।
ভারত থেকে প্রবাসী সরকার গঠনের নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার দাবি করে এবং এর প্রতিবাদে গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নগরীতে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা জেলা শাখা। সেখানে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, আবদুল হান্নান মাসুদসহ কুমিল্লার সমন্বয়করা বক্তব্য দেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘খুনি হাসিনা ভারতের ত্রিপুরায় বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। এ কারণে আমরা কুমিল্লাবাসি তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেছি।’
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটির বহু নেতাকর্মী চোরাপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর আছে। কেউ কেউ পালাতে গিয়ে সীমান্তে ধরাও পড়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের এসব নেতাকর্মীরা কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনাকে এনে তারা একটা প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে।
প্রবাসী সরকার গঠনের গুঞ্জনের সত্যতা খুঁজতে আওয়ামী লীগের প্রচার কমিটির ও শেখ পরিবারের একজন শেখ রুবেলের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন প্রচার করেছে বেসরকারি টিভি স্টেশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর।
ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ রুবেল দাবি করেছেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান করে শিগগিরই প্রবাসী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে ভারতে তাদের একটি ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে বলেও দাবি তার।
শেখ রুবেল বলেন, ‘ভার্চুয়াল ওই মিটিংয়ে প্রবাসী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর প্রতিনিধিত্ব করবেন শেখ হাসিনা। সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।’
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লার সমন্বয়ক রুবেল হোসাইন বলেন, ‘কুমিল্লার সন্ত্রাস-চাঁদাবাজের গডফাদার বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে তাহসিন বাহার সূচনা পালিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান করছে। আওয়ামী লীগের পলাতক বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতাও সেখানে রয়েছে। তারা সেখানে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একত্রিত করে দেশবিরোধী চক্রান্ত করছে। প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে।’
পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরেদর এসব চক্রান্তের খবর পেয়েছেন জানিয়ে সমন্বয়ক রুবেল বলেন, ‘মূলত তারা দেশকে অস্থিতিশীল এবং দেশের জনসাধারণের ক্ষতি করতে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেকোনো মূল্যে তাদের দেশবিরোধী চক্রান্ত রুখে দেবো।’
কুমিল্লার আরেক সমন্বয়ক আবু রায়হান বলেন, ‘হাসিনার প্রেতাত্মারা সীমান্তের ওপারে একত্রিত হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। আমরাও সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এবারের জবাব হবে শক্ত ও কঠিন। আমরা তাদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেব না।’
কুমিল্লার সমাবেশে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েও বসে নেই। দেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা খবর পেয়েছি, কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরায় সাবেক এমপি বাহার ও তার মেয়েসহ আওয়ামী লীগের পলাতক কিছু নেতাকর্মী জড়ো হয়ে ষড়যন্ত্র করছে।’
এমন ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা কখনোই বাংলার মাটিতে সফল হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দালাল ছাত্রলীগ, যুবলীগ, টোকাই লীগ, বাংলাদেশের কোথাও পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করলে শক্ত হাতে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রয়োজনে কুমিল্লা থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’