ইউএনওর বাসভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যা পাওয়া গেছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৯ এএম, ৪ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০৫:১৯ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের হামলাকারী দুইজন রাতের আধাঁরে একে একে বাড়িতে প্রবেশ করে। হামলায় অংশগ্রহণ শেষে একই সঙ্গে তারা বাড়ি ত্যাগ করে।
সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কথা নিশ্চিত করেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ওয়াদুদ ভুইয়া ও পুলিশের রংপুর জোনের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য।
ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে আরও দেখা গেছে, এই হামলায় অংশ নেয় দুইজন। এদের মধ্যে একজন ছিল মুখোশ ও অন্যজন পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) পরা। যাতে তাদের চেনা না যায়।
এর আগেও একই কথা জানান ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা। সেই সিসি ফুটেজ ধরেই এগোচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
দুপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, হামলায় অংশগ্রহণকারী দুইজন তরুণ। তাদের অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে বুধবার রাত ২টার দিকে তার সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা চালায় দুই দুর্বৃত্ত। ওই সময় তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপরও হামলা চালায় তারা। পরে ইউএনওকে আহত অবস্থায় প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার আনা হয়। ওয়াহিদার বাবাকে ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার গুরুতর আহত ওয়াহিদা খানমকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওয়াহিদা খানমের মাথায় আঘাতের কারণে হাড় ভেঙে তা মস্তিষ্কে ঢুকে গেছে। তার এক সাইড অবশ হয়ে আছে। এই অবস্থায় তার জটিল অপারেশন করতে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আজ (বৃহস্পতিবার) রাত ৯টার পর তাকে অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের জন্য নেয়া হয়।
এদিকে, ভৌগলিক অবস্থানের দিক দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ক্যাম্পাস ও ঘোড়াঘাট থানার দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার হওয়ায় দুস্কৃতকারীরা নির্বিঘ্নে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
ওসমানপুরে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাড়ির পেছনটা শুনশান নীরবতা। নেই তেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাড়িতে ছিল শুধুমাত্র একজন নৈশ্যপ্রহরী। এই অবস্থায় থানা ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান হওয়ায় নিরাপদ ভেবেই দুস্কৃতকারীরা নির্বিঘ্নে এই ঘটনা ঘটাতে পেরেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান, ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ঘোড়াঘাটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর নানান অভিযানে অংশ নেন ওয়াহিদা খানম। বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ, অবৈধ কারখানা বন্ধসহ বিভিন্ন অপকর্ম বন্ধ করেন তিনি। তিনি কখনই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি।
তবে কি কারণে এই হামলা, সিসি ফুটেজের দুজন এবং আর কে কে এর পেছনে থাকতে পারে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।