কার জন্য কোন স্বার্থে এই সেতু?
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ মে,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৬ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ধনপুর বাজারের পূর্ব-দক্ষিণে রয়েছে কাটাখালি খাল। ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল প্রায় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু। এক দশক পেরিয়ে গেলেও এর দু’পাশে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়ক। এ ছাড়া খাল পারাপারে যে সড়কটি রয়েছে তার থেকে কয়েকশ মিটার দূরে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। এতে স্থানীয়দের কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের মাধ্যমে সেতুটি নির্মিত হলেও এখন আর কোনো দপ্তরই সেই কৃতিত্ব নিচ্ছে না। স্থানীয়দের ভাষ্য, রাষ্ট্রীয় অর্থকে যারা গৌরী সেনের টাকা ভাবেন তারাই এ রকম হাস্যকর ও অপরিণামদর্শী প্রকল্প হাতে নেন। খাল পারাপারের রাস্তা থেকে কয়েকশ মিটার দূরে সেতুটি কি ভূতের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে?
সরেজমিন দেখা যায়, ইটনা-ধনপুর-কাঠৈর সড়কের দীনেশপুর এলাকায় রয়েছে কাটাখালি খাল। গয়ড়া বিল থেকে খালটি কুকুরমারা হাওর হয়ে সুরমা নদীতে যুক্ত হয়েছে। এ খাল পার হয়ে ধনপুর ইউনিয়নের বলরামপুর, চাছুয়া, মথুরাপুর, কাঠৈর, করঞ্চা, রমানাথপুর, বিষুষ্ণপুর, সুভদ্রাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ হাট ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। সেই সড়ক থেকে কয়েকশ মিটার দূরে খালের মধ্যে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি।
স্থানীয় হিতেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, কেন এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল তা আমাদের জানা নেই। এ রকম অপরিকল্পিত কাজে জনগণের টাকার অপচয় খুবই দুঃখজনক। ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, কাটাখালি খালের সেতুটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই নির্মাণের পর থেকে সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসেনি। আসবেও না। সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া উন্নয়ন করলে তা মানুষের কাজে আসে না।
সেতুটি কোন দপ্তরের অধীনে নির্মাণ করা হয়েছিল জানতে চাইলে ঠিকাদার মাহবুবুর রহমান বলেন, অনেক দিন আগের কথা। যতদূর মনে পড়ে সেতুটির জন্য সম্ভবত ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৩০ মিটার। পিআইও অফিসের অধীনে সেতুটি আমি নির্মাণ করে দিই।
তবে ইটনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানানো হয়, এই সেতু তাদের অধীনে নির্মিত হয়নি। একই দাবি করেছে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরও। ইটনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) খলিলুর রহমান মোল্লা বলেন, আমার জানামতে, সেতুটি ত্রাণ মন্ত্রণালয় বা পিআইও অফিস নির্মাণ করেনি। আবার ইটনা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলম বলেন, এই সেতু নির্মাণে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা নেই।
ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা আক্তার জানান, কিছুদিন আগে তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন। খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।