পরীক্ষা দিয়ে আর ঘরে ফেরা হলো না মাহবুবার
                                    
                                    
                                        
                                            ডেস্ক রিপোর্ট
                                        
                                    
                                   
                                     প্রকাশ:  ১২:০০ এএম,  ২৩ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট:  ০৬:৪২ পিএম,  ১ নভেম্বর,শনিবার,২০২৫
                                
                        
                    ধামরাইয়ে ঢাকা থেকে খুলনাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া প্রাইভেট কার।
লক্ষ্মীপুরে গতকাল শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে বাবার সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন মাহবুবা সুলতানা (২৬) নামের এক গৃহবধূ। কিন্তু পথে একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায় আর ঘরে ফেরা হলো না দুই সন্তানের মা মাহবুবার। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। অন্যদিকে নোয়াখালীর হাতিয়ায় পাওয়ার টিলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চালকসহ তিনজন মারা গেছেন।
সিলেটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন একজন। ঢাকার ধামরাইয়ে হানিফ পরিবহনের একটি দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। এ নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরের বিস্তারিত—
লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের দক্ষিণ হাজীপুর শাহী জামে মসজিদের সামনে গতকাল দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহবুবা সুলতানা নামের (২৬) এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। মাহবুবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেষে লক্ষ্মীপুর শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি রামগঞ্জ উপজেলার আথাকরা গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী ফিরোজ আলমের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের মা। দুর্ঘটনায় মাহবুবার সঙ্গে থাকা তাঁর বাবা মাহবুব আলম ও সিএনজিচালক ফারুক গুরুতর আহত হন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মাহাবুবার দেবর ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘ভাবির মৃত্যুতে দুটি সন্তান মাহারা হয়ে গেল। তাদের কিভাবে সান্ত্বনা দেব, সে ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। ’
রামগঞ্জ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নোয়াখালী : গতকাল বিকেলে নোয়াখালীর হাতিয়া তমরদ্দি-ওছখালী সড়কের বেজুগালিয়া এলাকায় একটি পাওয়ার টিলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ওই পাওয়ার টিলারের চালকসহ তিনজন মারা যান। নিহতরা হলেন তমরদ্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মালেকের ছেলে বেলাল হোসেন, আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. রুবেল এবং আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন।
হাতিয়া থানার ওসি আমির হোসেন বলেন, তমরদ্দি-ওছখালী সড়কের উত্তর বেজুগালিয়া এলাকায় একটি পাওয়ার টিলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সিলেট : গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিলেট নগরের খাসদবীর পয়েন্টে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে রফিকুল ইসলাম (৩৮) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। রফিকুল সিলেট সড়ক উপজেলার সাহেবের বাজার এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি সিলেটের ওসমানী শিশু উদ্যান ও ড্রিমল্যান্ড পার্কে পিঞ্জিরার ভেতরে ‘মোটরসাইকেলের খেলা’ দেখাতেন।
ধামরাই : ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের জয়পুরা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঢাকা থেকে খুলনাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে প্রাইভেট কারটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং বাসটি ৫০ গজ দূরে সড়ক বিভাজকের ওপর উল্টে যায়। গতকাল সকালে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
আহত যাত্রী শফিকুল ইসলাম জানান, বেপরোয়া গতিতে আসা হানিফ পরিবহনের বাসটি ওভারটেক করার সময় সরু সড়কের অন্যদিক থেকে আসা প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার সোহেল রানা জানান, বাস ও প্রাইভেট কারের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ১৫ জনকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও গুরুতর দুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আরো ২০ থেকে ২২ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ধামরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়েছে এবং আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জয়পুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কে ছয় লেনের কাজে ঠিকাদারের গাফিলতি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকির অভাবে একই স্থানে বারবার বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় লোকজন। গতকাল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ধামরাইয়ের ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী ও সোমভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আওলাদ হোসেন। ইউএনও বলেন, মাঝখানের সরাসরি লেনে কোনো সতর্ক সাইনবোর্ড না দেওয়াতে এবং জয়পুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কাজের ক্ষেত্রে ঠিকাদারের গাফিলতিতে মাঝখানের লেনের দুই পাশে গর্ত করে রাখার ফলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া তিনি বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদেরও তদারকিতে গাফিলতি রয়েছে।


                                    
                                    
                                    
                                    
                                    


