avertisements 2

ছোট ভাইয়ের কিডনিতে নতুন জীবন পেলেন মেজো ভাই

ছোট ভাইয়ের কিডনিতে নতুন জীবন পেলেন মেজো ভাই

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৩৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর, বুধবার,২০২৪

Text

প্রবাদ আছে- ‘ভাই-ভাই ঠাঁই-ঠাঁই’। সাধারণত ভাইয়ে ভাইয়ে অমিল-দ্বন্দ্ব বোঝাতে এই প্রবাদ ব্যবহার করা হয়। আবার বিপরীত দিকও আছে- ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা-ভক্তি, স্নেহ-মমতার বিরল দৃষ্টান্তও দেখা যায়। ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসার এমনি এক বিরল দৃষ্টান্ত গড়লেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের সোয়েব আহমদ।

মেজো ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিয়েছেন তিনি। এদিকে ছোট ভাইয়ের দেওয়া কিডনি পেয়ে নতুন জীবন পেয়েছেন হাফিজ রহুল আমিন।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বালিশ্রী গ্রাম।

ওই গ্রামের বাসিন্দা মরহুম জহির আলীর তিন ছেলে। বড় ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রেদোয়ান বিন জহুর, মেজো ছেলে হাফিজ রহুল আমিন ও ছোট ছেলে সোয়েব আহমদ সিলেটের মদনমোহন কলেজের শিক্ষার্থী। মেজো ছেলে হাফিজ রহুল আমিন কয়েক বছর ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানোর পরও তিনি সুস্থ না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হাফিজ রহুল আমিনকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা তাকে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার জানান হাফিজ রহুল আমিনের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তাকে বাঁচানোর জন্য কিডনি লাগবে।

এ কথা শোনার পর ছোট ভাই সোয়েব আহমদ তার পরিবারের সদস্যদের জানান- তিনি তার ভাইকে একটি কিডনি দেবেন। পরে গত বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে এই কিডনি ট্রান্সফার করা হয়। বিকেল ৩টা থেকে অপারেশন শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার অপারেশনের পর ছোট ভাই বড় ভাইকে কিডনি দিয়ে বাঁচিয়ে তোলে। অপারেশনের সময় তাদের মা জায়েদা বেগম বড় বোন আলফা বেগমসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

জায়েদা বেগম জানান, তার তিন ছেলে নিবিড় পারিবারিক বন্ধনে বেড়ে ওঠেছেন। তাদের একে অন্যের প্রতি গভীর মায়া-মমতা রয়েছে। কোনো রকম আপত্তি ছাড়াই সোয়েব তার বড় ভাইকে একটি কিডনি দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। দুই ভাই এখন সুস্থ আছে। তারা হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

বড় বোন আলফা বেগম জানান, তাদের ভাইদের মধ্যে বন্ধন অনেক গাঢ়। ছোট থেকে বড় হয়েছে তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া-বিবাদ হয়নি। তাদের পরিবারের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

চাচাতো ভাই শামছ উদ্দিন জানান, বর্তমান যুগে ভাই-ভাইয়ের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক বেশি বিরাজ করে। বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে একে অন্যকে খুন করতে দ্বিধা করে না। অথচ ছোট ভাই সোয়েব এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ভগ্নিপতি কাজী আহমদ জানান, ভ্রাতৃত্বের প্রতি সীমাহীন আস্থা ও ভালোবাসা থাকার কারণে এমনটি সম্ভব হয়েছে, যা এখনকার যুগে দুষ্প্রাপ্য। এই ভাইদের মঙ্গল কামনায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2