পথে পথে সেতু কাঁদে!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৬ জুলাই,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৬ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫২৯টি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে সংযোগ সড়কের অভাবে ৫৫টি সেতু অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। অন্যদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নের অধীনে ১৪টি সেতু রয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও সেতু বিভাগের অধীনে নির্মিত হয়েছে পাঁচটি সেতু। নতুন করে আরো ৫২টি সেতু প্রস্তাবনায় রয়েছে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, অপরিকল্পিতভাবে এসব সেতু নির্মাণের পেছনে শত কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সরেজমিনে পুরো উপজেলা প্রায় তিন মাস ধরে ঘুরে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন আমাদের রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি রাসেল আহমেদ ২২ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ | পড়া যাবে ১০ মিনিটেপ্রিন্ট
৬০ পরিবারের জন্য সাতটি সেতু
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাঞ্চন পৌরসভার বিরাব এলাকার এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য কেন্দুয়া-স্বর্ণখালী খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সাতটি সেতু। এ সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছে জোট সরকারের আমলে। এর কোনোটি পৌরসভার অর্থায়নে, কোনোটি উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরাদ্দে, আবার কোনোটি নির্মাণ করেছে এলজিইডি। ৯ লাখ, ১০ লাখ বা ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ সাতটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে খালের এক পাড়ের লোকজনের আরেক পাড়ে যাওয়ার জন্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র ৬০টি পরিবারের জন্য সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। একটি সেতু রয়েছে, যেটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। পৌরসভার অর্থায়নে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতু দিয়ে সারা দিনে পাঁচজন লোকও চলাচল করে না বলে স্থানীয়রা জানায়। বিরাব এলাকার কৃষক মাহবুবুর রহমান বলেন, 'একটা ছোড খালে এতডি বিরিজ কি দরকার আছিল? হুদাহুদি সরকারের টেকা খরচ। কত রাস্তা ভাঙাচোরা। হেগুলাইন মেরামত করার খবর নাই।'
কাঞ্চন পৌরসভার সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, 'এ সেতুগুলো করা হয়েছে এক পাড়ের লোকজনের আরেক পাড়ে যাতায়াতের জন্য।' একটি সেতুর রাস্তা না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, 'রাস্তা করার পরিকল্পনা ছিল। এখন আমি দায়িত্বে নেই।'
সংযোগ সড়ক নেই ৭৭টির
রূপগঞ্জের নবগ্রাম এলাকায় একটি সেতু রয়েছে। সেতুর নিচে খাল। দুুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। তাই সেতু দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানায়, গত সরকারের আমলে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। তারাবো পৌরসভার দক্ষিণ মাসাবো এলাকায় পাউবোর খালের ওপর একটি সেতু রয়েছে। এটির একপাশে বেড়িবাঁধ। আরেক পাশে ইরি-বোরো চাষের জমি, কোনো রাস্তা নেই। স্থানীয়রা জানায়, এ সেতু এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসে না। দাউদপুর ইউনিয়নের হানকুর থেকে জিন্দা যাওয়ার রাস্তায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে। গত আট বছরেও ওই সেতুর সংযোগ সড়ক তৈরি হয়নি। স্থানীয়রা জানায়, এলজিইডি সেতুটি অহেতুক নির্মাণ করেছে। শীতলক্ষ্যা নদীর মুড়াপাড়া-ইছাখালী এলাকায় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। অথচ সেতু বরাবর কোনো রাস্তা নেই। সেতুটির দুই পাশেই গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে রয়েছে সরু রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার চলাচলের মতো জায়গা রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, সেতুর প্রয়োজন রয়েছে। তবে এত বড় সেতু অনুযায়ী বড় রাস্তা নেই। সরেজমিনে গিয়ে এ রকম ৫৫টি সেতু পাওয়া গেছে, যেগুলো সংযোগ সড়কের অভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র মতে, সংযোগ সড়ক নেই প্রায় ৭৭টি সেতুর।
পানিতে ডোবে সেতু
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রূপগঞ্জ-ইছাপুরা সড়কের দক্ষিণবাগ এলাকা থেকে একটি রাস্তা ফসলি জমির মাঝখান দিয়ে গিয়ে গুতিয়াবো এলাকায় মিশেছে। এ রাস্তা দিয়ে খুব কম লোকই চলাচল করে। এ সরু রাস্তার মাঝখানে গত জোট সরকারের আমলে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ব্যয় হয় ৯ লাখ ১২ হাজার ৪৩৮ টাকা। স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের বরাদ্দের টাকায় এটি নির্মাণ করা হয়। এর দুই বছর পর এ সেতুটির পাঁচ গজ দূরে আরো একটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। এটি নির্মাণে খরচ হয় ৯ লাখ টাকার ওপরে। বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা ও সেতু পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয় কৃষক জহিরউদ্দিন মিয়া বলেন, 'রাস্তার অবস্থা ভাঙাচোরা। অথচ পাশাপাশি দুটি সেতু।' বাঁশ-বেত কারিগর কফিলউদ্দিন মিয়া বলেন, 'বাজান, কনতো দেহি এ জায়গার মইদ্দে দুইডা বিরিজ ক্যান দিল? রাস্তা দিয়া মানুষ চলবার পারে না। হেরা দুইডা বিরিজ বানাইছে। একটা বিরিজের টেহা দিয়া রাস্তাডা ভালা কইরা বানাইয়া দিত। আর বরষা মাস আইলে তো কতাই নাই। পানিতে হগল ডুইব্বা যায়গা। কি লাভ এমুন বিরিজ কইরা?'
আছে যমজ সেতু
এদিকে দাউদপুর ইউনিয়নের বেলদী বাজার এলাকায় আরেকটি যমজ সেতু পাওয়া গেছে। বেলদী বাজার থেকে পলখান যেতে পাশাপাশি দুটি সেতু রয়েছে। যমজ সেতুর একটির ৯ মিটার স্প্যানের সেতুর ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৯৯৬ টাকা। এ সেতুটির ঠিকাদারপ্রতিষ্ঠান ছিল মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজ। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এলজিইডি এটি নির্মাণ করে। এর পাঁচ গজ দূরের সেতুটির ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের নলপাথর এলাকায় যমজ সেতু পাওয়া গেছে। সড়কের পাশে সরু রাস্তার মাথায় একটি সেতু রয়েছে। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৯ লাখ টাকা। এর আরেক পাশে ফসলি জমি। এখান থেকে ২০ গজ দূরে আরেকটি সেতু। ওই সেতুর পাঁচ গজ পরে কোনো রাস্তা নেই। শুধু ফসলি জমি আর জমি। সেতুটির আশপাশে আট থেকে ১০টি পরিবারের বাস। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের অর্থায়নে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প। ওই এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'এ সেতুটি কারো কাজে আসে না।'
নিয়ম-নীতি মানা হয়নি
সেতু নির্মাণের আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান রয়েছে। এ নিয়মের বাইরে নয় সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়। কিন্তু এলজিইডি, সওজ উপজেলার বিভিন্ন খাল ও নদের ওপর সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে এ নিয়মের তোয়াক্কা করেনি। কিছু সেতু মাঝনদে করা হয়েছে। পরে দুই পাড়ে মাটি ফেলে অবৈধভাবে নদ সংকুচিত করা হয়েছে। শেষে সেতু বরাবর নদের পাড় দখল করে নেন প্রভাবশালীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদ ও খালের দুই পাড় সংকুচিত করে সেতু নির্মাণের ফলে তলদেশ ভরাট হয়ে চর জাগে। এতে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি, জলজ সম্পদ কমে যাওয়াসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এ ছাড়া পানিপ্রবাহ বাধা পেয়ে নদ ও খাল মরে যাচ্ছে। তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে নদের দুই পাড় প্লাবিত হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে সেতু নির্মাণের ফলে নৌ-চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
সৌন্দর্য বর্ধনে ৫৪ সেতু
রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ৫৪টি সেতু নির্মাণ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এসব সেতুর অধিকাংশের দুই পাশে সড়ক নেই। দীর্ঘদিন ধরে এগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এক সময়ের খালের (রাজউকের প্রস্তাবনায় লেক) ওপর এসব সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তবে বাস্তবে সেসব স্থানে লেক দেখা যায়নি। এসব সেতু নির্মাণে কোনোটির খরচ পড়েছে ১৫ লাখ। আবার কোনোটি ২০ লাখ। আবার কোনোটি ৩০ লাখ টাকা। এসব সেতু কেউ ব্যবহার না করায় প্রতিটি সেতুতে শেওলা ধরেছে। কোনো কোনোটির সামনে জঙ্গল হয়ে আছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, 'উপশহরের সৌন্দর্যের জন্যই এগুলো বানানো হয়েছে।' নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, 'এত সেতুর কোনো দরকার ছিল না।'
ঝুঁকিপূর্ণ সেতু মেরামত হবে কি?
সরেজমিন ঘুরে শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দেখা গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত তারাব-ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতু। সেতুর নিচে অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা করায় সেটি ঝুঁকিতে পড়েছে। এর জয়েন্টের প্লাস্টার কভার নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে দেখা দিয়েছে বিশাল সুড়ঙ্গ। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদের ওপর কাঞ্চন সেতুও ঝুঁকিপূর্ণ। ১৯৯২ সালে এক কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু নদের চনপাড়া-ডেমরা সেতুর চারটি পিলারের পলেস্তরা খসে পড়েছে। সওজের তালিকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুটির স্প্যানের মাঝখানে ইটের গাঁথুনি দিয়ে ঝুঁকি ঠেকানো হয়েছে। ইছাপুরা-ডুমনি সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ। ১৯৯২ সালে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া নগরপাড়া, কেওঢালা, নিমেরটেক ও বিরাব খালের ওপরের সেতুগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এগুলো মেরামতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোনো উদ্যোগের কথা বলতে পারেনি।
এক দশকেও হয়নি বালু নদের সেতু
'বাপ, মরণের আগে বুঝি এ বিরিজ দেইহা যাইবার পারুম না। স্বাদীনের পর থেইক্যা হুইনতাছি এহান দিয়া বিরিজ অইবো। বারোডা বছর অইছে পায়া (স্প্যান) বানাইয়া খাড়া কইরা থুইছে। আর বানানের খবর নাই।' এভাবে বালু নদের সেতুর পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলেন তালাশকুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব জয়নাল মিয়া। সওজ সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত রামপুরা-কায়েতপাড়া সড়কের বালু নদের ওপর তৃতীয় সেতুর প্রকল্প অনুমোদন হয় ২০০১ সালে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন ছয় কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতুর নির্মাণ শুরু হয় ২০০৩ সালে। এক বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব পান তৎকালীন ঠিকাদার (বর্তমানে পলাতক) জাহিদ মিয়া। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে বরাদ্দ মেলে ৫০ লাখ টাকা। এরপর আর কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে চারটি পিলার নির্মাণের পর কাজ বন্ধ হয়। সেতুটি নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করলেও কোনো কাজ হয়নি।
নির্মাণে দুর্নীতি
কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, যত্রতত্র সেতু নির্মাণের প্রধান কারণ দুর্নীতি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব সেতু নির্মাণে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় হওয়া প্রায় শত কোটি টাকা এখন অপচয় হিসেবে জনগণের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। স্থানীয় রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিরাই মূলত এ দুর্নীতির হোতা। তবে তাঁদের সঙ্গে সওজ, এলজিইডি, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ পাওয়া গেছে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী নাসিরউদ্দিন মিয়া বলেন, এলজিইডির কোনো অপরিকল্পিত সেতু নেই। যদি থেকেও থাকে, সেগুলো বিগত সরকারগুলোর আমলে নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসেন বলেন, 'গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা সেতুর প্রস্তাব দেন। আমরা তো জানি না কোথায় সেতু লাগবে। তাঁরাই তালিকা দেন। আমরা কোনো অব্যবহৃত ও অপরিকল্পিত সেতু করিনি। আমার সময় তিনটা সেতু করেছি। এগুলো একদম সঠিকভাবে করা হয়েছে। যদি কোথাও থেকে থাকে সেগুলো বিগত সরকারের আমলে হয়তো করেছে।' পাউবো এনএনআইটি শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ দস্তগীর বলেন, 'পাউবোর খালের ওপর যেসব সেতু করা হয়েছে, এগুলো লোকজনের পারাপারের জন্য। সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে, ৫০০ মিটার পর পর সেতু করা যাবে। এর কমে হয়ে থাকলে, সেটা বিশেষ কারণে হয়েছে।' রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লোকমান হোসেন বলেন, যেসব সেতুর সংযোগ সড়ক নেই ও ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর বেশ কিছু সেতু করা হয়েছে কৃষকদের সুবিধার্থে। কৃষিপণ্য নিয়ে যেন তারা আসা-যাওয়া করতে পারে। এর পরও যদি অপরিকল্পিত ও অব্যবহৃত সেতু থাকে সেগুলো ব্যবহার উপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সড়ক ও সেতু বিভাগের (সাবেক সওজ) নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী রোশনী-এ-ফাতেমা বলেন, 'সওজের বালু নদের ওপর সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এটি নতুন করে করার পরিকল্পনা রয়েছে।' অপরিকল্পিত সেতুর ব্যাপারে তিনি বলেন, 'সওজের অপরিকল্পিত কোনো সেতু নেই।'