বিএনপির কমিটিতে থাকার অভিযোগে ২ প্রাথমিক শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১১:১৯ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে থাকার অভিযোগে রংপুরের পীরগাছায় দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
অধিদফতরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক জানিয়েছেন, সরকারি চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোজাহিদুল ইসলাম বুলেট জানান, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আফতাব উদ্দিন হাসিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারী জুলফিকার এবং একই ইউনিয়নের আলহাজ আব্দুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলতাব হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আলতাব হোসেন ছাওলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং আব্দুল বারী জুলফিকার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি চাকরি বিধামালা ১৯৭৯ সালের ২৩ ও ২৫(১) ধারা লংঘনের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বরখাস্তকৃত আব্দুল বারী জুলফিকারকে দেয়া নোটিশ।
তিনি আরও জানান, সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া এ দুই শিক্ষক সরকারি চাকরিতে কর্মরত থেকে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ করেন এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে আসছেন, যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা লঙ্ঘন ১৯৭৯-এর ২৩ ধারা এবং ২৫(১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি আরও জানান, ২৩ ধারায় বলা আছে, সরকারি কর্মচারী নিজ নামে প্রকাশিত কোনো লেখায় বা তার কর্তৃক জনসমক্ষে প্রদত্ত বক্তব্যে অথবা বেতার-টেলিভিশনে সম্প্রচারে কোনো বক্তব্যে এমন কোনো বিবৃতি বা মতামত প্রকাশ করতে পারবেন না, যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে পারে। আর ২৫ ধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হতে বা কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোনো প্রকারেই সহযোগিতা করতে পারবেন না।
এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে তাদের বিরুদ্ধে বরখাস্তের চিঠি ইস্যু হয়। দুই শিক্ষক চিঠি গ্রহণ করেছেন।
বরখাস্তকৃত দুই শিক্ষক আলতাব হোসেন ও আব্দুল বারী জুলফিকার জানান, তারা রাজনৈতিক সব পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তবে শিক্ষা অফিসে অব্যাহতির কোনো কাগজ এখনও জমা দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ রংপুরের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা আওয়ামী লীগের অনেক পদ পদবী বহন করছে এবং প্রকাশ্যে দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হলেও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা হওয়ায় ওই দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা অমানবিক। তারা আগেই পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।