গ্রামের নাম ভন্ডগ্রাম, এ নিয়ে বিড়ম্বনা, পরিবর্তনের দাবি স্থানীয়দের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:৪৭ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
গ্রামটির নাম ভণ্ডগ্রাম। এ নামেই রয়েছে স্কুল, হাট-বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। নিজের গ্রামের নাম বললেই হাসি-ঠাট্টা, কটাক্ষ ও বিদ্রুপের শিকার হতে হয় গ্রামবাসীকে। এমন কটাক্ষ থেকে বাদ পড়ে না স্কুলের শিক্ষার্থীরাও। তাই গ্রামটির নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের একটি গ্রামের নাম ভণ্ডগ্রাম। গ্রামটিতে রয়েছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, সুজলা-সুফলা ফসলের মাঠ আর চারপাশে সবুজের সমারোহ। সকালবেলা গবাদিপশুসহ কৃষক-কৃষাণীর মাঠে বেড়িয়ে যাওয়া, শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়া, তপ্ত দুপুরে বয়ে যাওয়া ছোট নদীতে কিশোরদের গোসল আর বিকেলে গ্রামে বসা হাটে চলে কেনাবেচা। একটি আদর্শ গ্রামের যা বৈশিষ্ট্য তার সবকিছুর যেন উদাহরণ গ্রামটি।
তবে গ্রামটির নাম নিয়ে জটিলতার শেষ নেই। নিজের নাম বা পেশার পরে গ্রামের নাম বললেই কটাক্ষ আর উপহাসের সম্মুখীন হতে হয় এলাকাবাসীকে। গ্রামের নাম বললেই ‘ভণ্ড’ বলে সম্বোধন করে বসেন অনেকে। যদিও কী কারণে এর নাম ভণ্ডগ্রাম হল তা জানেন না এলাকার কেউও। গ্রামের এমন নাম প্রভাব ফেলছে পড়াশোনা, চাকরি, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে। নামটি বদলে দিয়ে নতুন কোনো নাম হলে এমন বিড়ম্বনা থেকে বাঁচবে এলাকার মানুষ।
ভণ্ডগ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, আমাদের গ্রামের কথা কেউ জিজ্ঞাসা করলে, যখন বলি ভণ্ডগ্রাম, তখন আমাদের বলে তোমাদের কি কেউ ভণ্ড ছিল নাকি? সেজন্য তোমাদের গ্রাম ভণ্ডগ্রাম হয়েছে। ফরিদুল ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, দাদাদের বাবা বা বড় যারা রয়েছে তাদের জিজ্ঞাসা করতাম যে, আমাদের গ্রামের নামটা কীভাবে এসেছে, তারাও গ্রামের নাম কীভাবে এসেছে তা জানেন না। কালের বিবর্তনে পূর্ব থেকে আমাদের গ্রামের নাম ভণ্ডগ্রাম হয়ে এসেছে। এখনো ভণ্ডগ্রাম রয়ে গেছে।
স্কুলছাত্রী হাদিসা বলেন, আমাদের কেউ যখন জিজ্ঞাসা করে যে কোন স্কুলে পড়ো, যখন বলি যে আমরা ভণ্ডগ্রাম স্কুলে পড়ি, তখন সবাই আমাদের দিকে কেমন করে যেন তাকায়। কখনো কখনো হাসি ঠাট্টা করে। নন্দুয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, এই গ্রামের নাম পরিবর্তন হওয়া দরকার। গ্রামের নামটা শুনতে কেমন শোনা যায়। এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো ভণ্ড নামে পরিচিতি লাভ করছে। এই শব্দটা খুব অশোভনীয়। আমরা চাই গ্রামের নাম পরিবর্তন হোক।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, ভণ্ডগ্রাম নামের কারণে বিরুপ প্রভাব পড়ছে গ্রামটিতে। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় বিদ্যালয়গুলোর নাম পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, গ্রামের নাম পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদ্যালয়গুলোর নাম পরিবর্তনে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।