ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরে বাড়িঘরে আগুন, আটক ৪২
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩৪ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
রংপুরের পীরগঞ্জে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪২ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, বিজিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ জেলা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নের্তৃবৃন্দ এবং জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির নের্তৃবৃন্দ।
স্থানীয় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রোববার রাতে ধর্ম অবমাননার পোস্ট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের সংখ্যালঘুদের পরিবারে হামলা চালায় প্রতিবেশীরা। পরে ঘটনার রেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বড় করিমপুর কসবা গ্রামে। রাতের আধারে গ্রামের ২৫ বাড়িতে আগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে দুর্বৃত্তদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এসময় পুড়ে ছাই হয় ৬৬ পরিবারের সহায় সম্বল।
জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার জানিয়েছেন, এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক ও সংখ্যালঘুদের জান মাল নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাবসহ ১৬ প্লাটুন বিজিবি। ফায়ার করা হয় ৬১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ১০ রাউন্ড টিয়ারসেল। রাতভর অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় ৪২ জনকে। ইতিমধ্যে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছে। প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দুর্বৃত্তদের তান্ডব লিলায় গজর বাড়ি থেকে পালিয়ে থাকা মানুষরা বাড়িতে ফিরলেও আতংক কাটেনি তাদের।
বড় করিমপুরের এলাকাবাসী উজালি রানী, ননিগোপাল, রানীবালা, সুভাষচন্দ্র রায়সহ অনেকেই জানিয়েছেন চোখের সামনে চেনা মুখগুলো এসে পেট্রল ঢেলে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল, হাতে পায়ে ধরলাম কিন্তু একদল অপরিচিত মানুষ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ঘরে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণ, গরু ছাগল লুট করে নিয়ে যায়। রাতভর অভুক্ত থেকে কান্নার শক্তিও নেই শরীরে।
দিন মুজরি করে জীবন চলা এসব মানুষরা ন্যায় বিচার চেয়েছেন সরকারের কাছে।
সোমবার সকালে পুরো দুটি গ্রামকে নিরাপত্তার শেকলে বন্দি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূইয়া, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রেজাউল করিম রাজুসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
এ সময় রেঞ্জ ডিআইজি ক্ষতগ্রস্থদের শান্তনা দিয়ে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন আর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ভুইয়া তাদের ক্ষতিপূরনসহ স্বাভাবিক জিবনে ফিরে আনতে সব ধরণের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, তেল, লবন, চিনিসহ ১৪ কেজি করে খাদ্য সামগ্রী, ১০০ বান্ডিল ডেউ টিন ও পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা সহযোগিতা করেন। এতে অন্যান্যদের মত উপস্থিত ছিলেন পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোধা রানী রায়, উপজেল পুজা উৎযাপন কমিটির আহবাহক সুধীর চব্দ রায়, বিজিবির উওর পশ্চিম বিজিওনের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইয়াছির, ৫১ বিজিবির অধিনায়ক ইসহাক আহম্মেদ।