১৫ লাখ টাকার মসজিদের জমি ৭৭ হাজারে বিক্রি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৪ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০৭:০৪ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
রংপুরের বদরগঞ্জে জালিয়াতি করে মসজিদের ১৫ লাখ টাকার জমি মাত্র ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রির গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মসজিদ কমিটির সদস্যরা স্থানীয় থানায় পূর্বের কমিটির সভাপতিসহ অন্য সদস্যদের নামে লিখিত অভিযোগ দিয়ে জমি ফেরতের জোর দাবি করেছেন। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের উত্তর বাওচণ্ডি এরশাদ ব্রিজ এলাকায়।
স্থানীয় ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছর আগে যমুনেশ্বরীর ওপর এরশাদ ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত পুরাতন মসজিদ ভেঙে বহুতল মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন ওই সময়ের কমিটির সভাপতি নুর হোসেনসহ ১১ জন সদস্য। স্থানীয়ভাবে তারা সহযোগিতা নিয়ে মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেন। এর মধ্যে স্থানীয় এমপির পক্ষ থেকে সাড়ে তিন লাখ বরাদ্দ দেওয়া হয় নির্মাণ কাজের জন্য। এতে মসজিদের কাজ শেষ না হওয়ায় মাঝপথে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে বাকি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য কমিটির সদস্যদের চোখ পড়ে একই এলাকার বদরগঞ্জ পৌরসভার পাশে মসজিদের ১০ শতাংশ জমির ওপর। ওই জমি বিক্রির পাঁয়তারা করেন কমিটির সদস্যরা। একপর্যায়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকার জমি অতিগোপনে মাত্র ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। ওই জমি কেনেন মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ সারাফাত হোসেন নামে এক ব্যক্তি।
বর্তমান কমিটির সদস্যদের অভিযোগ- ১৫ লাখ টাকার জমি কিভাবে মাত্র ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রি করলেন তারা! তাদের অভিযোগ, মসজিদ নির্মাণের মাত্র ৭৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সদস্যরা। এ নিয়ে বর্তমান কমিটির সদস্যের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে বিষয়টি সুরাহা করতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বর্তমান কমিটির সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।
আগের কমিটির সদস্য মজনু মিয়া বলেন, জমি বিক্রির সময় আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি বুঝতে পেরে নিষেধ করি। কোনো কাজ হয়নি।
বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান ওই জমির বাজার দর কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা। পূর্বের কমিটির অনেক সদস্যের স্বাক্ষর ও টিপসই জাল করে ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি করা হয়েছে। এতে মসজিদ নির্মাণের টাকাও নয়ছয় করে আত্মসাত করা হয়েছে। ওই টাকার হিসেব তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
পূর্বের কমিটির সভাপতি নুর হোসেন বলেন, মসজিদ নির্মাণের সময় হাতে কোনো টাকা ছিল না। এ কারণে সবার সঙ্গে আলোচনা করে জমি বিক্রি করা হয়। অনেকের স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
বদরগঞ্জ থানার এসআই অরুপ দত্ত বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি এভাবে পানির দরে বিক্রি কোনোভাবেই উচিত হয়নি। বিক্রেতারা ভুল স্বীকার করে জমি ফেরত নেওয়ার কথা বলেছে। এমনকি ভুয়া স্বাক্ষী দিয়ে জমি বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন তারা। সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার জানান, বিষয়টি সমাধান করতে জমি বিক্রেতার কমিটির সদস্য হাজি নুর ইসলামকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। সে জমি ফেরত নেওয়ার জন্য চেষ্টা করবে বলে কথা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শান্তনু ঘোষ সাগর বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।