রাশেদুল ইসলাম
মিথ্যামুক্ত সমাজ
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ জানুয়ারী, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৪৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
যে সমাজে কেউ মিথ্যা কথা বলে না, সেই সমাজকে মিথ্যামুক্ত সমাজ বলা যেতে পারে । পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, যে সব দেশের মানুষ মিথ্যে কথা বলে না । আমি প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটানে আটবার গিয়েছি । আমার জানামতে ভুটানের মানুষ মিথ্যে কথা বলে না । কিন্তু আমাদের দেশে মিথ্যে কথা বলা অতি সাধারণ ব্যাপার । পৃথিবীর সকল ধর্মেই মিথ্যাকে মহাপাপ হিসেবে গণ্য করা হয় । এ দেশের মানুষ জন্মগতভাবে ধর্মভীরু হলেও, এখানে আমরা সবাই মিথ্যে কথা বলি । কেউ কম বলি; কেউ বেশী বলি । এখন সমাজে মিথ্যা কথার জয় জয়কার । মিথ্যা কথা বলা, কাউকে মিথ্যাকথা বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা এবং যেকোন ভাবে নিজের স্বার্থ হাসিল করা- সমাজে তেমন কোন অপরাধ নয় । টেলিভিশনের প্রচার মাধ্যমে এখনকার নাটকের নাম ফেরেববাজ, ধান্দাবাজ – এই ধরণের । আগে এসব নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে খলনায়কেরা অভিনয় করতেন । এখন নাটকের মূল নায়ক এসব চরিত্রে অভিনয় করেন । মজার ব্যাপার এসব নাটক এখন দর্শক নন্দিত । এ ধরণের কঠিন বাস্তবতায় বাংলাদেশ একটি মিথ্যামুক্ত দেশ হবে - একথা বলা নিতান্ত হাস্যকর । কিন্তু অর্পন- দর্পন স্মৃতি ফাউনডেশন মনে করে, যথাযথ কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশকে একটি মিথ্যামুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব ।
অর্পন- দর্পন স্মৃতি ফাউনডেশন বাংলাদেশে একটি মিথামুক্ত সমাজ গড়ার কৌশল হিসেবে একটি ধারণাপত্র তৈরি করেছে । এটি একটি পুস্তক আকারে প্রকাশিত হচ্ছে । বইটির নাম ‘ধর্মের প্র্যাকটিক্যাল’ । বইটির লেখকের কথায় বলা হয়েছে-
“এ উপমহাদেশের মানুষ প্রকৃত অর্থেই ধর্মভীরু । ধর্মবিশ্বাস একেবারে তার মনের গভীরে গ্রোথিত । কিন্তু এটা তার একান্তই বিশ্বাস । এই বিশ্বাসের কারণে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া, বাস্তব কোন রূপ আছে কিনা, বা বাস্তব দৈনন্দিন কাজে ধর্মের কোন প্রতিফলন থাকবে কিনা- এসব নিয়ে তেমন কোন কথা তার জানা নেই । কখনো এ বিষয়ে তেমন ভাবে বলাও হয়নি তাকে । আবহমান কাল থেকে চলে আসা এ ব্যবস্থায় ধর্মবিশ্বাস এবং কর্ম এক ধরণের সমান্তরাল অবস্থানে চলে আসছে । আমাদের দেশও এ অবস্থার ব্যতিক্রম নয় । ফলে এখানে মানুষের ধর্মপালনের সাথে, তার কর্মের কোন সম্পর্ক নেই । এর নেতিবাচক দিক হচ্ছে, যেহেতু মানুষের ধর্মবিশ্বাস প্রবল, এ কারণে নিজের ধর্ম তার জন্য খুবই স্পর্শকাতর বিষয় । কিন্তু প্রার্থনা করা ছাড়া ধর্মের বাস্তব রূপ বিষয়ে যেহেতু তার ধারণা পরিস্কার নয়, এরুপ ক্ষেত্রে যে কেউ তাকে ধর্মের স্বরূপ বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রভাবিত করতে পারে । এ অবস্থা সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার পরিপন্থী । অথচ ধর্মের মূল লক্ষ্য সামাজিক শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন । ধর্মের যে বিশ্বাস মানুষ হৃদয়ে লালন করে, যে বিশ্বাস নিয়ে সে মহান সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করে, সেই বিশ্বাসের বাস্তবরূপ তার দৈনন্দিন কাজকর্মে প্রতিফলিত হলে, একদিকে মানুষের ধর্মপালন পূর্ণতা পেতে পারে; অন্যদিকে সামাজিক শান্তি বজায় রাখা নিশ্চিত হতে পারে । ‘ধর্মের প্রাকটিকাল’ গ্রন্থে এসব বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে । মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে মানুষের ধর্ম বিশ্বাস এবং তার বাস্তব কাজের ব্যবধান কমানো সম্ভব । সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আমাদের আলেমগণ এবং স্ব স্ব ধর্মের ধর্মীয় নেতাগণ এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন । এ দেশে বসবাসরত সকল ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হতে পারে । এ গ্রন্থে বিষয়টি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে” ।
বাংলাদেশে প্রকৃত ধূমপান বিরোধী আন্দোলন শুরু হয় ২০০৫ সালে । এ বছর ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ জারী করা হয় । সে সময় সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে হাতেগোণা কিছু ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ধূমপান বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন । তখন যেখানে সেখানে ধূমপান করা অতিসাধারণ বিষয় ছিল । বাস, ট্রেন এমনকি শিক্ষা