avertisements 2
Text

রাশেদুল ইসলাম

ধর্মের প্রাকটিকাল

প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৪৪ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৫

Text

খবরটা পুরানো । আমি  সেদিনের  সেই পুরানো কাগজটা  আবার পড়ি ।

সম্প্রতি মহামান্য আদালত ঢাকার আমিনবাজারে ৬ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যাকাণ্ডের সেই মামলার রায় দিয়েছেন । বিচারে  এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে । খবরটা পড়ার পর থেকে সেই  ৬ জন ছাত্রের আর্তচিৎকার আমার কানে ভেসে আসছে যেন । ঘুমের মধ্যেও সেই ভয়ার্ত ছেলেদের মুখ আমি দেখি । বাধ্য হয়েই দু’ এক কথা লেখা ।

ঘটনাটা ২০১১ সালের । সেবার শবেবরাতের রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর -মিরপুর এলাকায় থাকা ৭ জন কলেজ ছাত্র আমিন বাজারের বড়দেশী গ্রামসংলগ্ন  কেবলার চরে বেড়াতে যায় । সে সময় গ্রামের মানুষেরা তাদের ডাকাত সন্দেহ করে । তারা অনেক কাকুতি মিনতি করে জানায় যে,  তারা ছাত্র;  শবেবরাতের রাতে তারা বেড়াতে বেরিয়েছে । কিন্তু  তাদের কথা কেউ বিশ্বাস করেনি । শেষ পর্যন্ত গণপিটুনিতে করুণ ও নির্মম মৃত্যু হয় তাদের । তাদের একজন বন্ধু আল আমীন দৈবক্রমে বেঁচে না গেলে,  মৃত ৬ জন ছাত্রের  বাবামাকে ডাকাতের বাবামা হিসেবেই  আজীবন সামাজিক ঘৃণা পেতে হত । এই রায় ঘোষণার মাধ্যমে বিচারক সেই বাবামাদের ডাকাতের বাবামা হওয়ার ঘৃণ্য  অপবাদ থেকে মুক্তি দিলেন ।

যেকোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সেই ধর্মের মানুষের কাছে খুবই স্পর্শকাতর । এ ধরণের উৎসবের দিনে যারা আপনজন থেকে দূরে থাকে,  তারা এক ধরণের নস্টালজিয়ায় ভোগে । আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম । আমরাও শবেবরাতের রাতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি । অনেকে এই রাতে একাধিক মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ নিয়ে থাকে  । অনেক মসজিদে শবেবরাতের নামাজের মোনাজাত ফজরের নামাজের সময় হয় । যে যেখানেই নামাজ পড়ুক, সবাই নামাজের সেই মোনাজাতে শরিক হতে চায় ।  আমিনবাজার হত্যাকাণ্ডে মোট সন্দেহভাজন আসামীর সংখ্যা ৯২ জন ছিল বলে জানা যায় । খোঁজ নিলে দেখা যাবে, ৯২ জন আসামীর একটি বড় অংশ সেই হত্যাকাণ্ডের আগে বা পরে শবেবরাতের নামাজ পড়েছে । কিন্তু এই সব নামাজীর কারো মনে সেই ছাত্রদের আর্ত চিৎকার কোন ধরণের সহানুভুতির সৃষ্টি করেনি । নামাজ বা শবেবরাতের পবিত্র রাত তাদের মনে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি ।  আমিন বাজার থেকে মোহাম্মদপুর বা মিরপুরের দূরত্ব খুব  বেশী নয় । তাদের বেঁধে রেখেও খোঁজ খবর নেওয়া যেত বা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা যেত । সে ধরণের মানবিক বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন কোন চিন্তা তাদের  কারো মধ্যে কাজ করেনি সে রাতে ।

অতি সম্প্রতি ব্রাজিলের একটি মহিষের খামারে ৫০০ টি মহিষ না খেয়ে মারা গেছে বলে খবরে প্রকাশ । খামারের মালিক ব্যবসা পরিবর্তনের কারণে সেই খামারে  মহিষের খাবারের কোন ব্যবস্থা করেনি । ৫০০ টি মহিষ মারা যাওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয় । সাথে সাথে বেসরকারি সংস্থার অনেক এনজিও কর্মী এগিয়ে আসেন । ছবিতে দেখা গেছে তাঁরা  ফিডার দিয়ে মৃতপ্রায় মহিষদের দুধ খাওয়াচ্ছেন । অনেককে মহিষদের গা পরিস্কার করতে দেখা গেছে । এভাবে তাঁরা ৬০০ টি মহিষের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছেন । খোঁজ নিলে দেখা যাবে এসব এনজিও কর্মীদের দলে একজনও  মুসলমান নেই । থাকলেও তাঁদের সেই সেবা চাকরি বা ব্যক্তিগত নীতিবোধ থেকে করা হয়েছে; নিজের  ধর্মীয় চেতনা বোধ থেকে নয় । কারণ, শুধু আমাদের দেশ নয়, আমার জানামতে,  কোন মুসলিম প্রধান দেশে মানুষের মত অন্যান্য প্রাণীদের জন্য দান করা বা সেবা  করা যে ধর্মের একটা বিধান,  একথা কোথাও বলা হয় না ।

আমাদের দেশের কেশবপুরের হনুমান গ্রামে বিরল প্রজাতির কালোমুখী হনুমানের বাস । ২০/৩০ বছর আগে সেখানে ৫ হাজারের অধিক হনুমান বাস করত বলে জানা যায়  । বর্তমানে সেই কালোমুখী  হনুমানের  সংখ্যা মাত্র ৪ শত । বলা যায় উপযোগী পরিবেশ এবং  খাদ্যের অভাবেই এই বিরল প্রজাতির প্রাণী দিনে দিনে নিঃশেষ হতে চলেছে । এই বিরল প্রজাতির হনুমান রক্ষা করাও যে একটা ধর্মীয় দায়িত্ব,  এটা জানা থাকলে অনেকেই তাদের উপযুক্ত পরিবেশ এবং  খাদ্য সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিক হতে  পারেন ।  প্রকৃতপক্ষে  শুধু  মানুষ নয়, অন্যান্য প্রাণীর  প্রতি দয়া করা, সেবা করার বিধান ইসলাম ধর্মে  থাকলেও আমাদের সেই বাস্তব শিক্ষা দেওয়া হয় না ।  বোখারি শরিফের একটি হাদিসে তৃষ্ণার্থ একটি কুকুরকে পানি খাইয়ে জীবন বাঁচানোর কারণে একটি বীরাঙ্গনা মহিলার বেহেশত যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে ।

আমার এসব   আলোচনার একটাই কারণ এই যে, আমি এ বিষয়ে মসজিদের ইমামসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই । আমাদের ধর্মচর্চার বিষয়টি  একেবারে তাত্ত্বিক না হয়ে, ধর্মের বাস্তব প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দেওয়া হলে,  এ সব  সমস্যার ধীরে ধীরে নিরসন হতে পারে । আর এ বিষয়ে মসজিদের ইমামগণই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন ।  

শুভ কামনা সকলের জন্য ।

১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ । ইস্কাটন, ঢাকা ।

বিষয়:
avertisements 2
বুলডোজার দিয়ে খুলনার ‘শেখ বাড়ি’ গুঁড়িয়ে দিল ছাত্র-জনতা
বুলডোজার দিয়ে খুলনার ‘শেখ বাড়ি’ গুঁড়িয়ে দিল ছাত্র-জনতা
ভাঙচুরের পর ধানমণ্ডি ৩২-এ আগুন দিল ছাত্র-জনতা
ভাঙচুরের পর ধানমণ্ডি ৩২-এ আগুন দিল ছাত্র-জনতা
এবার জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন পপি
এবার জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন পপি
সুইডেনে স্কুলে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক’ বন্দুক হামলা, নিহত ১০
সুইডেনে স্কুলে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক’ বন্দুক হামলা, নিহত ১০
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক করবে না সৌদি
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক করবে না সৌদি
স্বামীর কিডনি বিক্রির  অর্থ নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালালেন স্ত্রী!
স্বামীর কিডনি বিক্রির অর্থ নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালালেন স্ত্রী!
টিউলিপের অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত শুরু: দ্য টেলিগ্রাফ
টিউলিপের অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত শুরু: দ্য টেলিগ্রাফ
চিত্রনায়িকা পপির বিরুদ্ধে মা-বোনের গুরুতর অভিযোগ
চিত্রনায়িকা পপির বিরুদ্ধে মা-বোনের গুরুতর অভিযোগ
বাসায় ভালো লাগেনা তাই মুমিনের হাত ধরে চলে এসেছি : সুবা
বাসায় ভালো লাগেনা তাই মুমিনের হাত ধরে চলে এসেছি : সুবা
ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পাচ্ছেন সাফজয়ী ফুটবলার  সুমাইয়া
ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পাচ্ছেন সাফজয়ী ফুটবলার সুমাইয়া
আ. লীগের লিফলেট বিতরণ:  সেই বিসিএস কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
আ. লীগের লিফলেট বিতরণ: সেই বিসিএস কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা গুমের ঘটনায় জড়িত: এইচআরডব্লিউ
শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা গুমের ঘটনায় জড়িত: এইচআরডব্লিউ
‘যুদ্ধ-পরিস্থিতির’ ন্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ
‘যুদ্ধ-পরিস্থিতির’ ন্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ
মানহানির মামলায় সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির বিচার শুরু
মানহানির মামলায় সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির বিচার শুরু
নেতানিয়াহুর স্ত্রীর সারার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইসরায়েলের পুলিশ
নেতানিয়াহুর স্ত্রীর সারার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইসরায়েলের পুলিশ
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
দুনিয়ার সবচেয়ে আজব সেতু বাংলাদেশে!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
গাছের সঙ্গে বাঁধা সাত শিশু কাওছারের জীবন!
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
কারাগারে পরিকল্পনা, তিন মাসেই কোটিপতি ২ যুবক
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর  আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে দুই বাংলাদেশীর আকস্মিক মৃত্যু
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
সিডনিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুনী খুন
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন বিরোধীতায় অস্ট্রেলিয়ার ইমাম ও আর্চবিশপ
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
অস্ট্রেলিয়ার কারাগারেই আরেক বন্দিকে কোপালেন সেই বাংলাদেশি ছাত্রী সোমা
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
কিশোরীর সাথে যৌন সম্পর্কের চেষ্টাঃ সিডনিতে বাংলাদেশী ছাত্র গ্রেপ্তার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
হুইপপুত্রের গোপন ব্যবসার বলি তরুণ ব্যাংকার
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
খোলা চুলে সিগারেট হাতে এবার নতুন বার্তা দিলেন পরীমণি
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে সিডনির  দুই বাংলাদেশীর  মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
কুইন্সল্যান্ডে বারবিকিউ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককের আকস্মিক মৃত্যু
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
হাটে কচুর লতি বিক্রি নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
‘পারসন অব দ্য ইয়ারে’ ভূ‌ষিত হলেন বসুন্ধরা এম‌ডি
avertisements 2
avertisements 2