জো বাইডেন এখন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট

“This is the time to heal in America” - Joe Biden, the President-elect.
জো বাইডেন এখন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট। কামালা হ্যারিস আমেরিকার ২৪৪ বছরের ইতিহাসে highest-ranking প্রথম মহিলা। শনিবার রাতে ভিক্টোরি স্পিচ দিতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট জো বাইডেন বলেন, “It is a time to heal in America.” তিনি আরও বলেন, “I pledge to be a president who seeks not to divide but unify, who does not see red states and blue states, only sees the United States.”
কামালা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট তাঁর বক্তৃতায় ট্রাম্প জাতিকে বিভক্ত করে যে ক্ষত তৈরী করেছেন তা’ শুকোতে জো বাইডেনকে উপযুক্ত চিকিৎসক মনে করেন। কামালা মনে করেন যে বাইডেন বিভক্ত আমেরিকাকে একত্রিত করতে সমর্থ্য হবেন। তাঁর মতে বাইডেন একজন পরিক্ষীত এবং অভিজ্ঞতাপূর্ণ নেতা। কামালা বলেন, “আমিই হয়তো প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট; কিন্তু শেষ নই। আজ যে ছোট্ট মেয়ে শিশুরা আমার কথা শুনছে বা আমাকে দেখছে তাদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো।”
অপরদিকে ট্রাম্প এবং তাঁর সহযোগীরা ইলেকশন রেজাল্ট আদালতে চ্যালেলেন্জ করার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
বাইডেন তাঁর বক্তৃতায় বলেন পারষ্পরিক সমঝোতা করা যাক। তিনি ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করে বলেন যে তিনি ট্রাম্প সমর্থকদের হতাশা অনুভব করতে পারছেন। কারন, বাইডেন নিজেও দু’য়েকবার হেরেছেন বলে উল্লেখ করেন। বাইডেন বলেন তাঁর অফিস ভিন্ন বিশ্বাসের সমর্থকদের জন্য বিচ্ছিন্ন থাকবেনা। তিনি বলেন এখন রাজনৈতিক বাগাড়াম্বর বন্ধ করা যাক। তাপমাত্রা কমিয়ে পারষ্পরিক দেখা হোক, একে অপরকে শোনা যাক এবং সামনের দিকে এগুনো যাক। বাইডেন অবশ্য তাঁর ইলেকশন ক্যাম্পেইনের সময়ই বলেছেন তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন; কিন্ত তিনি নির্বাচিত হলে হবেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। বাইডেন একই সেন্টিমেন্ট শনিবার প্রতিধ্বনিত করেছেন। তিনি ট্রাম্প সাপোর্টারদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকরা আমাদের শত্রু নয়। তারা এবং আমরা সবাই আমেরিকান।
বাইডেনের বক্তৃতার শুরুতে লক্ষনীয় বিষয় ছিলো ডেলওয়ারা থেকে আগতদের মধ্যে একজনকে চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট করে বলছিলেন, “ওখানে রুথ এ্যান?” রুথ এ্যান ২০ বছর পূর্বে ডেলওয়ারার দু’ দু’বার গভর্নর ছিলেন। এ থেকে প্রমানিত হয় বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের সাথে কতোটা গভীর সম্পর্ক তৈরী করেছেন তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে। ১৯৯৬ থেকে ডেমোক্র্যাটরা সকল গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন ডেলওয়ারাতে জিতে আসছে।
বাইডেনকে গত কয়েক মাস খুব কম কথা বলতে দেখা গেছে। ট্রাম্পকে এক চেটিয়া সবাই কথা বলতে দেখেছে। ক্যাম্পেইন ট্রাইলেও নাতিদীর্ঘ বক্তব্য রাখতে দেখা গেছে। শনিবার রাতেও তাঁর ভিক্টোরী স্পিচ ১৫ মিনিটের বেশি ছিলোনা। কিন্তু দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই রাজনীতিক সংক্ষিপ্ত পাবলিক ব্রিফিংএ যথাযথ মেসেস দিতে সফল এবং সমর্থ্য হয়েছেন।
কামালা হ্যারিস বিজয় মন্চে সাদা পোষাক পরিধান করে আসলেন। বুকে আমেরিকার ফ্লাগ খচিত পিন সাঁটানো ছিলো। এ যেনো সেই শত বর্ষ পূর্বে আমেরিকায় নারীদের ভোট দেয়ার অধিকার আদায়ের প্রতীক বহন করছিলেন।
“সাদা রং মহিলাদের শুদ্ধতার প্রতীক।” আর এখন মনে হচ্ছে মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রতীক।
গত বছর আমরা ট্রাম্পের স্টেট অব ইউনিয়ন বক্তৃতার সময় অনেক মহিলা আইন প্রনেতাকে সাদা পোষাক পরিধান করতে দেখেছি।
জামাইকান বাবা এবং ইন্ডিয়ান মায়ের কন্যা শনিবার রাতে বিজয় ভাষনে গর্বিত উচ্চারনে আমেরিকার এক নম্বর ক্ষমতাধর মহিলা হওয়ার কথা বলছিলেন। এটি আমেরিকা তাই সম্ভব হয়েছে। যেমনটি বলেছিলেন কালো মানুষ ওবামা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর।
শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ০৮:৪০ এ উইলমিংটন চেজ সেন্টারের বিজয় মন্চে দৌঁড়ে উঠলেন এবং পার্কিং লটে উপস্থিত উল্লসিত জনতার দিকে তাকালেন বাইডেন। উল্লসিত জনতা আমেরিকান ফ্লাগ নেড়ে নেড়ে বিজয় ধ্বনি উচ্চারন করে, গাড়ীর হর্ন বাজিয়ে নেতাকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন।
বাইডেন বললেন, “এ জাতি তাদের কথা আমাকে বলে দিয়েছে। তারা আমাদেরকে পরিষ্কারভাবে বিজয়ী করেছেন। এ বিজয় আমাদের, এ বিজয় আমেরিকার জনতার।”
তিনি উচ্চস্বরে এ বিজয়ে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার কথা, ত্যাগের কথা বললেন। বিশেষ করে তাঁর স্ত্রী যীল বাইডেনের প্রশংসা করলেন। তিনি স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিগনের সহযোগিতার কথা বললেন। তিনি করোনাভাইরাসের সময়ে স্বেচ্ছাসেবকদের নিরন্তর কাজ করার জন্য প্রশংসা করলেন। বাইডেন তাঁর সমর্থকদের বললেন, “আপনারা জাতির কাছে বিশেষ ধন্যবাদ পাওয়ার এখতিয়ার রাখেন।”
বাইডেন বললেন তিনি প্রেসিডেন্সি জয়লাভের পথে ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান, স্বতন্ত্র, প্রগতিশীল, মধ্যপন্থী, কট্টরপন্থী, যুবক, বৃদ্ধ, শহুরে বা গ্রামীন, উপ-শহুরে,সাদা, ল্যাটিনো, এ্যাসিয়ান, নেটিভ আমেরিকান, গে, লেজবিয়ান. ট্রান্সজেন্ডার ইত্যাদি সবাইকে একত্রিত করতে পেরে গর্বিত বোধ করছেন। তবে তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানালেন আফ্রিকান-আমেরিকানদের যারা বরাবর ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন দিয়ে আসছেন। বাইডেন বললেন তিনি সকল আমেরিকানদের প্রেসিডেন্ট। তিনি ট্রাম্প সাপোর্টারদের প্রতি তাঁর হাত সম্প্রসারিত করার কথা বললেন।
বাইডেন তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার শেষাংশে বললেন তিনি সোমবারেই একদল বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞদের নাম ঘোষনা করবেন যাঁরা তাঁকে করোনাভাইরাস প্যানডেমিক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবেন। তিনি বললেন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত অর্থনীতির ক্ষতি পোষানো যাবেনা।
তাঁর প্রশাসনের করনীয় এবং তাঁর বিশ্বাসেরও একটা ধারনা দিলেন। তাঁর প্রশাসন সুবিচার নিশ্চিত করবে। তাঁর প্রশাসন শালীনতা নিশ্চিত করবে। তাঁর প্রশাসন বিজ্ঞান অনুসরন করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত করবে। তাঁর যুদ্ধ হবে উন্নয়ন নিশ্চিতকরন। তাঁর যুদ্ধ হবে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরন। তাঁর যুদ্ধ হবে ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরন। তাঁর যুদ্ধ হবে বর্নবাদ দূরীকরনের। তাঁর যুদ্ধ হবে বিশুদ্ধ পরিবেশ নিশ্চিতকরনের। তাঁর যুদ্ধ হবে গনতন্ত্র রক্ষা করা এবং দেশের ঐক্য প্রতিষ্ঠাকরনের