avertisements 2

বিতর্কিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে কাশ্মীরিদের ভাবনা কী?

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৮ মার্চ,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১০:২২ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

একটি মাত্র সিনেমা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ভারতকে। সেই ছবি নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে তুমুল চর্চা। কেউ কেউ প্রশংসায় ফেটে পড়ছেন ছবিটি দেখে, কেউ কেউ আবার একে বিজেপির ছবি বলে কটাক্ষ করছেন। পক্ষে-বিপক্ষে সেই তর্ক-বিতর্ক এখন তুঙ্গে। যুক্তি-পাল্টা যুক্তি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

কিন্তু যে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এই ছবি, সেখানকার মানুষের ভাবনা কী? ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ষূত্রে খবর, কাশ্মীর উপত্যকাবাসীদের বড় অংশের মতে, এটি ‘উদ্দেশ্যমূলক ছবি’। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কাশ্মীরের মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়েছে এই ছবিতে।

তারা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েক হাজার কাশ্মীরি নিহত হয়েছেন, তাদের নিয়ে কোনো সিনেমা তৈরি হয় না কেন?

তবে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, ‘এমন ছবির মাধ্যমে সাধারণ মানুষ প্রকৃত সত্য জানতে পারে।’ কিন্তু যে জায়গাকে কেন্দ্র করে এই ছবি, সেই কাশ্মীরে ১৯৯০ সাল থেকে সিনেমা হল বন্ধ। এমনকি, সেখানকার মানুষ সিনেমার পাইরেটেড সংস্করণ দেখতেও আগ্রহী নন।

যদিও ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে তাদের অসন্তোষ গোপন করেননি উপত্যকাবাসী। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আহমেদ ওয়ানির কথায়, ‘ভালোই তো কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিয়ে সিনেমা হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩৩ বছরে সন্ত্রাসবাদের শিকার কমবেশি ২০০ কাশ্মীরি পণ্ডিত।’

তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিকে হত্যার পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক তরুণ-যুবক প্রাণ হারাল। সেই ঘটনা নিয়েও তো সিনেমা হতে পারে! আমি বলব, রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে ছবিটি তৈরি হয়েছে। এই ছবিকে গৈরিক শিবির নির্বাচনে ব্যবহার করবে এবং দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করবে।’

একই মত উপত্যকায় পণ্ডিতদের স্বার্থ নিয়ে লড়াই করা কাশ্মীর পণ্ডিত সংঘর্ষ সমিতির। সংগঠনের সদস্য সঞ্জয় টিকুর কথায়, ‘কিছু লোক এই ছবি দেখিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়। তাদের অঙ্গুলিহেলনেই ছবিটি তৈরি হয়েছে। ওরা চায় এখন উপত্যকায় যে সব পণ্ডিত রয়েছেন, তাদেরও হত্যা করুক জঙ্গিরা।’

সোম্যা লাখানি নামে জনৈক কাশ্মীরি পণ্ডিতের কথায়, ‘এই সিনেমা শিল্প নয়, প্রচার। শিল্প ও প্রচারের সূক্ষ্ম ফারাক আছে। সেই পার্থক্যটা বোঝা জরুরি।’ কাশ্মীর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক মহম্মদ শাকিরের মতো অনেকেই মনে করেন, সিনেমায় যা দেখানো হচ্ছে, তা সঠিক নয়।

ওই অধ্যাপক বলেন, ‘জম্ম-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার, ডাকাতির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারে পরে উপত্যকায় প্রবল ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কথা বললেই সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে জেল বন্দি করা হচ্ছে। দারুণ ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে আমাদের মৌলিক অধিকার।’

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ পরিচালনা করেছেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। এর প্রধান একটি চরিত্রে আছেন মিঠুন চক্রবর্তী, যিনি গত বছর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আরও আছেন অনুপম খের, পল্লবী জোশির মতো অভিনেতারা।

ঢাকাটাইমস

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2