সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় না ফেরার দেশে সেই প্রসূতি মা আঁখি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৮ জুন,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:৩৫ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ফাইল ছবি
রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় সন্তানের মৃত্যুর পর এবার মারা গেল মা মাহবুবা রহমান আঁখিও। রবিবার (১৮ জুন) দুপুরে আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আঁখি মারা গেছেন। ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। এর আগে সকালে তিনি জানিয়েছিলেন, রোগীর কোনো ইমপ্রুভ হচ্ছে না। বরং অবনতির দিকে যাচ্ছে। ব্লিডিং কিছুটা কমেছিল, কিন্তু শনিবার থেকে আবার বেড়ে গেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বাস দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, চিকিৎসক এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাস দেননি। তারা বলছেন, তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এখান থেকে কামব্যাক করা কঠিন।
একমাত্র যদি আল্লাহ চান, তা হলেই সম্ভব। একই দিন আবার পাঁচ ব্যাগ রক্ত কালেকশন করে দিয়েছি জানিয়ে তিনি বলেন, দুপুর পর্যন্ত এগুলো চলবে। ডাক্তার আজকে আবার রোগীর পরিস্থিতি দেখে জানাবে। কিন্তু তার আগেই..., কণ্ঠ ভারি হয়ে আসে সুমনের।
গত ৯ জুন রাতের ঘটনা। মাহাবুবা রহমান আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন বারবার সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করছিলেন, আমার স্ত্রী কেমন আছে? আর ডা. সংযুক্তা সাহা কোথায়? কিন্তু ইয়াকুবের কোনো কথার উত্তর না দিয়ে তাকে এড়িয়ে যাচ্ছিল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। তারা বারবার ইয়াকুবকে বলছিলেন, আপনি ‘গেটের বাইরে অপেক্ষা করুন’।
একপর্যায়ে একজন নার্স এসে ইয়াকুবকে জানান, আঁখির অবস্থা আশঙ্কাজনক। সে জন্য তাকে কাগজে সই দিতে হবে।
সই না দিলে আঁখি ও তার নবজাতকের চিকিৎসা করবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কাগজে সই দিয়েও স্ত্রী ও সন্তানের কোনো তথ্যই পাচ্ছিলেন না ইয়াকুব। এ বিষয়ে শুরু থেকেই ইয়াকুবের সঙ্গে লুকোচুরি করছিলেন চিকিৎসকরা।
একপর্যায়ে ইয়াকুবকে জানানো হয়, তার স্ত্রীর চিকিৎসা করা আর সেন্ট্রাল হসপিটালে সম্ভব নয়। তাকে অন্য হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। পরে স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে শনিবার ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে আঁখিকে ভর্তি করান ইয়াকুব। এর পর সেন্ট্রাল হসপিটালে এসে জানতে পারেন তার নবজাতক হসপিটালের এনআইসিইউতে মারা গেছে। এ ঘটনায় ধানমণ্ডি থানায় মামলা হয়েছে।
মামলায় হওয়ার পরে অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজ।