অস্ট্রেলিয়াতে ১০ দিনের ব্যবধানে ৫ বাংলাদেশীর মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৬ এএম, ৫ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সম্প্রতিকালে অস্ট্রেলিয়াতে দুই সপ্তাহের ও কম ব্যবধানে ৫ বাংলাদেশীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরন করলেও বাকী ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে দূর্ঘটনায়।
স্কুল হলিডে চলা কালীন গত শুক্রবার (৭ অক্টোবর ) কয়েকটা বাংলাদেশী পরিবার সাউথ কোস্টে ঘুরতে যান।বাওলে পয়েন্টের মুর্রামারাং বীচের দুপুরের দিকে অনেকের সাথে সাঁতার কাটছিল বাংলাদেশী কিশোর আব্দুল্লাহ।কয়েকজন কিশোরকে হঠাৎ বড় একটি ঢেউ গভীর পানিতে টেনে নিয়ে যায় । পানিতে থাকা কয়েকজন প্রাপ্ত বয়স্ক দ্রুত সাঁতরিয়ে কয়েকজন কিশোরকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসলেও ঐ সময় আব্দুল্লাহকে খুজে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে জরুরীভাবে উদ্ধারকর্মী, পুলিশ হেলিকপ্টারসহ পানিতে আব্দুল্লাহকে খুজেতে থাকে এবং বেলা ২:৩০ এর দিকে তাকে গভীর পানি থেকে সংকটপূর্ণ অবস্থায় উদ্ধার করে বেটম্যান বে হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই মারা যায়। সে একজন হাফেজ। গত রমজানে তারাবীহ নামাজে ইমামতি করেছে।
ঐ একই দিন সিডনির ডেনহাম কোর্ট নিবাসী মোঃ শোয়েব হোসেন (তুষার) রাত ৯টা ৫৩ মিনিটে লিভারপুল হাসপাতালে মারা যায়।তার বয়স হয়েছিলো ৪৫ বছর। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।পরদিন লাকেম্বা মসজিদে তার জানাজা শেষে নারেলান কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সবশেষে ১৬ অক্টোবর রোববার অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় পশ্চিমের কপিনস ক্রসিং রোডে দুই গাড়ির সংঘর্ষে তিন বাংলাদেশী পর্যটক নিহত হয়। নিহতরা হলেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম (৬১), তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (৫৪) ও তাদের ছেলে রনি (২১)। দুর্ঘটনায় শহীদুল ইসলামের আরেক ছেলে ক্যানবেরা বসবাসরত ডাঃ আনোয়ার জাহিদ গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি ক্যানবেরা হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলো। সে আগে সিডনিতে বসবাস কিন্তু পার্মানেন্ট রেসিডেন্সীর জন্য ক্যানবেরায় চলে যায়। মাত্র ২ মাস আগে সে বহুল প্রতিক্ষিত পার্মানেন্ট রেসিডেন্সী লাভ করে। সম্প্রতি হজ পালন শেষে ভ্রমণ ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় মা বাবা ভাইকে বেড়াতে নিয়ে এসেছিলেন। তার বাবা শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশের একজন অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও মা রাজিয়া সুলতানা একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক ছিলেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নিহতদের মৃতদেহ দেশে প্রেরনের প্রস্তুতি চলছিলো।
এবিসি নিউজ জানিয়েছে, ক্যানবেরার পশ্চিমে হ্যাজেল হক অ্যাভিনিউয়ের ঠিক দক্ষিণে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে একটি লাল টয়োটা হ্যাচব্যাক এবং সাদা টয়োটা ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
অস্ট্রেলিয়াতে এত অল্প সময়ে এত বেশী সংখ্যক বাংলাদেশীর প্রানহানীর ঘটনা নজিরবিহীন।