অস্ট্রেলিয়া কি চীনকে ঠেকাতে বড় ঝুঁকির নিলো?
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৩৯ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
অকাস চুক্তিতে সই করে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেটা প্রকাশ করে দিয়েছে। এই চুক্তি থেকে বোঝা যায় যে, চীনের ব্যাপারে তারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটি অনেক বড় একটি সিদ্ধান্ত। প্রশ্ন উঠেছে এই চুক্তি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থে কতটুকু ভূমিকা রাখবে।
চীন ক্রমশই শক্তিশালী হয়ে ওঠার কারণে তারা প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম নৌ বাহিনী গড়ে তুলেছে চীন এবং দক্ষিণ চীন সাগরের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ অঞ্চলে দেশটি ক্রমশই আগ্রাসী হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন, এই দুটো শক্তির মধ্যে অস্ট্রেলিয়া এতদিন কোনো একটির পক্ষে অবস্থান নেয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিংয়ের প্রতি দেশটির মনোভাব কঠোর হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার অভিযোগ, চীন তাদের দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাইবার হামলা পরিচালনা করছে। করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি সম্পর্কে জানতে অস্ট্রেলিয়া গত বছর তদন্তের আহ্বান জানানোর পর দুটো দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পরপরই অস্ট্রেলিয়ার রপ্তানির ওপর চীন আকস্মিকভাবে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
অস্ট্রেলিয়ার জন্য অকাস চুক্তিটি বড় ধরনের এক অভ্যুত্থানের মতো। এই সমঝোতার ফলে পারমাণবিক সাবমেরিন ও দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে প্রযুক্তি দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সাহায্য করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সমালোচকরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার দিক থেকে এতদিন যে কৌশলগত অস্পষ্টতা ছিল, সেটা তারা পরিত্যাগ করেছে এবং এই চুক্তির ফলে দেশটি এখন অনেক বড় এক টার্গেটে পরিণত হয়েছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়াকে হয়তো তাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের কাছ থেকে আরো কিছু অর্থনৈতিক প্রতিশোধের মুখে পড়তে হতে পারে।
সিডনির ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির শিক্ষক ড. লাই-হা চান বলেন, ‘দুটো দেশের মধ্যে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃ-প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তেমন একটা ছিল না। এখন এই অবস্থার আরো অবনতি হলো।’ অনেকে বলছেন, অকাস গঠনের ফলে অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘ সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আটকা পড়ে গেল। তাদের মতে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়াকে হয়তো আগামীতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতার বিষয়ে বেগ পেতে হবে। তাদেরকে নির্ভরশীল হতে হবে বিদেশি পরমাণু প্রযুক্তির ওপর। বিবিসি।