আগষ্টেরে ২৮ দিনেই রেমিট্যান্স এলো ২০৭ কোটি ডলার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩০ আগস্ট,শুক্রবার,২০২৪ | আপডেট: ১২:০৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সংগৃহীত ছবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এর ফলে কমেছিল রেমিট্যান্সপ্রবাহ। সরকার পতনের পরে বাড়তে থাকে রেমিট্যান্সপ্রবাহ। চলতি আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ২০৭ কোটি মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া মাস শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কিছুটা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) কেন্দ্রীয় বাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ২০৭ কোটি ডলার। টাকার হিসাবে যা ২৪ হাজার কোটি।
গত বছরের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৩ কোটি ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়েছে ৩১ শতাংশ। গত জুলাই মাসে ১৯১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস (২০২৩ সালের) জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার।
আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ, জুনে ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ এবং জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে।
এদিকে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ায় বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫৯ কোটি বা ২০.৫৯ বিলিয়ন ডলার। গত জুলাই মাসের একই সময়ে রিজার্ভ ছিল ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে সামান্য কিছু বেড়েছে রিজার্ভ।
তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব আছে, যা শুধু আইএমএফকে (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, নিট বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ নেমেছে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯.৭৩ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল ২৩.৩৭ বিলিয়ন ডলার। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩.৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছে। ওই বছর ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে। এরপর কভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বাড়ে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট। ওই দিন রিজার্ভ ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে পৌঁছে। এরপর ডলার সংকটে গত বছর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে।
সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ড ঠিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ। মূলত প্রবাস আয়, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়ে থাকে, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যুক্ত হয়। খরচ বেশি হলে কমে যায় রিজার্ভ।