চলমান কোটা আন্দোলনে নিহতের খবর গুরুত্ব পাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ জুলাই,
বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:২০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ঢাকা কলেজের সামনে কোটাবিরোধী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ। ছবি : রয়টার্স
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে হামলা এবং প্রাণহানির খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। আলজাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স, এএফপিসহ শীর্ষ সারির প্রায় সব গণমাধ্যমে খবরটি প্রথম পাতায় ভাসছে। এসব হামলার জন্য সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদনগুলোতে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) থেকে কোটাবিরোধীদের ওপর হামলা শুরু হয়। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) তা চূড়ান্তপর্যায়ে পৌঁছায়। এ দিন ঢাকাসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে এবং রাস্তায় নেমে আসা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এসব ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। যদিও রয়টার্স ও আলজাজিরার মঙ্গলবার রাতের খবরে পাঁচজনের কথা বলা হয়েছে।
আলজাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। আলজাজিরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা সরেজমিনে তুলে ধরে জানায়, কোটা ব্যবস্থায় সরকার-সমর্থকদের সন্তানরাই বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। বিষয়টি অন্যায্য হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তা মানছেন না। এ জন্য সরকার সমর্থকরা তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা করছে। এসব হামলায় কয়েকশ আহতের খবর দেওয়া হয়।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কোটাবিরোধী আবু সায়ীদ (২৫) নিহত হয়েছেন। ওই সংঘর্ষে আরও অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। তারা সবাই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আহত-নিহত হন।
কোটা আন্দোলনে নিহতের খবর গুরুত্ব পাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে
কোটা আন্দোলনকারীদের নতুন কর্মসূচি
মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসেও (এপি) বাংলাদেশ পরিস্থিতি গুরুত্ব পেয়েছে। সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ, লাঠিপেটার তথ্য দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় পুলিশের বরাতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহতের কথা বলা হয়। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সংঘর্ষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।
বিবিসি বলছে, ঢাকাসহ সারা দেশে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এতে ছয়জন নিহতের পর সব স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ সালেহীন আয়ুন বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা সহিংসতার জন্য ছাত্রলীগের সদস্যদের দায়ী করছি। তারা বিক্ষোভকারীদের হত্যা করেছে। পুলিশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করেনি।’
এ ছাড়া ‘বাংলাদেশ সরকার কেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে পারছে না’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে দ্য ডিপ্লোমেট। আনন্দবাজারের শিরোনাম ছিল, ‘অশান্ত বাংলাদেশ, সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে হিংসা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে নিহত অন্তত ছয়জন।’ টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদে কোটা সংস্থার আন্দোলনকে সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় আন্দোলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। তেমনি ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য প্রিন্ট, টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ায় হামলা ও নিহতের খবর গুরুত্ব পেয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, চাকরির বাজারে বৈষম্যের স্বীকার হওয়া হাজারো শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে এসেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।