‘বাবার চাকরি ফিরিয়ে দিন, ভয় আতঙ্ক আমাদের গ্রাস করছে’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:৩১ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের সামনে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে শারমিন হকের আকুতি - সংগৃহীত
‘বাবার চাকরি ফিরিয়ে দিন, ভয়-আতঙ্ক আমাদের গ্রাস করছে।’ এমন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে ব্যস্ত রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে প্রতিবন্ধী কিশোরী শারমিন হককে। গতকাল রোববার ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে বাবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানায় শারমিন। নিজের ফুফার করা মামলায় তার ব্যাংকার বাবা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।
শারমিনের বাবা মাইনুল হক ময়মনসিংহের তারাকান্দা শাখা সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে ভগ্নিপতি আবু ছিদ্দিক খানের করা মামলায় প্রায় এক বছর ধরে সাময়িক বরখাস্ত মাইনুল হক। বাবার চাকরি ফেরত চেয়ে একমাত্র মেয়ে শারমিন ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের সামনে প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
শারমিন হক বলে, ‘এক বছর ধরে বাবা-মা মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। তা দেখে নিজেও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। সুখের সংসার ফুপার করা মিথ্যা মামলায় এলোমেলো হয়ে গেছে। আমার দাবি, সরকারসহ সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে বাবার চাকরিটি ফিরিয়ে দেবেন।’
শারমিনের মা নাসরিন হক বলেন, “আমার স্বামী পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে ছয়টি ফ্ল্যাট পান। আমরা কেন ফ্ল্যাটের কাজ আগে সম্পন্ন করেছি– এই ক্ষোভে মামলা করেন আমার স্বামীর ভগ্নিপতি। এতে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন আমার স্বামী। এর পর থেকে হুমকি-ধমকিসহ অপপ্রচার চালাচ্ছেন। নিজেদের রক্ষা করতে তাদের নামে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’ আমিও একটি মামলা করেছি।”
ভুক্তভোগী মাইনুল হকের ভাষ্য, পারিবারিক বিরোধে ২০২২ সালের ২৩ মে মিথ্যা মামলা দিয়ে ভগ্নিপতি আবু ছিদ্দিক খান সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করান। মামলায় যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে, সে সময়ে অফিসে ছিলেন তিনি। তা সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে বা অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললেই স্পষ্ট হবে। তিনি বলেন, ‘এখন নিজের বাসা ছেড়ে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকছি। এখন শুধু ভাতা পাচ্ছি। আশা করছি, আদালতে সত্যের জয় হবে। আমি চাকরিটাও ফিরে পাব।’
অভিযোগ বিষয়ে আবু ছিদ্দিক খান বলেন, ‘আমি অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এজিএম। সেই সুবাদে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছি। কিন্তু মাইনুল হক ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন হক আমাদের ঠকিয়ে শ্বশুরের রেখে যাওয়া ময়মনসিংহ নগরীর কালীবাড়ি রোডের ভবন আত্মসাৎ করেছেন। অধিকার ফিরে পেতেই মামলা করেছি।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী নূরুল হকের দাবি, যে কয়েকটি ধারা যোগ করে মামলা করা হয়েছে, তার বেশিরভাগই হয়রানির জন্য। বিষয়টি বিচারকও বুঝতে পেরেছেন।