মোংলায় প্রতারণার মামলায় আদম পাচারকারী চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ জুলাই,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:৩৬ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মোংলা থানা পুলিশ আ. গফুর ওরফে পানি গফুরকে গ্রেপ্তার করেছে। ছবি : সংগৃহীত
বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার মামলায় আদম পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা আঃ গফুর ওরফে পানি গফুরকে আটক করেছেন মোংলা থানা পুলিশ। প্রতারক গফুর আটকের ঘটনায় এলাকার ভুক্তভোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
আটককৃত গফুরের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিদেশে আদম পাচার, জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিলপত্র করে অপরের জায়গা-জমি দখল ও বিভিন্ন জনের নামে সরকারি নানা দপ্তরে ভুয়া অভিযোগ পাঠিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মোংলা পৌর শহরের সামছুর রহমান সড়কের বাসিন্দা আঃ গফুর নিজেকে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশী জাহাজের ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে বিদেশী জাহাজে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। আদম পাচারকারী গফুর গত ২৬ জুন বাগেরহাটের বারাকপুরের তহমিনা বেগমের ছেলে তাওহীদ হাসানকে মাসিক দেড় লাখ টাকা বেতনে বিদেশী জাহাজে চাকুরী দেয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে সাড়ে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেয়ার বিশ দিনের মধ্যে হাসানকে জাহাজে চাকুরিতে দিবেন বলেও আশ্বাস দেন গফুর। কিন্তু নিধার্রিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ভুক্তভোগী তহমিনা তার ছেলে হাসানকে নিয়ে গত ১৬জুলাই গফুরের কাছে গেলে গফুর চাকুরি ও টাকা ফেরত দিবেন না বলে উল্টো হুমকি-ধামকি এবং ভয়ভীতি দেখান। পরে এ ঘটনার প্রতিকারে তহমিনা বেগম বাদী হয়ে আদম পাচারকারী প্রতারক গফুরের বিরুদ্ধে গত ১৯ জুলাই বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় শুক্রবার দুপুরে আসামি গফুরকে সামছুর রহমান রোডের তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করেছেন পুলিশ। এদিকে আদম পাচারকারী গফুর জালজালিয়াতি দলিল দিয়ে অপরের বাড়ীঘর দখল ও অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানী করায় এলাকার ভুক্তভোগীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
গফুর নিজেকে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে জাহাজে চাকুরি দেয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে মোংলা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মোংলা বন্দরে বিদেশী সামুদ্রিক জাহাজে চাকুরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে তৎপর রয়েছে। এ আদম পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা গ্রেপ্তারকৃত গফুর।
এছাড়া জাল দলিলপত্র তৈরি করে এলাকার বিভিন্নজনের বাড়ীঘর দখল, হামলা, লুটপাট ও মারপিটের ঘটনায় গফুরের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় মামলাও রয়েছে। অপরদিকে পুলিশের খুলনার ডিআইজি কাযার্লয়ে তার কোন এক নিকট আত্মীয় রয়েছেন এমন দোহাই দিয়ে সরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তবের মিথ্যা অভিযোগ প্রেরণসহ নানাভাবে হুমকি-ধামকি ও হয়রানীর একাধিক অভিযোগ রয়েছে এ আদম পাচারকারী গফুরের বিরুদ্ধে।
এদিকে পুলিশ গফুরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার ছবি তোলার সময় সাংবাদিকদেরকে তিনি গালিগালাজ করাসহ দেখে নেয়ারও হুমকি দেন।
এ বিষয়ে মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুউদ্দীন বলেন, বাগেরহাট আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় গফুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতকে শনিবার আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানান তিনি।