avertisements 2

নারী গ্রাহকের সঙ্গে অশালীন আচরন, ব্যাংকের ম্যানেজার প্রত্যাহার

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:৪৪ এএম, ৩ মে,শুক্রবার,২০২৪

Text

ছবি: সংগৃহীত

সোনালী ব্যাংক লিঃ ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক (এসপিও) মোঃ সাইদুল ইসলাম কর্তৃক নারী গ্রাহকের সঙ্গে অশালীন আচরণসহ কু-প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যবস্থাপককে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে স্যান্ডেল দিয়ে পেটানো, ও থানায় অভিযোগ দায়ের করার ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর আত্মীয় স্বজন ব্যাংক ঘেরাও করে ব্যবস্থাপককে কয়েক ঘন্টা নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গত বুধবার দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক ঈশ্বরদী শাখায় এসব ঘটনা ঘটে।

নারী গ্রাহকের সঙ্গে অসদাচরণ কু-প্রস্তাব দেওয়ার সত্যতা পাওয়ায় বিকেলে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান শাখার মহাব্যবস্থাপক এর নির্দেশে সোনালী ব্যাংক ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামকে পাবনা রিজিওনাল শাখায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সোনালী ব্যাংক পাবনা রিজিওনাল শাখার ডিভিশনাল মহাব্যবস্থাপক মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম মুঠোফোনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার সদস্য মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে শিরিনা খাতুন রেলওয়ে থেকে পাওনা টাকা সোনালী ব্যাংক লিঃ ঈশ্বরদী শাখার মাধ্যমে উত্তোলনের জন্য গত চলতি মাসের ৯ জুলাই হিসেব খুলতে ব্যাংকে যান। সেদিনই তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। একই সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে বোরকা খুলে কথা বলতে বলেন। তখন শিরিনা মানসম্মানের কথা চিন্তা করে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক এর কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। এরপর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পরিবারের নিকট খুলে বলে। ঘটনার দিন গতকাল দুপুরে শিরিনা খাতুন ব্যাংক হিসাবে নমিনির তালিকায় বোনের নাম অন্তরভুক্ত করার জন্য ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামের কক্ষে যান। তখন তিনি পূনরায় তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। কু-প্রস্তাব দেন। রাগ করে শিরিনা খাতুন বের হওয়ার সময় তার ছোট বোন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামের কক্ষে গেলে তার সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেন। এরপরই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামকে পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারপিট করেন। বিষয়টি কানাকানি হয়ে ব্যাংকের সকল স্টাফসহ গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। এদিকে এই খবর ভুক্তভোগিদের আত্মীয়স্বজনরা শোনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকে ঘেরাও করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

ভুক্তভোগী নারী গ্রাহক শিরিনা খাতুন কান্না জনিত কন্ঠে বলেন, সোনালী ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম খুবই খারাপ মানুষ। তার মত একজন হীন মানসিকতার মানুষের ব্যাংকে চাকরী থেকে বাদ দেওয়া উচিত। ও যেখানে যাবে সেখানেই নারীদের সঙ্গে এরকম আচরণ করবে। তার শাস্তির দাবিতে বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

সোনালী ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার ভুল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপনারা লেখালেখি করেন না। সোনালী ব্যাংক পাবনা রিজিওনাল শাখার ডিভিশনাল মহাব্যবস্থাপক মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখায় যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। যা ব্যাংকের সুনাম নষ্ট হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত পুর্বক তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের নিয়মানুসারে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিরিনা খাতুন বাদী হয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণসহ কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2