কুমারী সেজে বাংলাদেশে এসে বিয়ে, স্ত্রীকে ফেরত চান ভারতীয় স্বামী
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৪ জুন,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:৪৫ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ছবি : সংগৃহীত
প্রেমের টানে কুমারী সেজে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন ভারতীয় নারী নার্গিসা বেগম (২৯)। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রেমিক জুয়েল সরকারকে (২৪) বিয়ে করে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি।
এদিকে স্ত্রী নার্গিসা বেগমকে ফিরে পেতে ভারত থেকে উল্লাপাড়ায় ছুটে এসেছেন তার স্বামী ফজলুর রহমান মীর। তবে স্ত্রী যেতে রাজি না হওয়ায় ভারতে ফিরে গেছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম মেনেই বাংলাদেশে এসেছেন নার্গিসা বেগম। তারপর আদালতের মাধ্যমে আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে বিয়ে করেছেন বাংলাদেশি যুবক জুয়েলকে। তার ভিসার মেয়াদ থাকা পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে থাকতে পারবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেলে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পৌঁছান পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা ফজলুর রহমান মীর। স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে স্থানীয় এক নারী ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের টানে স্বামী ফজলুর রহমান মীর ও ৮ বছরের শিশুসন্তান জিসান মীরকে ছেড়ে ভারত থেকে পালিয়ে এসে কুমারী সেজে উল্লাপাড়ার দাদপুর গ্রামের ইরান সরকারের ছেলে জুয়েল সরকারকে বিয়ে করেন নার্গিসা বেগম। তবে এখানে এসে তিনি নিজের নাম নাইসা মল্লিক উল্লেখ করেন। গত ১ জুন বয়সে ৫ বছরের ছোট জুয়েল সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার দু-দিন পরই ভারতের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে নার্গিসা বেগমের স্বামী ও সন্তান রয়েছে মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেসব সংবাদে বলা হয়, ১২ বছর আগে বাঁকুড়া জেলার ফজলুর রহমান মীরের সঙ্গে বিয়ে হয় দানগড় ধারেশা মল্লিক পাড়ার বাসিন্দা নার্গিসা বেগমের। মীর জিসান নামে তাদের ৮ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। হঠাৎ নিখোঁজ হন ওই গৃহবধূ। এই মর্মে দমদুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন গৃহবধূর স্বামী ফজলুর রহমান মীর।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, এক নারী ইউপি সদস্যকে নিয়ে ভারতীয় ওই ব্যক্তি থানায় আসেন। তিনি থানায় এসে বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে যেতে চায়, আপনারা সহযোগিতা করেন।’ পরে তার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। একই সময় জুয়েল সরকারকে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। তিনি চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘যদি তার স্ত্রী যেতে চায়, তাহলে কোনো আপত্তি নেই।’
এদিকে পুলিশ ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, তার ভিসা, পাসপোর্ট, ডিভোর্স ও বিয়ের কাগজপত্র আছে। তিনি পুলিশকে জানান, তার ভারতীয় স্বামী ফজলুর রহমান মীর আগেও একটা বিয়ে করেছেন। তার বড় বড় সন্তান রয়েছে। মদ্যপ হয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন তিনি। তাকে ডিভোর্স দিয়ে বৈধ পথে এখানে এসে জুয়েল সরকারকে বিয়ে করেছেন।
ওসি বলেন, আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।